সারাক্ষণ রিপোর্ট
প্রাথমিক ‘কাগজে প্রস্তাবনা’ কী?
ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছে, নির্বাচনের আগে বিরূপ শুল্ক (reciprocal tariffs) আরোপের ভয় দেখিয়ে দুশোটি চুক্তি সই হয়েছে। তবে হোয়াইট হাউজ নিজেই বলছে, এতে আসলে ১৭–১৮টি দেশ তাদের নীতিগত রূপরেখা (term sheet) জমা দিয়েছে মাত্র। এই নথিতে শুল্ক হার থেকে শুরু করে অ-শুল্ক প্রতিবন্ধকতা, প্রযুক্তি ও ডিজিটাল বাণিজ্য নীতি এবং বিনিয়োগের সুযোগ সম্পর্কে দেশের অগ্রাধিকারগুলি তুলে ধরা হয়েছে।
দেশগুলো কেন শর্তপ্রদানে অনীহা?
অনেকে শর্তগত আলোচনায় এখনি আসতে রাজি নয়। “দেশগুলো নিজেদেরই বিপক্ষে দরকষাকষি করতে চায় না,” এমনটাই মনে করেন এক শিল্পকর্মী, যিনি বিভিন্ন সরকারের পরিকল্পনা থেকে অবহিত। অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের স্পষ্ট চাহিদা জানতে চায়, তবেই তারা নিজেদের প্রস্তাবনা জমা দেবে।
হোয়াইট হাউজের নিজস্ব কৌশল
বিভিন্ন সিটিজেনদের দৃষ্টি সরিয়ে রাখতে হোয়াইট হাউজ ‘কাগজে অগ্রগতি’ দেখাচ্ছে। ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট, ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালক কেভিন হ্যাসেট এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জ্যামিসন গ্রিয়ার সকলেই আলোচনার জন্য আসা নথিগুলো দেখিয়ে অগ্রগতির কথা বলছেন। প্রকৃত চুক্তি করতে গিয়ে সময়সাপেক্ষ আলোচনার সুযোগ নিচ্ছে প্রশাসন।
ভারতের সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি
ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে “ টার্মস অফ রেফারেন্স”চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, যা পরবর্তী মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং বা বহুমুখী আলোচনার কাঠামো নির্ধারণ করবে। ট্রাম্প নিজেও বলেছেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হবে।”
দক্ষিণ কোরিয়া ও অন্যান্য বাধা
দক্ষিণ কোরিয়া জানাচ্ছে, তাদের জুনের নির্বাচন ও পঙ্গু সরকারের কারণে নির্বাচনের আগে কোনো চুক্তি ‘তাত্ত্বিকভাবেই অসম্ভব’। অন্য অনেক দেশই একইভাবে শুরুর দিনক্ষণ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দৃষ্টিভঙ্গি
ইইউ এখনো ‘সুবিধাজনক স্থানে’ -এ রয়েছে। ২৭ সদস্যের ব্লকটি টার্ম শীট নিয়ে আলোচনা করছে—যাতে হয়তো কিছু শুল্ক কমানো, আঞ্চলিক বিনিয়োগ বাড়ানো বা প্রবিধান শিথিলের মতো শর্ত থাকতে পারে। “ঠিক কী চায় যুক্তরাষ্ট্র, এখনও স্পষ্ট নয়,” একজন ইউরোপীয় কূটনীতিক মন্তব্য করেছেন। অন্য কেউ বলছেন, “ইউরোপের পক্ষ থেকে আগে এগিয়ে যাওয়া ভুল হবে—ধৈর্য ধরাটাই শ্রেয়।”
আগামী লক্ষ্য
ট্রাম্প প্রশাসন নিজেই জুলাই ৮ তারিখ পর্যন্ত চূড়ান্ত সমঝোতা করতে চায়। তবে বিদেশি কর্মকর্তা ও কূটনীতিকরা মনে করেন, এখনও কাঠামো থেকে বাস্তব চুক্তিতে পৌঁছতে মাসখানেকও লাগতে পারে।