০৬:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
ভারতের নতুন শ্রম আইন নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভে ট্রেড ইউনিয়নগুলো একই দিনে দুই ভোট আয়োজনে নির্বাচন কমিশনের সামনে যে চ্যালেঞ্জ আশাশুনি–সাতক্ষীরা সড়কে অ্যাম্বুলেন্স–ইজিবাইক সংঘর্ষে আহত ৬, ঝুঁকিতে রোগীবাহী যান খুলনা–চুকনগর হাইওয়েতে থ্রি–হুইলার চলাচলে বাড়ছে দুর্ঘটনা ও ঝুঁকি আত্রাইয়ে মাছবাহী ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী সেনা সদস্য নিহত যশোরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী–এলাকাবাসী সংঘর্ষে আহত অন্তত ৫ হাতিয়ায় পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেপ্তার, এলাকায় উত্তেজনা লক্ষ্মীপুর–রামগতি সড়কে যাত্রীবাহী বাসে আগুন, অল্পের জন্য রক্ষা সবাই চট্টগ্রাম–রাঙ্গামাটি সড়কে কাভারভ্যান–সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১ দাউদকান্দিতে এক রাতে দুই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ যুবকের মৃত্যু

জলবায়ু সংকটে ইন্দাস চুক্তির অসঙ্গতি উন্মোচিত

  • Sarakhon Report
  • ১২:৩৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
  • 217

জয়শ্রী নন্দী

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম ইন্দাস নদী অববাহিকা বর্তমানে পূর্ব ও পশ্চিম উপনদীগুলোর ওপর ভিন্নতর প্রভাব দেখাচ্ছেএমনটাই বলছে সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা। এই পরিবর্তন ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার ঐতিহাসিক ইন্দাস পানি বণ্টন চুক্তিকে কার্যত অপ্রাসঙ্গিক করে তুলতে পারে।

ইন্দাস অববাহিকার বার্ষিক পানিপ্রবাহের ৫০-৬০ শতাংশ বরফ ও হিমবাহর বরফ গলা থেকে আসে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই অববাহিকার বিভিন্ন অংশে গলনের গতি ও প্রভাব ভিন্নরূপে দেখা যাচ্ছে।

সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো দেখাচ্ছেপশ্চিমাঞ্চলের উপনদী যেমন ইন্দাসকাবুলিলাম ও চেনাবএই নদীগুলোতে তুলনামূলক বেশি হিমবাহ থেকে আসা পানি মজুদ রয়েছে। অন্যদিকে পূর্বাঞ্চলের নদী যেমন বিয়াসরাভি ও শতদ্রুএগুলো অপেক্ষাকৃত কম হিমবাহ জলভাণ্ডার থেকে পানি পায়। সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হলোপূর্ব হিমালয়ে হিমবাহ গলনের হার পশ্চিম হিমালয়ের তুলনায় অনেক বেশি। এই পূর্ব-পশ্চিম বৈষম্য ১৯৬০ সালের ইন্দাস চুক্তির ভিত্তিভূমিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছেযেটি নদীগুলোর ঐতিহাসিক প্রবাহ অনুযায়ী পানিবণ্টন নির্ধারণ করেছিল।

ভারতের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স (IISc)-এর বর্ষীয়ান হিমবিজ্ঞানী ও গবেষক অনিল কুলকর্ণি বলেন, “খালি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেও পানি বণ্টনের প্রক্রিয়াগুলো পুনর্বিবেচনা করা জরুরিকারণ জলবায়ু পরিবর্তন প্রবাহে পরিবর্তন আনছে এবং নিচু অঞ্চলে বিপর্যয় বাড়াচ্ছে।

এই প্রসঙ্গ আরও গুরুত্ব পায় যখন ভারত সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে ২২ এপ্রিল ইন্দাস চুক্তি স্থগিত’ ঘোষণা করে। এই চুক্তি অনুযায়ীভারত পূর্বাঞ্চলের নদী (রাভিবিয়াস ও শতদ্রু) ব্যবহার করতে পারে একচেটিয়াভাবেআর পাকিস্তান পায় পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলো (ইন্দাসঝেলাম ও চেনাব)যা অববাহিকার ৮০ শতাংশ পানির উৎস।

২০২৩ সালের একটি গবেষণাপত্র—“Differential loss of glacier stored water in the Indus River basin”—বর্তমান সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই গবেষণা বিড়লা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সআইআইএসসি এবং ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ISRO) যৌথ প্রচেষ্টায় সম্পাদিত হয়। এতে হিমবাহজ পানির ভাণ্ডার ও ক্ষয় মডেলের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হয়। গবেষণাটি জানায়উপ-অববাহিকার বেশিরভাগ এলাকায় উল্লেখযোগ্য হারে হিমবাহ ভর হ্রাস পাচ্ছেযা ভবিষ্যতের পানি সরবরাহকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

