০২:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

জলাতঙ্ক – এক মরণব্যাধি

জলাতঙ্ক রোগের নাম শোনেনি এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে, কিন্তু এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে খুব কম মানুষই জানে। 
জলাতঙ্ক একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা সাধারণত rabies ভাইরাস দ্বারা স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে সংক্রমিত হয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা পানি দেখলে বা পানির কথা চিন্তা করলেও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তাই একে জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া বলা হয়।
আমাদের দেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ জলাতঙ্ক কুকুরের কামড় থেকে হয়ে থাকে। এছাড়া বিড়াল, বাদুড়, বেজি, শিয়াল প্রভৃতি প্রাণী থেকেও এ রোগ ছড়াতে পারে। সাধারণত আক্রান্ত প্রাণীর মুখের লালায় rabies ভাইরাস থাকে।
আক্রান্ত প্রাণী যখন কোনো মানুষ বা গবাদিপশুকে কামড়ে দেয়, তখন লালার মাধ্যমে ভাইরাসটি সুস্থ দেহে প্রবেশ করে। ভাইরাসটি প্রথমে কামড়ের স্থানে পেশিকোষে কিছুদিন অবস্থান করে এবং পরে স্নায়ুর মাধ্যমে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। মস্তিষ্কে পৌঁছালে এটি ভয়াবহ প্রদাহ সৃষ্টি করে। তখন রোগীর মধ্যে মানসিক পরিবর্তন, ভয়, বিভ্রান্তি, জ্বর, খিঁচুনি, পানি দেখলে আতংকিত হয়ে পড়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। এই রোগের মৃত্যুহার প্রায় শতভাগ; একবার এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলে মৃত্যু অনিবার্য।
তাই সন্দেহজনক কোনো প্রাণীর কামড় বা আঁচড় লাগলে আক্রান্ত স্থানটি সঙ্গে সঙ্গে প্রবাহিত পানি দিয়ে ১৫–২০ মিনিট ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর ক্লোরহেক্সিডিন বা পোভিডোন আয়োডিন দিয়ে ক্ষতটি পরিষ্কার করা উচিত। এতে প্রায় ৭০–৮০% জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়।
এরপর যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী টিকা নিতে হবে। সাধারণ rabies ভ্যাকসিনের ৫টি ডোজ দিতে হয়—প্রথম দিন, এরপর ৩, ৭, ১৪ ও ২৮তম দিনে। অনেক সময় rabies ভ্যাকসিনের পাশাপাশি হিউম্যান র‌্যাবিস ইমিউনোগ্লোবুলিনও দিতে হতে পারে।
এছাড়াও, এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে পোষা কুকুর ও বিড়ালকে প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভ্যাকসিন দেওয়া যেতে পারে। সমাজে জলাতঙ্ক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। প্রতি বছর ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী ‘বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস’ পালিত হয়। এ দিনটিকে উপলক্ষ করে সমাজে সচেতনতামূলক আলোচনা ও প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে এই রোগ সম্পর্কে জানানো যেতে পারে।
লেখা: ওসমান গণি ভুঁইয়া 
এমবিবিএস ফাইনাল ইয়ার, 
ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হসপিটাল।

জলাতঙ্ক – এক মরণব্যাধি

০৩:৫০:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
জলাতঙ্ক রোগের নাম শোনেনি এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে, কিন্তু এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে খুব কম মানুষই জানে। 
জলাতঙ্ক একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা সাধারণত rabies ভাইরাস দ্বারা স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে সংক্রমিত হয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা পানি দেখলে বা পানির কথা চিন্তা করলেও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তাই একে জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া বলা হয়।
আমাদের দেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ জলাতঙ্ক কুকুরের কামড় থেকে হয়ে থাকে। এছাড়া বিড়াল, বাদুড়, বেজি, শিয়াল প্রভৃতি প্রাণী থেকেও এ রোগ ছড়াতে পারে। সাধারণত আক্রান্ত প্রাণীর মুখের লালায় rabies ভাইরাস থাকে।
আক্রান্ত প্রাণী যখন কোনো মানুষ বা গবাদিপশুকে কামড়ে দেয়, তখন লালার মাধ্যমে ভাইরাসটি সুস্থ দেহে প্রবেশ করে। ভাইরাসটি প্রথমে কামড়ের স্থানে পেশিকোষে কিছুদিন অবস্থান করে এবং পরে স্নায়ুর মাধ্যমে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। মস্তিষ্কে পৌঁছালে এটি ভয়াবহ প্রদাহ সৃষ্টি করে। তখন রোগীর মধ্যে মানসিক পরিবর্তন, ভয়, বিভ্রান্তি, জ্বর, খিঁচুনি, পানি দেখলে আতংকিত হয়ে পড়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। এই রোগের মৃত্যুহার প্রায় শতভাগ; একবার এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলে মৃত্যু অনিবার্য।
তাই সন্দেহজনক কোনো প্রাণীর কামড় বা আঁচড় লাগলে আক্রান্ত স্থানটি সঙ্গে সঙ্গে প্রবাহিত পানি দিয়ে ১৫–২০ মিনিট ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর ক্লোরহেক্সিডিন বা পোভিডোন আয়োডিন দিয়ে ক্ষতটি পরিষ্কার করা উচিত। এতে প্রায় ৭০–৮০% জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়।
এরপর যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী টিকা নিতে হবে। সাধারণ rabies ভ্যাকসিনের ৫টি ডোজ দিতে হয়—প্রথম দিন, এরপর ৩, ৭, ১৪ ও ২৮তম দিনে। অনেক সময় rabies ভ্যাকসিনের পাশাপাশি হিউম্যান র‌্যাবিস ইমিউনোগ্লোবুলিনও দিতে হতে পারে।
এছাড়াও, এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে পোষা কুকুর ও বিড়ালকে প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভ্যাকসিন দেওয়া যেতে পারে। সমাজে জলাতঙ্ক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। প্রতি বছর ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী ‘বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস’ পালিত হয়। এ দিনটিকে উপলক্ষ করে সমাজে সচেতনতামূলক আলোচনা ও প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে এই রোগ সম্পর্কে জানানো যেতে পারে।
লেখা: ওসমান গণি ভুঁইয়া 
এমবিবিএস ফাইনাল ইয়ার, 
ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হসপিটাল।