১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

অ্যাপলের নতুন কৌশল: ২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া আইফোনের বেশিরভাগই হবে ভারতীয় উৎপাদিত

  • Sarakhon Report
  • ০৭:০০:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • 38

সারাক্ষণ রিপোর্ট

অ্যাপল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিক্রি হওয়া আইফোনের প্রায় সব কটি ভারতের কারখানায় তৈরি করবে। ইতোমধ্যে প্রধান অংশীদার ফক্সকন ও টাটা অপরিহার্য উৎপাদন অবকাঠামো গড়ে তুলতে দ্রুত এগোচ্ছে।

চীনা কারখানাভিত্তিক উৎপাদনে উচ্চ শুল্কের আশঙ্কা অ্যাপলকে এর গতি বাড়াতে বাধ্য করেছে। সমান্তরাল ভাবে কোম্পানিটি বৈচিত্র্যময় উৎপাদন ঘাঁটি গড়ে তুলতে চাইছে, যাতে সরবরাহে বিঘ্ন বা ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার ঝুঁকি কমে। ভারত সরকারের আর্থিক প্রণোদনা, উদীয়মান প্রযুক্তি-পরিবেশ এবং নিজস্ব বৃহৎ স্মার্টফোন বাজারও এ সিদ্ধান্তকে ত্বরান্বিত করছে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর আনুমানিক ছয় কোটি আইফোন বিক্রি হয়। বর্তমানে এর প্রায় ৮০ শতাংশই চীনে তৈরি হয়, যা প্রতিষ্ঠানটির একক নির্ভরতা এবং বাণিজ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে। এই নির্ভরতা কমাতে ভারতীয় উৎপাদনের অংশ বাড়ানোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে অ্যাপল।

চীনের তুলনায় ভারতে উৎপাদন ব্যয় গড়ে ৫ থেকে ৮ শতাংশ বেশি হলেও যুক্তরাষ্ট্রমুখী রপ্তানিতে শুল্ক সাশ্রয়, দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ নিরাপত্তা এবং ভৌগোলিক বৈচিত্র্যের সুবিধা মোট ব্যয়কে কার্যত ভারসাম্যপূর্ণ করে তুলছে।

এ বছর মার্চ মাসে ভারত থেকে ৬০০ টন, অর্থাৎ প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে—যা ওই অঞ্চল থেকে একক মাসে সর্বোচ্চ রপ্তানির নতুন মাইলফলক। এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক বজায় রাখলেও, চীনের ক্ষেত্রে শুল্কহার ১০০ শতাংশেরও বেশি, ফলে ভারতীয় উত্পাদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে ফক্সকন ও টাটার সম্মিলিত তিনটি কারখানা পুরোপুরি চালু রয়েছে এবং আরও দুটি নির্মাণাধীন। নতুন কারখানাগুলো কার্যক্রম শুরু করলে ভারতের তৈরি আইফোন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবাহিত হবে, যা ২০২৬-এর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

এই উদ্যোগ ভারতকে বৈশ্বিক স্মার্টফোন উৎপাদনের অন্যতম প্রধান স্তম্ভে পরিণত করার পাশাপাশি অ্যাপলের চীননির্ভরতা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমাবে। একই সঙ্গে স্থানীয় সরবরাহ শৃঙ্খল, কর্মসংস্থান এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার বিকাশে ভারতীয় অর্থনীতি সরাসরি লাভবান হবে।

সব মিলিয়ে, উচ্চ চীনা শুল্কের ঝুঁকি ও সরবরাহ শৃঙ্খল বহুমুখীকরণের প্রয়োজনীয়তা অ্যাপলকে ভারতকেন্দ্রিক একটি স্থায়ী উৎপাদন কাঠামো গড়ে তুলতে বাধ্য করেছে। ২০২৬ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া আইফোনগুলোর গায়ে ‘মেইড ইন ইন্ডিয়া’ ট্যাগ দেখতে পাওয়া তাই এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

