সারাক্ষণ রিপোর্ট
উৎপাদন ও রপ্তানি পরিস্থিতি
ইন্দোনেশিয়া বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম কফি উৎপাদক ও রপ্তানিকারক দেশ, ব্রাজিল, ভিয়েতনাম ও কলম্বিয়ার পর। প্রধানত রাবুস্টা জাতের কফি চাষ হলেও, মানসম্পন্ন আরাবিকা জাতেরও ছোটখাটো বাগান রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, মিশর, মালয়েশিয়া, জাপান ও ভারত এ দেশের শীর্ষ রপ্তানি গন্তব্য।
অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও আমদানি প্রবণতা
দেশের কফিপানের পোশাকে ভরা চেইন—ফোর, কপি কেনাঙ্গান, ফ্ল্যাশ কফি—জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ভিয়েতনাম, ব্রাজিল ও মালয়েশিয়া থেকেও আমদানি বাড়ছে। কাওসারি চাষালয়ের মালিক ওয়েদিয়া জুলিয়ান্টি বলেন, “আগের তুলনায় এখন স্থানীয় ক্যাফে থেকে অর্ডার অনেক বেড়ে গিয়েছে; রপ্তানি প্রায় বন্ধের পথে।”
ভবিষ্যৎ উৎপাদন সংকট
ইন্দোনেশিয়ান কফি রপ্তানিকারক এবং শিল্প সমিতির চেয়ারম্যান মোয়েলিয়োনো সূসিলো সতর্ক করেছেন, “উৎপাদন না বাড়ালে পাঁচ বছরের মধ্যে আমরা নিট আমদানিকারক দেশে পরিণত হতে পারি।”
উৎপাদন বৃদ্ধির বাধা
• উচ্চ সারের দাম ও সারের ভর্তুকির অভাব
• কৃষকের গড় বয়স বেড়ে যাওয়া
• জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভারি বর্ষণ ও অনিয়মিত খরা
১৯৯০-এর দশকে ব্লিটার অঞ্চলে ছিল প্রায় ২৪টি বেসরকারি কফি চাষালয়, এখন তা অনেক কমে এসেছে। কাওসারির প্রধান আগুস হরিয়ান্টো জানান, “কোভিড-১৯ পর পুনরুদ্ধার হলেও তখনকার উৎপাদন অধরা।”
ক্ষুদ্র চাষীর চ্যালেঞ্জ
পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৯৯.৬% চাষী ক্ষুদ্রকৃষক। মালাংয়ের তৃতীয় প্রজন্মের রাবুস্টা চাষি ফেরি সিনাত্রা বলছেন, “সরকারি সার ভর্তুকি ধান, ভুট্টা ও সয়াবিনের জন্য; কফির জন্য পাওয়া কঠিন।” ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে রাবুস্টা চারা বিক্রয় মূল্য দ্বিগুণ হয়ে গেছে, যা ছোট চাষীদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
ফসলের গড় ফলন ও তুলনা
এশিয়া-প্যাসিফিক খাদ্য ও সার প্রযুক্তি কেন্দ্রের তথ্য মতে, ইন্দোনেশিয়ার গড়ে ৫৮৫ কেজি ফলন হেক্টরপ্রতি, যা ভিয়েতনামের উৎপাদনের এক-পঞ্চমাংশ মাত্র। ভিয়েতনাম সরকার কৃষকদের পুরনো গাছ প্রতিস্থাপনের জন্য লোন দিচ্ছে, ফলে তাদের ফলন বাড়ছে।
জলবায়ু সমস্যা ও গবেষণার ঘাটতি
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভারি বৃষ্টিপাতে কফি ফুল ও কুঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ২০২৩–২৪ বিপণন বছরে এই কারণে উৎপাদন ২৪% কমে ৮.১৫ মিলিয়ন (প্রতি ব্যাগে ৬০-কেজি) ব্যাগে নেমে এসেছে। সরকার পর্যাপ্ত গবেষণা ও রক্ষা প্রণালী তৈরি করেনি, তাই অনেক চাষিই বিপন্ন। কাওসারি হচ্ছে তারকণিক গুণগত উন্নয়নে নিজের খরচে গবেষণা চালানো কমসংখ্যক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি।
সরকারী উদ্যোগ ও পরিকল্পনা
• জানুয়ারি ২০২৫: আর্থিক সেবা কর্তৃপক্ষ কৃষি ঋণে কফি চাষীদের সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা
• কৃষিমন্ত্রণালয় বছরে ৪৪০০ হেক্টর নতুন চারা রোপণ ও পুরনো চারা প্রতিস্থাপন, প্রশিক্ষণ ও “উন্নত” চারা প্রদান
• ২০২৫ সাল থেকে কফিকেও সরকারী সার ভর্তুকি প্রণয়ন
এসব উদ্যোগ কফি উৎপাদন ও রপ্তানি দুটোই পুনরায় দৃঢ় করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।