০২:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

আসন্ন তিন মাসে বাংলাদেশের আবহাওয়ার চিত্র

  • Sarakhon Report
  • ০৫:৫৫:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
  • 67

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ঢাকা, ১ মে ২০২৫: আবহাওয়া অধিদফতরের সাম্প্রতিক পূর্বাভাস অনুযায়ী মে থেকে জুলাই মাসে বাংলাদেশে তাপমাত্রার ওঠানামা, বিরল বর্ষণ ও স্থানীয় ভিন্নতার মিশ্রণে ক্রমাগত চ্যালেঞ্জ দেখা দেবে। ভোক্তা থেকে কৃষক—সবেরই চলতি মৌসুমে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।

তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত : মে মাস

  • গড় তাপমাত্রা: সর্বোচ্চ ৩২.১ °C, সর্বনিম্ন ২৫.০ °C (গড় ২৮.৩ °C)
  • আর্দ্রতা: প্রায় ৮১%
  • রৌদ্রতা: প্রায় ৭ ঘণ্টা/দিন
  • বৃষ্টিদিন: প্রায় ১৬ দিন, মোট বৃষ্টিপাত ≈ ৩৩১ মিমি

মে মাসে দেশের বেশিরভাগ জেলায় দিনের তাপমাত্রা ৩৩ °C ছুঁয়ে যেতে পারে। আর্দ্রতার কারণে ‘তাপ-চাপ’ অনুভূতি আরও বেড়ে যাবে। মাঝারি থেকে ভারী বজ্রবৃষ্টি আকস্মিক অগভীর ঝড়ের সঙ্গে হতে পারে, বিশেষ করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা থাকায় স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে হবে।

বর্ষার অগ্রগতি: জুন–জুলাই

  • জুনের গড় তাপমাত্রা: সর্বোচ্চ ৩১.৩ °C, সর্বনিম্ন ২৫.৯ °C; বৃষ্টিদিন ≈ ২০, বৃষ্টিপাত ≈ ৩৬৮ মিমি
  • জুলাইয়ের গড় তাপমাত্রা: সর্বোচ্চ ৩০.৬ °C, সর্বনিম্ন ২৫.৭ °C; বৃষ্টিদিন ≈ ২১, বৃষ্টিপাত ≈ ৩৫৩ মিমি
  • জুনের আর্দ্রতা ≈ ৮৫%, জুলাই ≈ ৮৬%; রৌদ্রতা প্রায় ৬.৭–৭ ঘণ্টা/দিন (জুলাইতে ভাবে মাত্র ২ ঘণ্টা/দিন)

জুনের শেষদিকে বর্ষা পুরো দেশে হলেও প্রথমে বৃষ্টিপাত ফোকাস থাকবে উত্তরাঞ্চল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উচ্চভূমিতে। জুলাইয়ে ভারী বর্ষণ দেশে প্রায় দৈনিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করবে—দুপুরের বৃষ্টিতে বাজার ও জনসড়কে জলোচ্ছ্বাস দেখা দিতে পারে। নদীবাঁধ ও খাল নালায় পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা গুরুত্বপূর্ণ হবে।

আঞ্চলিক বৈচিত্র্য

  • দক্ষিণ-পূর্ব (চট্টগ্রাম, সিলেট): বৃহৎ বর্ষণ, জুলাইয়ে মাসিক বৃষ্টির পরিমাণ ৪০০–৪৫০ মিমিরও ওপর যেতে পারে।
  • পশ্চিম (রাজশাহী, রংপুর): তুলনামূলক ভাবে কম বৃষ্টি (প্রায় ১,৫০০–১,৬০০ মিমি বাৎসরিক), তবে মধ্যবর্ষায় স্থানীয় বন্যা ঝুঁকি থাকে।
  • নদী ভাঙনপ্রবণ চরাঞ্চল (বরিশাল, পটুয়াখালী): সুপার সাইক্লোনের স্মৃতি এখনও তাজা;  আকাশ থেকে নেমে আসা বৃষ্টি সামুদ্রিক জোয়ারের সঙ্গে মিলিয়ে সাবধানে থাকতে হবে।

