সারাক্ষণ রিপোর্ট
পরিচিতি
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এনবিসি’র ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে ক্রিস্টেন ওয়েলকার সঙ্গে কথা বলেন। আলাপের কেন্দ্রে ছিল—প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ১০০ দিন পূর্তি সামনে রেখে ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তি আলোচনা, চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য টানাপোড়েন, মার্কিন অভিবাসন নীতি, স্টেট ডিপার্টমেন্ট সংস্কার এবং কানাডা নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য।
ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে ট্রাম্পের ‘চূড়ান্ত চেষ্টা’
- অগ্রগতি: রুবিওর দাবি, গত তিন বছরের যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন দুই পক্ষ আলোচনার সবচেয়ে কাছে। প্রেসিডেন্ট, ভাইস-প্রেসিডেন্ট, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ শীর্ষ পর্যায়ের সকলে যুক্ত।
- সময়সীমা: পরবর্তী এক সপ্তাহকে ‘মহাগুরুত্বপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে বলেন—যদি দ্রুত ফল না আসে, যুক্তরাষ্ট্র অন্য সমসাময়িক ইস্যুতে মনোযোগ দেবে।
- সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা: আলোচনায় অগ্রগতি না হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাংকিং বা সেকেন্ডারি স্যাংশনসহ নানা বিকল্প খোলা আছে, তবে এখনই চাপ বাড়াতে চান না—কারণ তাতে কূটনৈতিক দরজা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
শান্তিচুক্তির কঠিন বাস্তবতা
- যুদ্ধ শেষ করতে দুই পক্ষকেই কিছু ‘ছাড়’ দিতে হবে—এটাই রুবিওর যুক্তি।
- ২০২২ সালে রুশ দখলকৃত এলাকা স্বীকৃতি না দেওয়ার পক্ষে ছিলেন; এখন বাস্তবতা বিচার করে সমাধানের পথ খুঁজছেন।
- শান্তি ‘বিশ্বাসে’ নয়, যাচাই-নির্ভর নিরাপত্তা গ্যারান্টি ও কার্যকর শর্তেই সম্ভব—বললেন রুবিও।

চীনের সঙ্গে ১৪৫% শুল্কের পর, শি-ট্রাম্প কথা বললেন?
- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফোনালাপের বিষয়ে সরাসরি কিছু জানাননি; ‘হাই-স্টেকস’ আলাপ বলে মন্তব্য করতে রাজি নন।
- যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ: তিন দশক ধরে চীন ‘চূড়ান্তভাবে অন্যায্য’ বাণিজ্যনীতি চালিয়ে যাচ্ছে—মার্কিন পণ্য আটকে রেখে বিশ্ববাজার সস্তায় পণ্য ঢালছে, বৌদ্ধিক সম্পদ চুরি করছে।
- রুবিওর বক্তব্য: দেরি হলেও ট্রাম্প প্রথম শক্ত অবস্থান নিয়েছেন; কেবল আমেরিকা নয়, ইউরোপ-কানাডাও চিন্তিত।
অভিবাসন বিতর্ক ও শিশু প্রত্যাবাসন
- ঘটনা: সংবাদমাধ্যমে ছড়ায়—তিন মার্কিন নাগরিক শিশু ‘দেশছাড়া’। রুবিও ব্যাখ্যা দেন, বহিষ্কৃত মূলত তাদের মায়েরা, যারা অবৈধভাবে ছিলেন; শিশুরা মায়ের সঙ্গে যেতে বা যুক্তরাষ্ট্রে থেকে যেতে পারত—পছন্দটি পরিবার নিয়েছে।
- নীতি: “অবৈধ থাকলে deport হতে হবে”—আইন তাই বলে; তবে নাগরিক শিশুরা ফিরে এলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার অক্ষুণ্ণ।

স্টেট ডিপার্টমেন্টে ১৫% কাঠামোগত ছাঁটাই?
- এখনই কোনো ‘ছাঁটাই’ নয়—প্রথম ধাপে বিভাগ পুনর্গঠন, পরে ব্যুরোপ্রধানদের কাছ থেকে ১৫% কাটছাঁটের প্রস্তাব চাওয়া হবে।
- উদ্দেশ্য: স্থানীয় দূতাবাস ও আঞ্চলিক ব্যুরোকে বেশি ক্ষমতা দেওয়া, জটিল ব্যুরোক্রেসি কমিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত।
কানাডাকে ‘৫১তম রাজ্য’ বানানোর প্রসঙ্গ
- ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যের পেছনে ‘বাণিজ্যে বৈষম্য’ অভিযোগ—আগের প্রধানমন্ত্রী নাকি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে না ঠকালে কানাডা টিকবে না।
- রুবিও স্পষ্ট: “কানাডা চাইলে রাজ্য হতে পারে”—ট্রাম্পের কটাক্ষমূলক জবাব; বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র কোনো আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেয়নি।
উপসংহার
মার্কো রুবিওর কথায় স্পষ্ট—ট্রাম্প প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য এখন ইউক্রেন যুদ্ধ থামানো, চীনের বাণিজ্য অনিয়ম মোকাবিলা, অভিবাসন আইন প্রয়োগ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গঠনগত বদল এনে কার্যকারিতা বাড়ানো। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’ আসন্ন সপ্তাহগুলোই নির্ধারণ করবে।
Leave a Reply