ইউএনবি থেকে অনূদিত
ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট
১৯৪০ সালে নেউরা–ধুলিপাড়া অঞ্চলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈন্যবেস হিসেবে নির্মিত হয় কুমিল্লা বিমানবন্দর। যুদ্ধকালে সামরিক ও বেসামরিক উভয় ফ্লাইট চালু থাকলেও ১৯৬৬ সালের পর সেখানে প্রধানত সামরিক রুটে বিমান চলাচল চলছিল। ১৯৬৬–৭৬ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ রুটেও সাধারণ যাত্রীবাহী ফ্লাইট দেড় দশক পরিচালিত হয়েছিল; তবে ১৯৭৬ সালে যাত্রাবিহীন হয়ে পড়ে।

বর্তমান ব্যবহার ও আর্থিক বিস্তার
বিমানবন্দর হিসেবে কার্যক্রম বন্ধ হলেও আন্তর্জাতিক বিমানসংস্থা হিসেবে এখানে প্রতিদিন নাগাদ ২৫–৩০ ফ্লাইটের সিগন্যাল রিলে হয়ে থাকে, যার মধ্যে ভারতীয় অভ্যন্তরীণ রুট এবং আগরতলা, ব্যাংকক ও সিঙ্গাপুর ফ্লাইট উল্লেখযোগ্য। এই সেবার মাধ্যমে প্রতিমাসে ৩০–৪০ লাখ টাকা আয় হয়।
ভূমির পরিমাণ ও বর্তমান অবস্থা
মোট ২১১ একর জমির মধ্যে ১৯৯৯ সালে ১০৩ একর দিয়ে নির্মাণ করা হয় কুমিল্লা রপ্তানি অভ্যন্তরীণ অঞ্চল (ইপিজেড),ফলে বর্তমানে বিমানবন্দর দখলযোগ্য ৭৭ একরে সংকুচিত। অব্যবহৃত অংশে গবাদি পশু চারণাভূমি প্রতিষ্ঠিত, আর প্লেয়োতে আগাছা আর ফাটল ধরেছে রানওয়েতে।

প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ
সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে থাকা ২২ জন কর্মী (দুটি অফিসারসহ) ভবনপথ ও নিয়ন্ত্রণ টাওয়ারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। যন্ত্রপাতি সক্রিয় রাখতে রানওয়ে সংস্কার, ফায়ার সার্ভিস পুনর্বহাল এবং দক্ষ স্টাফ নিয়োগের প্রয়োজন। আনুমানিক ৩০ কোটি টাকার বিনিয়োগেই রানওয়ে পুনর্জাগরণের সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় বাণিজ্যীদের দৃষ্টি
কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি জামাল আহমেদ মনে করেন, বিমানবন্দর চালু থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ভ্রমণ সহজ হবে এবং হাজারো কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। খাদ্য শিল্পোদ্যোক্তা এমডি ফিরোজ খন্দকার বলেন, মালয়েশিয়া ও ভারতের আসাম-এ বেচাকেনা করা ভারমাইসেলি শিগগির সৌদি আরব ও দুবাইয়েও পাঠাতে চান; বিমানবন্দরে সরাসরি পণ্যবাহী বিমান যাতায়াতে তা দ্রুত সম্ভব।

প্রবাসীদের চাহিদা
কুমিল্লা প্রবাসী ঘনত্বের দিক থেকে দেশের শীর্ষে; তাই আবাসিকদের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের চাহিদাও বিপুল। কুমিল্লা ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ সোয়েব সোহেল বলেন, স্থানীয়দের ভ্রমণ সুবিধা নিশ্চিতের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে এ বিমানবন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পুনরায় উড়ানের আহ্বান
দীর্ঘ নারিরবতার পর হাঁটা শুরু করতে চেয়ে থাকা এ রানওয়েতে নতুন সম্ভাবনার উদয় ঘটাতে আটকে আছে একটি মাত্র ইচ্ছাশক্তি—সরকারের অগ্রাধিকার এবং প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ।
Sarakhon Report 



