কৃষি ও জীবিকা প্রভাব

  • আউশ ধান রোপণ: জুনের মাঝামাঝি সময়ে পানি নিয়ন্ত্রণ ও সেচের মাধ্যম পরিকল্পনা করতে হবে।
  • আমন আবাদ: জুলাইয়েই আমান বীজ বপনে ঝুঁকির পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানির সুব্যবস্থা জরুরি।
  • মাছ চাষ: ইলিশ প্রজনন বৃদ্ধি হবে
  • অপ্রত্যাশিত বন্যায় হুমকি থাকবে।
  • শহুরে জনজীবন: বৃষ্টি কারণে জলাবদ্ধতা; পরিষ্কারের কাজ ও শহুরে পরিকল্পনায় মনোযোগ বাড়াতে হবে।

ঝুঁকি ও প্রস্তুতি পরামর্শ

  • তাপ-চাপ প্রশমন: পর্যাপ্ত পানি, হালকা লোশন, পরিস্কার পোশাক ব্যবহার করুন।
  • ঘূর্ণিঝড় সচেতনতা: মে মাসে কোস্টাল এলাকা সহপাঠক নির্দেশনা মেনে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখুন।
  • বন্যা ও জলাবদ্ধতা: উচ্চভূমিতে সরিয়ে যাওয়া, জরুরি ব্যাগে ওষুধ–সরঞ্জাম রাখুন।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, প্রবল বর্ষণ–অনাবর্ষণে এক ধরনের দুই মেরুর সঙ্কট তৈরি হচ্ছে। দীর্ষমেয়াদী পরিকল্পনায় নদী ব্যবস্থাপনা, গড় জলাধার ও সবুজায়ন বৃদ্ধিকেই সমাধান হিসাবে দেখা হচ্ছে।

 

আসন্ন তিন মাসে বাংলাদেশের আবহাওয়ার চিত্র

০৫:৫৫:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ঢাকা, ১ মে ২০২৫: আবহাওয়া অধিদফতরের সাম্প্রতিক পূর্বাভাস অনুযায়ী মে থেকে জুলাই মাসে বাংলাদেশে তাপমাত্রার ওঠানামা, বিরল বর্ষণ ও স্থানীয় ভিন্নতার মিশ্রণে ক্রমাগত চ্যালেঞ্জ দেখা দেবে। ভোক্তা থেকে কৃষক—সবেরই চলতি মৌসুমে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।

তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত : মে মাস

  • গড় তাপমাত্রা: সর্বোচ্চ ৩২.১ °C, সর্বনিম্ন ২৫.০ °C (গড় ২৮.৩ °C)
  • আর্দ্রতা: প্রায় ৮১%
  • রৌদ্রতা: প্রায় ৭ ঘণ্টা/দিন
  • বৃষ্টিদিন: প্রায় ১৬ দিন, মোট বৃষ্টিপাত ≈ ৩৩১ মিমি

মে মাসে দেশের বেশিরভাগ জেলায় দিনের তাপমাত্রা ৩৩ °C ছুঁয়ে যেতে পারে। আর্দ্রতার কারণে ‘তাপ-চাপ’ অনুভূতি আরও বেড়ে যাবে। মাঝারি থেকে ভারী বজ্রবৃষ্টি আকস্মিক অগভীর ঝড়ের সঙ্গে হতে পারে, বিশেষ করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা থাকায় স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে হবে।

