০৯:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
১ লাখ ডলার এইচ-১বি ভিসা ফি: সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভারতীয়রা বাংলাদেশে স্লোগানের আলো ও অন্ধকার : ইতিহাস মনে রাখে যে ধ্বনি বাংলাদেশে প্রতিমা ভাঙে বাতাসে, মাজার ভাঙে অজ্ঞাতে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি সফরে রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা কেন সঙ্গী ড্রোন হামলায় সুদানের মসজিদে নিহত ৭৮ জন সাইবার হামলায় ইউরোপে এয়ার ইন্ডিয়ার চেক-ইন ব্যাহত অনুপাতভিত্তিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারে : মান্না’র সর্তকবানী রণক্ষেত্রে (পর্ব-১০৫) সাপ্তাহিক শেয়ারবাজার: সূচক ও লেনদেন কমেছে, বিনিয়োগকারীদের হতাশা বিজয়ে আস্থা থাকলে নির্বাচন ঠেকাতে চান কেন: জামায়াতকে সালাহউদ্দিনের প্রশ্ন

পঞ্চাশ বছরে ভিয়েতনামের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা

  • Sarakhon Report
  • ১২:৪৫:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
  • 121

সারাক্ষণ রিপোর্ট

যুদ্ধ-পরবর্তী ৫০ বছরে নজিরবিহীন অগ্রযাত্রা

ভিয়েতনাম ৩০ এপ্রিল ১৯৭৫‑এ যুদ্ধের অবসান ঘোষণার অর্ধশতক পূর্তি উদ্‌যাপন করেছে। বিশ্বের পাঁচটি অবশিষ্ট সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মধ্যে, চীনের পর ভিয়েতনামই দ্রুততম প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪‑এ ভিয়েতনামের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ১৯৯৪‑এর তুলনায় ৫১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আসিয়ান ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

ডই মই’ সংস্কার : উন্নয়নের চালিকাশক্তি

১৯৮৬‑এর কমিউনিস্ট পার্টি কংগ্রেসে ঘোষিত ডই মই—শব্দের অর্থ ‘নবায়ন’—নীতিমালা ভিয়েতনামের বাজারমুখী রূপান্তরের ভিত্তি গড়ে দেয়। তবুও ১৯৯০‑এর দশকের দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে এর সুফল স্পষ্ট হতে শুরু করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ভো ভান কিয়েত (১৯৯১‑১৯৯৭) এই সংস্কারের প্রধান স্থপতি হিসেবে পরিচিত।

বৈশ্বিক সংযোগ বাড়াতে ধারাবাহিক মাইলফলক

– ১৯৯৪: যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে, ফলে পশ্চিমা বাণিজ্য‑বিনিয়োগের দরজা খুলে যায়।
– ১৯৯৫: ভিয়েতনাম আসিয়ানের সদস্য হয়।
– ২০০৭: বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) যোগ দেয়।
– ২০০৯: হো চি মিন নগরের সাইগন হাই‑টেক পার্কে স্যামসাংয়ের বৃহৎ মোবাইল ফোন কারখানা চালু হয়।
বর্তমান পার্টি প্রধান তো লাম ৩০ এপ্রিলে হো চি মিন সিটির আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে বলেন, “১৯৭৫‑এর বিজয়ের স্পিরিট ও ডই মই‑এর চার দশকের সাফল্যকে পুঁজি করে আমরা সামনে এগোব।”

স্যামসাংয়ের বিনিয়োগ ও রপ্তানি সফলতা

স্যামসাং এখন পর্যন্ত ভিয়েতনামে ২৩.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে—দেশটির শীর্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগকারী। ২০২৪‑এ স্যামসাং ভিয়েতনামের আয় দাঁড়ায় ৬২.৫ বিলিয়ন ডলার, যার ৫৪.৪ বিলিয়নই রপ্তানি; এটি দেশের মোট রপ্তানির ১৩.৪ শতাংশ।

চায়না প্লাস ওয়ান’ কৌশলে নতুন সম্ভাবনা

চীনে শ্রমমূল্য বাড়ায় ২০১০‑এর দশক থেকে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল আংশিকভাবে ভিয়েতনামে সরতে থাকে—যা ‘চায়না প্লাস ওয়ান’ নামেই পরিচিত। এর বড় উদাহরণ অ্যাপল; ২০১৫‑এ যেখানে ভিয়েতনামে তাদের ১২ টি সরবরাহকারী ছিল, ২০২৪‑এ তা বেড়ে ৩৫‑এ দাঁড়ায়—দক্ষিণ‑পূর্ব এশিয়ায় সর্বাধিক। থাইল্যান্ড দ্বিতীয়, সরবরাহকারী ২৪টি।