অ্যাপলের নতুন কৌশল: ২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া আইফোনের বেশিরভাগই হবে ভারতীয় উৎপাদিত

০৭:০০:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

অ্যাপল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিক্রি হওয়া আইফোনের প্রায় সব কটি ভারতের কারখানায় তৈরি করবে। ইতোমধ্যে প্রধান অংশীদার ফক্সকন ও টাটা অপরিহার্য উৎপাদন অবকাঠামো গড়ে তুলতে দ্রুত এগোচ্ছে।

চীনা কারখানাভিত্তিক উৎপাদনে উচ্চ শুল্কের আশঙ্কা অ্যাপলকে এর গতি বাড়াতে বাধ্য করেছে। সমান্তরাল ভাবে কোম্পানিটি বৈচিত্র্যময় উৎপাদন ঘাঁটি গড়ে তুলতে চাইছে, যাতে সরবরাহে বিঘ্ন বা ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার ঝুঁকি কমে। ভারত সরকারের আর্থিক প্রণোদনা, উদীয়মান প্রযুক্তি-পরিবেশ এবং নিজস্ব বৃহৎ স্মার্টফোন বাজারও এ সিদ্ধান্তকে ত্বরান্বিত করছে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর আনুমানিক ছয় কোটি আইফোন বিক্রি হয়। বর্তমানে এর প্রায় ৮০ শতাংশই চীনে তৈরি হয়, যা প্রতিষ্ঠানটির একক নির্ভরতা এবং বাণিজ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে। এই নির্ভরতা কমাতে ভারতীয় উৎপাদনের অংশ বাড়ানোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে অ্যাপল।

চীনের তুলনায় ভারতে উৎপাদন ব্যয় গড়ে ৫ থেকে ৮ শতাংশ বেশি হলেও যুক্তরাষ্ট্রমুখী রপ্তানিতে শুল্ক সাশ্রয়, দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ নিরাপত্তা এবং ভৌগোলিক বৈচিত্র্যের সুবিধা মোট ব্যয়কে কার্যত ভারসাম্যপূর্ণ করে তুলছে।

এ বছর মার্চ মাসে ভারত থেকে ৬০০ টন, অর্থাৎ প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে—যা ওই অঞ্চল থেকে একক মাসে সর্বোচ্চ রপ্তানির নতুন মাইলফলক। এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক বজায় রাখলেও, চীনের ক্ষেত্রে শুল্কহার ১০০ শতাংশেরও বেশি, ফলে ভারতীয় উত্পাদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে ফক্সকন ও টাটার সম্মিলিত তিনটি কারখানা পুরোপুরি চালু রয়েছে এবং আরও দুটি নির্মাণাধীন। নতুন কারখানাগুলো কার্যক্রম শুরু করলে ভারতের তৈরি আইফোন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবাহিত হবে, যা ২০২৬-এর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

এই উদ্যোগ ভারতকে বৈশ্বিক স্মার্টফোন উৎপাদনের অন্যতম প্রধান স্তম্ভে পরিণত করার পাশাপাশি অ্যাপলের চীননির্ভরতা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমাবে। একই সঙ্গে স্থানীয় সরবরাহ শৃঙ্খল, কর্মসংস্থান এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার বিকাশে ভারতীয় অর্থনীতি সরাসরি লাভবান হবে।

সব মিলিয়ে, উচ্চ চীনা শুল্কের ঝুঁকি ও সরবরাহ শৃঙ্খল বহুমুখীকরণের প্রয়োজনীয়তা অ্যাপলকে ভারতকেন্দ্রিক একটি স্থায়ী উৎপাদন কাঠামো গড়ে তুলতে বাধ্য করেছে। ২০২৬ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া আইফোনগুলোর গায়ে ‘মেইড ইন ইন্ডিয়া’ ট্যাগ দেখতে পাওয়া তাই এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।