সারাক্ষণ রিপোর্ট
হঠাৎ বাজার চাঙা ট্রাম্পের বিবৃতিতে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অটোমোবাইল খাতকে অস্থায়ীভাবে ২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে ছাড় দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছেন—এমন ঘোষণায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই এশিয়ার গাড়ি ও যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজারে বড় উল্লম্ফন দেখা যায়।
শুল্ক আতঙ্কের মাঝেও ফিরে এলো বিনিয়োগের আস্থা
মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ঘোষণার পর বিশ্ববাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। অটো খাতের শেয়ারে ব্যাপক দরপতন হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্পের শুল্ক ছাড়ের সম্ভাবনা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে এনেছে, ফলে এই খাতে নতুন করে শেয়ার কেনা শুরু হয়েছে।
জাপানে টয়োটা, সুজুকি, হোন্ডার শেয়ার বেড়ে গেল
টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জে:
- সুজুকির শেয়ার: প্রায় ৫% বৃদ্ধি
- টয়োটা ও হোন্ডা: প্রায় ৪% করে বৃদ্ধি
- অটো পার্টস কোম্পানিগুলোর উল্লম্ফন:
- সুমিতোমো ইলেকট্রিক: ৫%
- ডেনসো কর্পোরেশন: ৫.৬%
- টয়োটা ইন্ডাস্ট্রিজ: ৪.৫%
মূল স্টক সূচক নিকেই এবং টপিক্স উভয়ই প্রায় ১ শতাংশ বেড়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় হিউন্দাই ও কিয়ার শেয়ারেও লাফ
- হিউন্দাই মোটর: ৪% বৃদ্ধি
- কিয়া: ৩% বৃদ্ধি
- হিউন্দাই মোবিস ও হিউন্দাই উইয়া: প্রায় ৩% করে বৃদ্ধি
- KOSPI সূচক: বেড়েছে ০.৯%
‘শিল্প স্থানান্তরের জন্য সময় দরকার’
ট্রাম্প বলেন, “অনেক কোম্পানি কানাডা ও মেক্সিকোর মতো দেশ থেকে যন্ত্রাংশ এনে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন শুরু করতে চাইছে, তাদের সময় দিতে হবে।” এর ফলে, তিনি শুল্ক থেকে সাময়িক ছাড় বিবেচনার কথা বলেন।
উল্লেখ্য, এপ্রিল ৩ তারিখে যুক্তরাষ্ট্র আমদানিকৃত গাড়ির ওপর ২৫% অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে, যা মে ৩ থেকে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশেও প্রযোজ্য হবে।
সতর্ক বিশ্লেষণ: এই বাড়তি দাম স্থায়ী নাও হতে পারে
মাটসুই সিকিউরিটিজ-এর বিশ্লেষক তোমইচিরো কুবোতা বলেন, “আজকের বাজার বৃদ্ধির পেছনে মূলত স্বল্পমেয়াদি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাত রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীরা আগে থেকেই অবস্থান নিয়েছিলেন।”
তার মতে, বাজারে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে, তাই এই মূল্যবৃদ্ধি বেশি দিন টিকবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।
উৎপাদন খরচ বাড়বে, লাভ কমার শঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন স্থানান্তর মানে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া। এতে কোম্পানিগুলোর লাভ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সুমিতোমো মিতসুই ডিএস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট-এর প্রধান কৌশলবিদ মাসাহিরো ইচিকাওয়া বলেন, “কিছু বিনিয়োগকারী ঝুঁকি নিয়েছেন, তবে অনেকেই এখনো কোম্পানির রক্ষণশীল লাভ পূর্বাভাস দেখে শেয়ারবাজারে প্রবেশে দ্বিধায় রয়েছেন।”