০৭:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

হজ পারমিট ছাড়া হজ না করার অনুরোধ: কঠোর নজরদারি ও বিধিনিষেধ জারি

  • Sarakhon Report
  • ০৫:৫৩:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
  • 133

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন হজ পারমিট ছাড়া কেউ হজ পালনের চেষ্টা না করেন। হজ ব্যবস্থাপনার শৃঙ্খলা রক্ষা, হজযাত্রীদের কল্যাণ এবং সৌদি আরবের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার স্বার্থে এই অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ভিজিট ভিসায় হজে নিষেধাজ্ঞা

চলতি হজ মৌসুমে মন্ত্রণালয় জানায়, ভিজিট ভিসায় সৌদি আরবে গিয়ে কেউ যেন মক্কা বা অন্য পবিত্র স্থানে অবস্থান না করেন। এছাড়া, হজ বিধিমালা ভঙ্গকারী ভিজিট ভিসাধারীদের আশ্রয়, পরিবহন, সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশে সহায়তা ও আবাসনের ব্যবস্থা থেকেও বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।

সৌদি সরকারের নতুন নিয়ম

২০২৫ সালের হজ মৌসুমকে সামনে রেখে সৌদি সরকার কঠোর বিধিমালা জারি করেছে। এই নিয়ম অনুযায়ী, মক্কা বা পবিত্র স্থানে প্রবেশের জন্য প্রয়োজন হবে—

  • সরকারি হজ পারমিট
  • বৈধ কাজের অনুমতি
  • মক্কায় নিবন্ধিত বাসস্থান সংক্রান্ত কাগজ (ইকামা)

এই শর্ত পূরণ না করলে মক্কায় প্রবেশ নিষিদ্ধ।

কঠোর শাস্তির ঘোষণা

সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হুঁশিয়ারি দিয়েছে, কেউ যদি পারমিট ছাড়া হজ পালনের চেষ্টা করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে নিচের পদক্ষেপ নেওয়া হবে—

  • সর্বোচ্চ ২০,০০০ সৌদি রিয়াল জরিমানা
  • সহায়তা করলে এক লাখ রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা
  • নিজস্ব যানবাহন বাজেয়াপ্ত করার সম্ভাবনা
  • বৈধতা ছাড়া অবস্থান করলে বহিষ্কার এবং পরবর্তী ১০ বছর সৌদি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

এই বিধান কার্যকর থাকবে ১ জিলকদ (২৯ এপ্রিল) থেকে ১৪ জিলহজ (১০ জুন) পর্যন্ত।

বাংলাদেশিদের প্রতি সতর্কবার্তা

বিশেষভাবে নজরদারিতে থাকবে যারা ভিজিট ভিসা নিয়ে সৌদিতে গেছেন। মক্কা ও আশপাশের এলাকায় অননুমোদিত প্রবেশ ঠেকাতে সর্বোচ্চ নজরদারি চালানো হবে।

সরকারের অবস্থান ও বক্তব্য

আলেমরাই একদিন এ দেশের নেতৃত্ব দেবে: ধর্ম উপদেষ্টা

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি সরকারের আইন মানা অত্যন্ত জরুরি। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, প্রবাসী ৩৫ লক্ষ বাংলাদেশির কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং এই অবৈধ হজ প্রচেষ্টায় তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

তিনি সবাইকে অনুরোধ করেন, অননুমোদিত হজ কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে এবং মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে সরকারকে সহযোগিতা করতে।

ধর্ম সচিবের ব্যাখ্যা

ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক বলেন, হজ একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনা যেখানে সৌদি আরবের নেতৃত্বমূলক ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, আইনি কাঠামো, পরিকল্পনা এবং অংশীজনের সহযোগিতা ছাড়া সুশৃঙ্খল হজ সম্ভব নয়।

তিনি বলেন—

  • বাংলাদেশ সরকার সৌদি আরবের সকল উদ্যোগকে স্বাগত জানায়
  • হজের পবিত্রতা রক্ষায় এবং যাত্রীদের নিরাপত্তায় ‘টিম স্পিরিটে’ কাজ করতে হবে
  • ২০২৫ সালের হজকে সফল করতে বাংলাদেশিদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে

উপসংহার

বাংলাদেশ সরকার হজ ব্যবস্থাপনায় কঠোর আইন মানার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে এবং বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন কেউ হজ পারমিট ছাড়া হজ পালনের চেষ্টা না করেন। সৌদি আরবের কঠোর নজরদারির মধ্যে এই অনুরোধ অমান্য করা হলে বড় ধরনের শাস্তি ও কূটনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

