ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
সামাজিক কাঠামোর তৃতীয় স্তর গড়ে উঠেছিল ‘দাস’ বা লাকোতিন (Tlacotin) দের নিয়ে। সমাজে এদের বিশেষ স্থান বা গুরুত্ব ছিল। সমাজে কারও বেশি মাত্রায় ধার দেনা থাকলে সে ‘দাসে’ পরিণত হত। এই ঋণ শোধ করতে না পারার জন্য তাদের অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হত এবং অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী শাস্তি পেতে হত এবং কখনো কখনো জেল খাটতেও হত।
তবে এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা ভাল যে দাস হওয়া বা এই ব্যবস্থাটি বংশানুক্রমিক নয়। দাসদের ছেলেমেয়েরা সাধারণ বা স্বাভাবিক বা মুক্ত অবস্থায় সব অধিকার বা সামাজিক মর্যাদা ভোগ করতে পারত। এ বিষয়টিও উল্লেখের দাবি রাখে যে কোন দাস বা দাসদের প্রতি অন্যায় ব্যবহার, অবিচার করা হয়েছে এ প্রমাণিত হলে সে স্বাধীন হতে পারত এবং সাধারণ সুযোগসুবিধা ভোগ করার অধিকার অর্জন করত।
দাসদের এই ক্ষেত্রে ছেলে বা মেয়ে থাকলে তাদের উঁচু ঘরে বিয়ে দেবার ব্যবস্থাও স্বীকৃত ছিল। আবার অনেকক্ষেত্রে মালিক বা মনিবের মৃত্যু হলে যেসব দাস এর কাজ প্রশংসা অর্জন করার মত তাদের মুক্ত করে দেওয়া হত। এর সঙ্গে আরেকটি শ্রেণিও ছিল যাদের বলা হত পর্যটন ব্যবসায়ী বা পোচতেকা (Pochteca)। এরা সংখ্যায় খুর্ব জম হলেও গুরুত্ব কম ছিল না। এদের প্রধান কাজ বা দায়িত্ব ছিল বাণিজ্য সাক্রান্তে কাজে সাহায্য করা।
তবে এই পর্যটন ব্যবসায়ীরা যেহেতু বিভিন্ন রাজা বা দেশের বাইরেও যেত সেই সূত্রে গোপন খবর দেওয়া-নেওয়ার কাজও করত। কার্যত আজতেক সাম্রাজ্যের গুপ্তচর-এর কাজও তাদের দিয়ে করানো হত। এছাড়া অন্য একটি সূত্র থেকে জানা যায় আজতেকদের মূল একক এক্সিপাস কালপুরি (Calpull)। প্রতিটি কালপুরি তাদের নিজেদের কাজ পরিচালনা করত। একটি কাউন্সিল গঠন করে। পদস্থ কর্তারা সেই মাধ্যমে কাজ করত। কালপুরি স্কুলে ইতিহাস যুদ্ধ, ধর্ম ইত্যাদি শিক্ষা দেওয়া হত।
(চলবে)