তবে পাকিস্তানকে বরাদ্দকৃত উপর ইন্দাস অববাহিকা মূলত কারাকোরাম অঞ্চলে অবস্থিতযেটিকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় কারাকোরাম অ্যানোমালি” বলা হয়বিশ্বব্যাপী হিমবাহ পিছু হটার ধারা সত্ত্বেও এখানে অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে।

কুলকর্ণি বলেন, “সবচেয়ে সাম্প্রতিক প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ইন্দাস উপর দিকে উল্লেখযোগ্য হিমবাহ গলন শুরু হতে পারে ২০৫০-এর দশকে। কিন্তু অন্যান্য নদী ও জলাধারে তার আগেই অধিক ও দ্রুত হারে হিমবাহ ক্ষয় হবে।

তিনি যোগ করেন, “এখনকার জন্যইন্দাস ছাড়া অন্যান্য নদীগুলোর প্রবাহ ও পানি প্রাপ্যতা কিছুটা বাড়লেওশতাব্দীর মাঝামাঝি ব্যাপক হিমবাহ ক্ষয়ের ফলে তা আকস্মিকভাবে কমে যাবে।

২০১৯ সালে আইআইএসসি-এর দিরেচা সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ একটি বিজ্ঞান-ভিত্তিক নীতিপত্রে উল্লেখ করেছিলপূর্বাঞ্চলের নদীগুলো (ভারতের অংশ) ২০৩০ সালের আগেই সর্বোচ্চ প্রবাহে পৌঁছাবেযেখানে পশ্চিমাঞ্চলের (পাকিস্তানের অংশ) তা হবে ২০৭০ সালে।

কাঠমান্ডু-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক হিমালয় উন্নয়ন কেন্দ্র (ICIMOD)-এর গবেষণা অনুযায়ীহিমবাহ ভর পরিবর্তনের হারের মধ্যে রয়েছে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য: পশ্চিম হিমালয়ে প্রতি বছর -০.৩৬ মিটার জলসমমানকারাকোরামে -০.০৯ এবং পূর্ব হিমালয়ে -০.৫১।

এই পরিবর্তন ইন্দাস অববাহিকার ৩০ কোটিরও বেশি মানুষের জীবনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। বর্তমানে তাপমাত্রা বৃদ্ধিদীর্ঘ খরার সময়আকস্মিক বন্যাঅসময় বৃষ্টিপাত ও হিমবাহ হ্রদের বিস্ফোরণজনিত বন্যার (GLOF) ঘটনা বাড়ছে। অন্যদিকেজলবায়ু সংকট তীব্রতর হলে পানির চাহিদাও অনেক বাড়বে।

আইসিমড-এর রিমোট সেন্সিং বিশেষজ্ঞ শের মুহাম্মদ জানান, “১৯৫০-এর দশকের পর থেকে পাকিস্তানে প্রায় ১৫০টি এবং ভারতে ৬০টি গ্লোফ ঘটনার রেকর্ড পাওয়া গেছে। ভারতে এ ঘটনায় ৬০০০-এর বেশি প্রাণহানির হিসাব আছেযেখানে পাকিস্তানে এই সংখ্যা ১১।

২০২২ সালে পাকিস্তানে তীব্র গ্রীষ্মকালীন তাপপ্রবাহের পর ঘটে ভয়াবহ বন্যাযাতে প্রায় ১১০০ জন মারা যায় এবং ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ইন্দাস অববাহিকা চারটি দেশজুড়ে বিস্তৃত: ৫২% পাকিস্তানে৩৩% ভারতে৮% চীনে এবং ৬% আফগানিস্তানে। ১৯৯১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পশ্চিম হিমালয় ও কারাকোরাম অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা ০.৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছেআইআইএসসি-র পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী।