বর্ষার অগ্রগতি: জুন–জুলাই

  • জুনের গড় তাপমাত্রা: সর্বোচ্চ ৩১.৩ °C, সর্বনিম্ন ২৫.৯ °C; বৃষ্টিদিন ≈ ২০, বৃষ্টিপাত ≈ ৩৬৮ মিমি
  • জুলাইয়ের গড় তাপমাত্রা: সর্বোচ্চ ৩০.৬ °C, সর্বনিম্ন ২৫.৭ °C; বৃষ্টিদিন ≈ ২১, বৃষ্টিপাত ≈ ৩৫৩ মিমি
  • জুনের আর্দ্রতা ≈ ৮৫%, জুলাই ≈ ৮৬%; রৌদ্রতা প্রায় ৬.৭–৭ ঘণ্টা/দিন (জুলাইতে ভাবে মাত্র ২ ঘণ্টা/দিন)

জুনের শেষদিকে বর্ষা পুরো দেশে হলেও প্রথমে বৃষ্টিপাত ফোকাস থাকবে উত্তরাঞ্চল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উচ্চভূমিতে। জুলাইয়ে ভারী বর্ষণ দেশে প্রায় দৈনিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করবে—দুপুরের বৃষ্টিতে বাজার ও জনসড়কে জলোচ্ছ্বাস দেখা দিতে পারে। নদীবাঁধ ও খাল নালায় পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা গুরুত্বপূর্ণ হবে।

আঞ্চলিক বৈচিত্র্য

  • দক্ষিণ-পূর্ব (চট্টগ্রাম, সিলেট): বৃহৎ বর্ষণ, জুলাইয়ে মাসিক বৃষ্টির পরিমাণ ৪০০–৪৫০ মিমিরও ওপর যেতে পারে।
  • পশ্চিম (রাজশাহী, রংপুর): তুলনামূলক ভাবে কম বৃষ্টি (প্রায় ১,৫০০–১,৬০০ মিমি বাৎসরিক), তবে মধ্যবর্ষায় স্থানীয় বন্যা ঝুঁকি থাকে।
  • নদী ভাঙনপ্রবণ চরাঞ্চল (বরিশাল, পটুয়াখালী): সুপার সাইক্লোনের স্মৃতি এখনও তাজা;  আকাশ থেকে নেমে আসা বৃষ্টি সামুদ্রিক জোয়ারের সঙ্গে মিলিয়ে সাবধানে থাকতে হবে।

কৃষি ও জীবিকা প্রভাব

  • আউশ ধান রোপণ: জুনের মাঝামাঝি সময়ে পানি নিয়ন্ত্রণ ও সেচের মাধ্যম পরিকল্পনা করতে হবে।
  • আমন আবাদ: জুলাইয়েই আমান বীজ বপনে ঝুঁকির পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানির সুব্যবস্থা জরুরি।
  • মাছ চাষ: ইলিশ প্রজনন বৃদ্ধি হবে
  • অপ্রত্যাশিত বন্যায় হুমকি থাকবে।
  • শহুরে জনজীবন: বৃষ্টি কারণে জলাবদ্ধতা; পরিষ্কারের কাজ ও শহুরে পরিকল্পনায় মনোযোগ বাড়াতে হবে।

ঝুঁকি ও প্রস্তুতি পরামর্শ

  • তাপ-চাপ প্রশমন: পর্যাপ্ত পানি, হালকা লোশন, পরিস্কার পোশাক ব্যবহার করুন।
  • ঘূর্ণিঝড় সচেতনতা: মে মাসে কোস্টাল এলাকা সহপাঠক নির্দেশনা মেনে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখুন।
  • বন্যা ও জলাবদ্ধতা: উচ্চভূমিতে সরিয়ে যাওয়া, জরুরি ব্যাগে ওষুধ–সরঞ্জাম রাখুন।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, প্রবল বর্ষণ–অনাবর্ষণে এক ধরনের দুই মেরুর সঙ্কট তৈরি হচ্ছে। দীর্ষমেয়াদী পরিকল্পনায় নদী ব্যবস্থাপনা, গড় জলাধার ও সবুজায়ন বৃদ্ধিকেই সমাধান হিসাবে দেখা হচ্ছে।