মাল নৌকায় বোঝাই করে যমুনা নদী পার হয়ে পূর্ব পাড়ে আনতে সময় লাগে এক সপ্তাহ, পূর্ব পাড়ে আসার পরে নৌকা থেকে…
সঙ্গত কারণেই, তাই ১৯৪৩ সালের মে মাসে ৪৯০তম বিএস-কে অন্দল থেকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয় ২০০ মাইল পূর্বদিকে, ঢাকার কুর্মিটোলায় ,বার্মা রণাঙ্গণের অতি নিকটে। এই সরানো পর্বের দরুণ জাপানিদের প্রধান ঘাঁটি “মিয়িাটকিয়িনা’-র দূরত্ব হয় পূর্ব বরাবর কুর্মিটোলা থেকে মাত্র ৪৫০ মাইল। অর্থাৎ, ১৫০০ মাইলের উড়ন্ত পরিধি সম্পন্ন বি-২৫ বোমারু বিমানের প্রবেশ-গম্যতা বৃদ্ধি পায়।
অবশ্য রেল লাইনের প্রশস্ততার বিভিন্নতার জন্য ৪৯০তম বিএস-এর স্থানান্তর মোটেই সহজ ও দ্রুত হতে পারেনি। কারণ, যমুনা নদীর পশ্চিম ধারের রেল লাইন ছিল “ব্রড গেজে”র, নদী পার হয়ে পূর্ব ধারে এলেই “মিটার গেজে’র রেল লাইন। প্রশ্বস্ততার বিভিন্নতার জন্য রেলগাড়িতে সব মালপত্র বোঝাই করে একই রেলগাড়িতে গন্তব্যস্থল পর্যন্ত টানা চলে আসা সম্ভব ছিল না।
তাই প্রথমে “ব্রড গেজের” রেলে আনা মালপত্র যমুনার পশ্চিম পাড়ে নামিয়ে দেয়া হয়, সেই মাল নৌকায় বোঝাই করে যমুনা নদী পার হয়ে পূর্ব পাড়ে আনতে সময় লাগে এক সপ্তাহ, পূর্ব পাড়ে আসার পরে নৌকা থেকে মালপত্র নামিয়ে সেগুলোকে “মিটার গেজের” রেলে আবার বোঝাই করে ঢাকা পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়। তাই মালপত্র সমেত অন্দল থেকে কুর্মিটোলায় স্থানান্তরিত হওয়াটা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের ছিল।

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ চলার সময়: কুর্মিটোলার কন্ট্রোল টাওয়ার।
ইভো যখন কুর্মিটোলায় জয়েন করেন, তখনো কুর্মিটোলার নির্মাণকর্ম চলছিল এবং ইভো-র স্মৃতির পাতায় কুর্মিটোলার পরিকল্পনা বিন্যাস এখনো জ্বলজ্বলে হয়ে রয়েছে, বললেন “নতুন এই ঘাঁটিটি তুলনামূলকভাবে বৃহত্তর ছিল এবং নির্মাণকর্ম তখনো সম্পূর্ণ হয়নি। তবে যতোটুকু হয়েছিল তাতে করে কিছুকালের জন্য আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে সক্ষম হই। আমার তত্ত্বাবধানে স্কোয়াড্রনের যে অংশটি বোমা ভান্ডারীতে কাজ করত সেটির তো বটেই ছোটো আরো দুটো ঘরের- যেখানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং অন্যান্য সাপ্লাই নিয়ে কাজ হতো, সেগুলোর দেয়াল দেয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। সামরিক ভবনের একাংশকে অফিস হিসেবে ব্যবহার করতাম”।
(চলবে)
নাঈম হক 


