ভবিষ্যতের পূর্বাভাস বলছেবৈশ্বিক উষ্ণতা যদি ১.৫ ডিগ্রিতে সীমাবদ্ধও রাখা যায়তাহলেও হিন্দুকুশ হিমালয়ে উষ্ণতা তার চেয়ে বেশি হবে এবং মৌসুমি বৃষ্টিপাতে ৪২৫% পর্যন্ত বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার নদী-খাল-ড্যাম বিষয়ক নেটওয়ার্কের হিমাংশু ঠাক্কর বলেন, “পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলোর পানিপ্রবাহে হিমবাহ ও তুষারপাতের অবদান পূর্বাঞ্চলের তুলনায় বেশি। তবে পূর্বাঞ্চলে মৌসুমি বৃষ্টিও একটা বড় উৎস। ভূ-রাজনৈতিক বিরোধ ছাড়াওএসব নদী এই অঞ্চলের মানুষের জীবনের মূল উৎস।

প্রতিবেদনটি হিন্দুস্থান টাইমস থেকে অনূদিত)   

জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতের নতুন শ্রম আইন নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভে ট্রেড ইউনিয়নগুলো

জলবায়ু সংকটে ইন্দাস চুক্তির অসঙ্গতি উন্মোচিত

১২:৩৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

জয়শ্রী নন্দী

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম ইন্দাস নদী অববাহিকা বর্তমানে পূর্ব ও পশ্চিম উপনদীগুলোর ওপর ভিন্নতর প্রভাব দেখাচ্ছেএমনটাই বলছে সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা। এই পরিবর্তন ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার ঐতিহাসিক ইন্দাস পানি বণ্টন চুক্তিকে কার্যত অপ্রাসঙ্গিক করে তুলতে পারে।

ইন্দাস অববাহিকার বার্ষিক পানিপ্রবাহের ৫০-৬০ শতাংশ বরফ ও হিমবাহর বরফ গলা থেকে আসে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই অববাহিকার বিভিন্ন অংশে গলনের গতি ও প্রভাব ভিন্নরূপে দেখা যাচ্ছে।

সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো দেখাচ্ছেপশ্চিমাঞ্চলের উপনদী যেমন ইন্দাসকাবুলিলাম ও চেনাবএই নদীগুলোতে তুলনামূলক বেশি হিমবাহ থেকে আসা পানি মজুদ রয়েছে। অন্যদিকে পূর্বাঞ্চলের নদী যেমন বিয়াসরাভি ও শতদ্রুএগুলো অপেক্ষাকৃত কম হিমবাহ জলভাণ্ডার থেকে পানি পায়। সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হলোপূর্ব হিমালয়ে হিমবাহ গলনের হার পশ্চিম হিমালয়ের তুলনায় অনেক বেশি। এই পূর্ব-পশ্চিম বৈষম্য ১৯৬০ সালের ইন্দাস চুক্তির ভিত্তিভূমিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছেযেটি নদীগুলোর ঐতিহাসিক প্রবাহ অনুযায়ী পানিবণ্টন নির্ধারণ করেছিল।

ভারতের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স (IISc)-এর বর্ষীয়ান হিমবিজ্ঞানী ও গবেষক অনিল কুলকর্ণি বলেন, “খালি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেও পানি বণ্টনের প্রক্রিয়াগুলো পুনর্বিবেচনা করা জরুরিকারণ জলবায়ু পরিবর্তন প্রবাহে পরিবর্তন আনছে এবং নিচু অঞ্চলে বিপর্যয় বাড়াচ্ছে।

এই প্রসঙ্গ আরও গুরুত্ব পায় যখন ভারত সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে ২২ এপ্রিল ইন্দাস চুক্তি স্থগিত’ ঘোষণা করে। এই চুক্তি অনুযায়ীভারত পূর্বাঞ্চলের নদী (রাভিবিয়াস ও শতদ্রু) ব্যবহার করতে পারে একচেটিয়াভাবেআর পাকিস্তান পায় পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলো (ইন্দাসঝেলাম ও চেনাব)যা অববাহিকার ৮০ শতাংশ পানির উৎস।

২০২৩ সালের একটি গবেষণাপত্র—“Differential loss of glacier stored water in the Indus River basin”—বর্তমান সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই গবেষণা বিড়লা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সআইআইএসসি এবং ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ISRO) যৌথ প্রচেষ্টায় সম্পাদিত হয়। এতে হিমবাহজ পানির ভাণ্ডার ও ক্ষয় মডেলের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হয়। গবেষণাটি জানায়উপ-অববাহিকার বেশিরভাগ এলাকায় উল্লেখযোগ্য হারে হিমবাহ ভর হ্রাস পাচ্ছেযা ভবিষ্যতের পানি সরবরাহকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

তবে পাকিস্তানকে বরাদ্দকৃত উপর ইন্দাস অববাহিকা মূলত কারাকোরাম অঞ্চলে অবস্থিতযেটিকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় কারাকোরাম অ্যানোমালি” বলা হয়বিশ্বব্যাপী হিমবাহ পিছু হটার ধারা সত্ত্বেও এখানে অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে।

