সারাক্ষণ ডেস্ক
২০২৫ সালের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে নাসার আর্টেমিস অ্যাকর্ডে স্বাক্ষর করে, বিশ্বের ৫৪তম দেশ হিসেবে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’-এ এই ঐতিহাসিক স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়, যা দেশের শান্তিপূর্ণ মহাকাশ অন্বেষণে অংশগ্রহণের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আর্টেমিস অ্যাকর্ড কী
নাসা ২০২০ সালে আর্টেমিস অ্যাকর্ড চালু করে মহাকাশে সহযোগিতার জন্য একটি আন্তর্জাতিক কাঠামো হিসেবে। এটি মূলত চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহে ভবিষ্যৎ গবেষণা ও অভিযানের নীতিমালা নির্ধারণ করে। এই অ্যাকর্ড স্বেচ্ছাসেবী হলেও এতে স্বচ্ছতা, তথ্যের বিনিময়, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্য, এবং অন্য দেশের মহাকাশ মিশনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার মতো মূলনীতিগুলো অন্তর্ভুক্ত।
এই চুক্তিতে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ ভারত, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ অনেক উন্নত দেশের সঙ্গে একসাথে মহাকাশ গবেষণায় অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিল।
বাংলাদেশের জন্য এর তাৎপর্য
নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক জ্যানেট পেট্রো ভার্চুয়াল বার্তায় বাংলাদেশের তরুণদের মহাকাশ প্রযুক্তিতে অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, গত ছয় বছরে চারবার বাংলাদেশের দল নাসার স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে বৈশ্বিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এটি বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় প্রযুক্তিপ্রেমী প্রজন্মের উদ্ভাবনী ক্ষমতারই স্বীকৃতি।
পেট্রো আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানের বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী এবং এমনকি নভোচারীও তৈরি করতে সক্ষম হবে।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বার্তা
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন বলেন, আর্টেমিস অ্যাকর্ডে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়া মহাকাশ কূটনীতিতে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রতীক। তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে নাসা নভোচারী জোসেফ আকাবার স্পেস মিশনে ব্যবহৃত একটি প্যাচ উপহার দেন— যা দুই দেশের মধ্যকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহযোগিতার বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।
ভবিষ্যতের দিগন্ত
বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় দেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। এটি শুধু প্রতীকী নয়, বাস্তবিকভাবেও দেশকে গবেষণায় সহায়তা, প্রযুক্তি বিনিময় ও আন্তর্জাতিক যৌথ মিশনের অংশীদার হতে পথ করে দিয়েছে।
যখন বিশ্ব মহাকাশ গবেষণায় প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠছে, তখন বাংলাদেশের এমন অংশগ্রহণ দেশের তরুণদের নতুন অনুপ্রেরণা ও সুযোগ এনে দেবে এবং আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের বৈজ্ঞানিক ভাবমূর্তি আরও সুদৃঢ় হবে।