হজ পারমিট ছাড়া হজ না করার অনুরোধ: কঠোর নজরদারি ও বিধিনিষেধ জারি

০৫:৫৩:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন হজ পারমিট ছাড়া কেউ হজ পালনের চেষ্টা না করেন। হজ ব্যবস্থাপনার শৃঙ্খলা রক্ষা, হজযাত্রীদের কল্যাণ এবং সৌদি আরবের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার স্বার্থে এই অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ভিজিট ভিসায় হজে নিষেধাজ্ঞা

চলতি হজ মৌসুমে মন্ত্রণালয় জানায়, ভিজিট ভিসায় সৌদি আরবে গিয়ে কেউ যেন মক্কা বা অন্য পবিত্র স্থানে অবস্থান না করেন। এছাড়া, হজ বিধিমালা ভঙ্গকারী ভিজিট ভিসাধারীদের আশ্রয়, পরিবহন, সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশে সহায়তা ও আবাসনের ব্যবস্থা থেকেও বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।

সৌদি সরকারের নতুন নিয়ম

২০২৫ সালের হজ মৌসুমকে সামনে রেখে সৌদি সরকার কঠোর বিধিমালা জারি করেছে। এই নিয়ম অনুযায়ী, মক্কা বা পবিত্র স্থানে প্রবেশের জন্য প্রয়োজন হবে—

  • সরকারি হজ পারমিট
  • বৈধ কাজের অনুমতি
  • মক্কায় নিবন্ধিত বাসস্থান সংক্রান্ত কাগজ (ইকামা)

এই শর্ত পূরণ না করলে মক্কায় প্রবেশ নিষিদ্ধ।

কঠোর শাস্তির ঘোষণা

সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হুঁশিয়ারি দিয়েছে, কেউ যদি পারমিট ছাড়া হজ পালনের চেষ্টা করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে নিচের পদক্ষেপ নেওয়া হবে—

  • সর্বোচ্চ ২০,০০০ সৌদি রিয়াল জরিমানা
  • সহায়তা করলে এক লাখ রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা
  • নিজস্ব যানবাহন বাজেয়াপ্ত করার সম্ভাবনা
  • বৈধতা ছাড়া অবস্থান করলে বহিষ্কার এবং পরবর্তী ১০ বছর সৌদি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

এই বিধান কার্যকর থাকবে ১ জিলকদ (২৯ এপ্রিল) থেকে ১৪ জিলহজ (১০ জুন) পর্যন্ত।

বাংলাদেশিদের প্রতি সতর্কবার্তা

বিশেষভাবে নজরদারিতে থাকবে যারা ভিজিট ভিসা নিয়ে সৌদিতে গেছেন। মক্কা ও আশপাশের এলাকায় অননুমোদিত প্রবেশ ঠেকাতে সর্বোচ্চ নজরদারি চালানো হবে।

সরকারের অবস্থান ও বক্তব্য

আলেমরাই একদিন এ দেশের নেতৃত্ব দেবে: ধর্ম উপদেষ্টা

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি সরকারের আইন মানা অত্যন্ত জরুরি। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, প্রবাসী ৩৫ লক্ষ বাংলাদেশির কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং এই অবৈধ হজ প্রচেষ্টায় তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

তিনি সবাইকে অনুরোধ করেন, অননুমোদিত হজ কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে এবং মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে সরকারকে সহযোগিতা করতে।

ধর্ম সচিবের ব্যাখ্যা

ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক বলেন, হজ একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনা যেখানে সৌদি আরবের নেতৃত্বমূলক ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, আইনি কাঠামো, পরিকল্পনা এবং অংশীজনের সহযোগিতা ছাড়া সুশৃঙ্খল হজ সম্ভব নয়।

তিনি বলেন—

  • বাংলাদেশ সরকার সৌদি আরবের সকল উদ্যোগকে স্বাগত জানায়
  • হজের পবিত্রতা রক্ষায় এবং যাত্রীদের নিরাপত্তায় ‘টিম স্পিরিটে’ কাজ করতে হবে
  • ২০২৫ সালের হজকে সফল করতে বাংলাদেশিদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে

উপসংহার

বাংলাদেশ সরকার হজ ব্যবস্থাপনায় কঠোর আইন মানার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে এবং বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন কেউ হজ পারমিট ছাড়া হজ পালনের চেষ্টা না করেন। সৌদি আরবের কঠোর নজরদারির মধ্যে এই অনুরোধ অমান্য করা হলে বড় ধরনের শাস্তি ও কূটনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।