কুলকর্ণি বলেন, “সবচেয়ে সাম্প্রতিক প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ইন্দাস উপর দিকে উল্লেখযোগ্য হিমবাহ গলন শুরু হতে পারে ২০৫০-এর দশকে। কিন্তু অন্যান্য নদী ও জলাধারে তার আগেই অধিক ও দ্রুত হারে হিমবাহ ক্ষয় হবে।

তিনি যোগ করেন, “এখনকার জন্যইন্দাস ছাড়া অন্যান্য নদীগুলোর প্রবাহ ও পানি প্রাপ্যতা কিছুটা বাড়লেওশতাব্দীর মাঝামাঝি ব্যাপক হিমবাহ ক্ষয়ের ফলে তা আকস্মিকভাবে কমে যাবে।

২০১৯ সালে আইআইএসসি-এর দিরেচা সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ একটি বিজ্ঞান-ভিত্তিক নীতিপত্রে উল্লেখ করেছিলপূর্বাঞ্চলের নদীগুলো (ভারতের অংশ) ২০৩০ সালের আগেই সর্বোচ্চ প্রবাহে পৌঁছাবেযেখানে পশ্চিমাঞ্চলের (পাকিস্তানের অংশ) তা হবে ২০৭০ সালে।

কাঠমান্ডু-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক হিমালয় উন্নয়ন কেন্দ্র (ICIMOD)-এর গবেষণা অনুযায়ীহিমবাহ ভর পরিবর্তনের হারের মধ্যে রয়েছে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য: পশ্চিম হিমালয়ে প্রতি বছর -০.৩৬ মিটার জলসমমানকারাকোরামে -০.০৯ এবং পূর্ব হিমালয়ে -০.৫১।

এই পরিবর্তন ইন্দাস অববাহিকার ৩০ কোটিরও বেশি মানুষের জীবনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। বর্তমানে তাপমাত্রা বৃদ্ধিদীর্ঘ খরার সময়আকস্মিক বন্যাঅসময় বৃষ্টিপাত ও হিমবাহ হ্রদের বিস্ফোরণজনিত বন্যার (GLOF) ঘটনা বাড়ছে। অন্যদিকেজলবায়ু সংকট তীব্রতর হলে পানির চাহিদাও অনেক বাড়বে।

আইসিমড-এর রিমোট সেন্সিং বিশেষজ্ঞ শের মুহাম্মদ জানান, “১৯৫০-এর দশকের পর থেকে পাকিস্তানে প্রায় ১৫০টি এবং ভারতে ৬০টি গ্লোফ ঘটনার রেকর্ড পাওয়া গেছে। ভারতে এ ঘটনায় ৬০০০-এর বেশি প্রাণহানির হিসাব আছেযেখানে পাকিস্তানে এই সংখ্যা ১১।

২০২২ সালে পাকিস্তানে তীব্র গ্রীষ্মকালীন তাপপ্রবাহের পর ঘটে ভয়াবহ বন্যাযাতে প্রায় ১১০০ জন মারা যায় এবং ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ইন্দাস অববাহিকা চারটি দেশজুড়ে বিস্তৃত: ৫২% পাকিস্তানে৩৩% ভারতে৮% চীনে এবং ৬% আফগানিস্তানে। ১৯৯১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পশ্চিম হিমালয় ও কারাকোরাম অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা ০.৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছেআইআইএসসি-র পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী।

ভবিষ্যতের পূর্বাভাস বলছেবৈশ্বিক উষ্ণতা যদি ১.৫ ডিগ্রিতে সীমাবদ্ধও রাখা যায়তাহলেও হিন্দুকুশ হিমালয়ে উষ্ণতা তার চেয়ে বেশি হবে এবং মৌসুমি বৃষ্টিপাতে ৪২৫% পর্যন্ত বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার নদী-খাল-ড্যাম বিষয়ক নেটওয়ার্কের হিমাংশু ঠাক্কর বলেন, “পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলোর পানিপ্রবাহে হিমবাহ ও তুষারপাতের অবদান পূর্বাঞ্চলের তুলনায় বেশি। তবে পূর্বাঞ্চলে মৌসুমি বৃষ্টিও একটা বড় উৎস। ভূ-রাজনৈতিক বিরোধ ছাড়াওএসব নদী এই অঞ্চলের মানুষের জীবনের মূল উৎস।

প্রতিবেদনটি হিন্দুস্থান টাইমস থেকে অনূদিত)