মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

আমানত ও বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি হ্রাস: মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব স্পষ্ট

  • Update Time : বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫, ৪.৫৭ পিএম

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ফেব্রুয়ারিতে আমানতের প্রবৃদ্ধি আরও কমেছে

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশের ব্যাংক খাতে মোট আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে ৭.৮৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা জানুয়ারিতে ছিল ৮.২৯ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারির শেষে মোট আমানতের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৮ ট্রিলিয়ন টাকা, যেখানে জানুয়ারিতে ছিল ১৭.৮৯ ট্রিলিয়ন টাকা।

এর আগে, ২০২৪ সালের আগস্টে এই প্রবৃদ্ধি নেমে গিয়েছিল ৭.০২ শতাংশে, যা ছিল দীর্ঘ সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। এরপর টানা পাঁচ মাস বাড়লেও ফেব্রুয়ারিতে আবার নিম্নমুখী হয়ে পড়ে।

বেসরকারি ঋণের হারও কমতির দিকে

ফেব্রুয়ারিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ৬.৮২ শতাংশে, যা সাম্প্রতিক বছরের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন হার। জানুয়ারিতে এ হার ছিল ৭.১৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ায় নতুন করে আমানত সৃষ্টির গতি শ্লথ হয়ে পড়েছে।

ব্যাংক খাতে আস্থা ফেরাতে সংস্কার কার্যক্রম

পূর্ববর্তী সরকারের আমলে একাধিক ঋণ কেলেঙ্কারির ফলে ব্যাংক খাতে জনআস্থা হ্রাস পায়। সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত ১৫টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, “ব্যাংক খাতে আস্থা ফেরাতে সময় লাগবে, তবে মার্চে ঈদের কারণে কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যায়।”

সঞ্চয়ের অনাগ্রহ ও নগদের প্রবাহ

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষকে বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে, ফলে তারা ব্যাংকে সঞ্চয়ের চেয়ে নগদ অর্থ হাতে রাখাকেই বেশি নিরাপদ মনে করছেন। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, “মানুষের ব্যয় বাড়ায় তারা ব্যাংকে টাকা রাখার পরিবর্তে হাতে নগদ অর্থ রাখতে আগ্রহী।”

তবে ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকের বাইরে থাকা নগদের পরিমাণ কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ২.৭১ ট্রিলিয়ন টাকায়, যা জানুয়ারিতে ছিল ২.৭৪ ট্রিলিয়ন টাকা। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই পরিমাণ ছিল ২.৫৭ ট্রিলিয়ন টাকা।

উপসংহার

ব্যাংক খাতে আমানত ও ঋণের প্রবৃদ্ধি হ্রাসের মূল কারণ উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি। এই অবস্থায় কেবল ব্যাংক সংস্কার যথেষ্ট নয়, বরং পুরো অর্থনীতিকে গতিশীল করার মাধ্যমে আস্থা ফিরিয়ে আনাই হবে স্থায়ী সমাধানের পথ। সঞ্চয় ও বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত হলে ব্যাংকিং খাতেও স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024