সারাক্ষণ রিপোর্ট
- প্রকল্প ব্যয় ও অগ্রগতি: ২০২০ সালে একনেক মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করে, যার প্রাথমিক ব্যয় ছিল ১৭,৭৭৭ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে প্রকল্পটি সংশোধন করে ব্যয় বাড়িয়ে ২৪,৩৮১ কোটি টাকা করা হয় এবং সময়সীমা ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয় ।
- বিদেশি সহায়তা: জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (JICA) প্রকল্পটির পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে এবং নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে ।
- অবকাঠামো উন্নয়ন: প্রকল্পের আওতায় ১,৭৫৩ মিটার উত্তর ব্রেকওয়াটার, ৭১৩ মিটার দক্ষিণ ব্রেকওয়াটার এবং ১,৮০২.৮৫ মিটার রিভেটমেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে ।
মোংলা সমুদ্রবন্দর: আঞ্চলিক বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু
- বাজেট বৃদ্ধি: মোংলা বন্দরের উন্নয়নে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে ৬১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় ৪৫ গুণ বেশি ।
- চীনের সহায়তা: চীন মোংলা বন্দরের উন্নয়নে ৩৫.৯৩ বিলিয়ন টাকা ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ।
- অবকাঠামো উন্নয়ন: প্রকল্পের আওতায় দুটি কনটেইনার জেটি, একটি ইয়ার্ড এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে ।
- আঞ্চলিক সংযোগ: নেপাল ও ভুটানকে মোংলা বন্দর ব্যবহার করে তাদের বৈদেশিক বাণিজ্য পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে ।
পায়রা বন্দর: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
- বাজেট বৃদ্ধি: পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল ও সংশ্লিষ্ট সুবিধাদি উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ৯১১ কোটি টাকা বাড়িয়ে মোট ৫,২২৮ কোটি টাকা করা হয়েছে এবং সময়সীমা ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে ।
- নাব্যতা সমস্যা: চ্যানেলের দীর্ঘতা ও প্রশস্ততার কারণে বার্ষিক ড্রেজিং প্রয়োজন, যা ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ ।
- অর্থায়ন: বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (BIDF) থেকে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে ৪৭০.৭৮ মিলিয়ন ইউরো ঋণ দেওয়া হয়েছে, যার সুদের হার ২% ।
সার্বিক মূল্যায়ন
বাংলাদেশের তিনটি প্রধান সমুদ্রবন্দর—মাতারবাড়ি, মোংলা ও পায়রা—উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের বাণিজ্যিক সক্ষমতা, আঞ্চলিক সংযোগ এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, প্রকল্পগুলোর সময়মতো বাস্তবায়ন, বাজেটের সঠিক ব্যবহার এবং পরিবেশগত টেকসইতা নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।