সারাক্ষণ রিপোর্ট
ভূমি কর নিয়ে সরকারের অবস্থান
ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ এখন আর বিকল্প নয়, এটি প্রতিটি জমির মালিকের বাধ্যতামূলক দায়িত্ব—এমনটাই জানিয়েছেন ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। তিনি বলেন, ভূমি কর কেবল একটি আর্থিক দায় নয়, এটি রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকের দায়িত্ব ও দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ। এই কর ভূমি ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সুশাসনের জন্য অপরিহার্য অবদান রাখে।
ভূমি কর পরিশোধে ডিজিটাল সুবিধা
রাজধানীর ভূমি ভবনে আয়োজিত ‘সাংগঠনিক কর আদায় সম্পর্কিত বিষয়ক কর্মশালা’-তে এসব কথা বলেন ভূমি উপদেষ্টা। কর্মশালায় ১৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) এ জেড এম সালাউদ্দিন।
আলী ইমাম মজুমদার আরও বলেন, এখন আর লাইনে দাঁড়িয়ে জমি কর পরিশোধ করতে হয় না। অনলাইনে ঘরে বসেই ভূমি কর পরিশোধ করা সম্ভব। এটি সময় ও জটিলতা কমিয়ে এনেছে। এছাড়া ভূমি কর প্রদান না করা অন্য করদাতার প্রতি অবিচার বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ভূমি করের সংজ্ঞা ও প্রযোজ্যতা
ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা হলো সরকার কর্তৃক নির্ধারিত একটি বাধ্যতামূলক কর, যা ২৫ বিঘার বেশি কৃষিজমি বা তার চেয়ে কম পরিমাণের অকৃষি জমির (যেমন বাসাবাড়ি বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত জমি) জন্য প্রযোজ্য। প্রতি অর্থবছরে জমির মালিকদের সরকারকে নির্ধারিত হারে এই কর প্রদান করতে হয়। এটি সরকারের রাজস্ব খাতের গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎস।
সরকারি নথি অনুযায়ী, নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করলে জমির মালিকের নামে খাজনার রশিদ বা দাখিলা প্রদান করা হয়। এটি জমির মালিকানার একটি প্রমাণ এবং ভবিষ্যতে আইনি বা প্রশাসনিক প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের কর আদায়ের পরিসংখ্যান
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর বাবদ মোট আদায় হয়েছে ৮২৯.৬২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বকেয়া রয়েছে ৬৭৯.৭৬ কোটি টাকা এবং নতুন আদায় ১৪৯.৮৬ কোটি টাকা। বিগত বছরের তুলনায় এবার ৩৪.৫৮ কোটি টাকা বেশি আদায় হয়েছে, যা ৩২% বৃদ্ধি নির্দেশ করে। বকেয়া আদায়ের হার দাঁড়িয়েছে ১৩%। সবচেয়ে বেশি বকেয়া রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন জমির ক্ষেত্রে।
সিনিয়র কর্মকর্তাদের উপস্থিতি
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) দেওয়ান সাইদুর রহমানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।