ইলেকট্রনিক্স রপ্তানির শীর্ষে ভিয়েতনাম

স্যামসাং ও অ্যাপলমুখী শিল্পগুচ্ছ গড়ে ওঠায় ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ এখন ভিয়েতনামের প্রধান রপ্তানি পণ্য। শ্রমনির্ভর পোশাক‑খাতের পাশাপাশি প্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট শিল্পে দ্রুত অগ্রগতিই দেখাচ্ছে যে, ডই মই‑পরবর্তী খোলা বাজারনীতি ও বৈশ্বিক সংযুক্তি ভিয়েতনামকে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে রেখেছে।

১ লাখ ডলার এইচ-১বি ভিসা ফি: সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভারতীয়রা

পঞ্চাশ বছরে ভিয়েতনামের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা

১২:৪৫:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

যুদ্ধ-পরবর্তী ৫০ বছরে নজিরবিহীন অগ্রযাত্রা

ভিয়েতনাম ৩০ এপ্রিল ১৯৭৫‑এ যুদ্ধের অবসান ঘোষণার অর্ধশতক পূর্তি উদ্‌যাপন করেছে। বিশ্বের পাঁচটি অবশিষ্ট সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মধ্যে, চীনের পর ভিয়েতনামই দ্রুততম প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪‑এ ভিয়েতনামের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ১৯৯৪‑এর তুলনায় ৫১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আসিয়ান ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

ডই মই’ সংস্কার : উন্নয়নের চালিকাশক্তি

১৯৮৬‑এর কমিউনিস্ট পার্টি কংগ্রেসে ঘোষিত ডই মই—শব্দের অর্থ ‘নবায়ন’—নীতিমালা ভিয়েতনামের বাজারমুখী রূপান্তরের ভিত্তি গড়ে দেয়। তবুও ১৯৯০‑এর দশকের দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে এর সুফল স্পষ্ট হতে শুরু করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ভো ভান কিয়েত (১৯৯১‑১৯৯৭) এই সংস্কারের প্রধান স্থপতি হিসেবে পরিচিত।

বৈশ্বিক সংযোগ বাড়াতে ধারাবাহিক মাইলফলক

– ১৯৯৪: যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে, ফলে পশ্চিমা বাণিজ্য‑বিনিয়োগের দরজা খুলে যায়।
– ১৯৯৫: ভিয়েতনাম আসিয়ানের সদস্য হয়।
– ২০০৭: বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) যোগ দেয়।
– ২০০৯: হো চি মিন নগরের সাইগন হাই‑টেক পার্কে স্যামসাংয়ের বৃহৎ মোবাইল ফোন কারখানা চালু হয়।
বর্তমান পার্টি প্রধান তো লাম ৩০ এপ্রিলে হো চি মিন সিটির আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে বলেন, “১৯৭৫‑এর বিজয়ের স্পিরিট ও ডই মই‑এর চার দশকের সাফল্যকে পুঁজি করে আমরা সামনে এগোব।”

স্যামসাংয়ের বিনিয়োগ ও রপ্তানি সফলতা

স্যামসাং এখন পর্যন্ত ভিয়েতনামে ২৩.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে—দেশটির শীর্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগকারী। ২০২৪‑এ স্যামসাং ভিয়েতনামের আয় দাঁড়ায় ৬২.৫ বিলিয়ন ডলার, যার ৫৪.৪ বিলিয়নই রপ্তানি; এটি দেশের মোট রপ্তানির ১৩.৪ শতাংশ।

চায়না প্লাস ওয়ান’ কৌশলে নতুন সম্ভাবনা

চীনে শ্রমমূল্য বাড়ায় ২০১০‑এর দশক থেকে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল আংশিকভাবে ভিয়েতনামে সরতে থাকে—যা ‘চায়না প্লাস ওয়ান’ নামেই পরিচিত। এর বড় উদাহরণ অ্যাপল; ২০১৫‑এ যেখানে ভিয়েতনামে তাদের ১২ টি সরবরাহকারী ছিল, ২০২৪‑এ তা বেড়ে ৩৫‑এ দাঁড়ায়—দক্ষিণ‑পূর্ব এশিয়ায় সর্বাধিক। থাইল্যান্ড দ্বিতীয়, সরবরাহকারী ২৪টি।

ইলেকট্রনিক্স রপ্তানির শীর্ষে ভিয়েতনাম

স্যামসাং ও অ্যাপলমুখী শিল্পগুচ্ছ গড়ে ওঠায় ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ এখন ভিয়েতনামের প্রধান রপ্তানি পণ্য। শ্রমনির্ভর পোশাক‑খাতের পাশাপাশি প্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট শিল্পে দ্রুত অগ্রগতিই দেখাচ্ছে যে, ডই মই‑পরবর্তী খোলা বাজারনীতি ও বৈশ্বিক সংযুক্তি ভিয়েতনামকে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে রেখেছে।