০২:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩০৫)

উক্ত ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে হেষ্টিংস নিজে ৩ লক্ষ টাকা পাইয়াছিলেন বলিয়া প্রকাশ করেন; অবশিষ্ট এক লক্ষ গঙ্গাগোবিন্দ তাঁহাকে প্রবঞ্চনা করিয়াছেন বলিয়া,
হেষ্টিংস গঙ্গাগোবিন্দের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং তাঁহার উপর বিশ্বাস করিতে অনিচ্ছুক হন। কিন্তু এ সমস্তই রহস্যময়। হেষ্টিংস কোন কালে দেওয়ানজীর প্রতি আন্তরিক অসন্তুষ্ট হন নাই।
যেখানে উৎকোচাদি সম্বন্ধে বিশেষ পীড়াপীড়ি উপস্থিত হইত, সেই স্থানে তিনি তাঁহার প্রতি কৃত্রিম ক্রোধ প্রকাশ করিতেন। এ ক্ষেত্রেও তাহাই ঘটিয়াছিল। হেষ্টিংস বলেন যে, তিনি যে ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে ৩ লক্ষ টাকা প্রাপ্ত হন; তাহা কোম্পানীর ব্যবহারের জন্যই প্রদান করিয়াছিলেন; তিনি তাহা হইতে এক কপদকও লন নাই; কিন্তু বিশেষ অনুসন্ধানে প্রকাশ পায় যে, দিনাজপুরের ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে কেবল ২ লক্ষ টাকা কোম্পানীর কার্য্যে প্রদত্ত হয়।
অবশিষ্ট ২ লক্ষ টাকার কথা হেষ্টিংস সাহেব উত্তমরূপে প্রমাণ দিতে পারেন নাই; কেবল গঙ্গা-” গোবিন্দের নিকট হইতে এক লক্ষ প্রাপ্ত হন নাই বলিয়া, তাঁহার উপর ক্রোধ প্রকাশ করিয়াছিলেন। ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে অবশিষ্ট ২ লক্ষ টাকার কি হইল, তাহা বোধ হয়, নূতন করিয়া বলিয়া দিতে হইবে না। হেষ্টিংস ও তাঁহার প্রিয় দেওয়ানজা গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ উভয়ে যে আত্মসাৎ করিয়াছিলেন, ইহা বোধ হয়, বুঝিতে কাহারও বিলম্ব হইবে না। কোম্পানীর সৌভাগ্য বলিতে হইবে, যে, সেই ৪ লক্ষ টাকাই তাঁহাদের বিশ্বস্ত কর্মচারিগণের উপহারে প্রযুক্ত হয় নাই।
দিনাজপুরের পর বিহারের বন্দোবস্তের সহিত গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ বিজড়িত ছিলেন বলিয়া অনেকে অনুমান করিয়া থাকেন। নূতন বন্দোবস্তের সময় খেলারাম ও কল্যাণ সিংহকে বিহারের ইজারা প্রদান। করা হয় এবং কল্যাণ সিংহকে সেখানকার দেওয়ানের পদে নিযুক্ত করাও হইয়াছিল। এই সমস্ত বন্দোবস্তের ভার গঙ্গাগোবিন্দ সিংহের হস্তে পতিত হওয়ায়, তিনি নিজের ও প্রভু হেষ্টিংসের সুবিধা করিতে ত্রুটি ‘করেন নাই। দিনাজপুরের রাধানাথের ন্যায় দেওয়ানজী খেলারাম ও কল্যাণ সিংহকে চাপিয়া ধরিলেন এবং তাহাদের নিকট হইতে ৪ লক্ষ টাকা আদায় করিয়া লইলেন।

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩০৫)

১১:০০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
উক্ত ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে হেষ্টিংস নিজে ৩ লক্ষ টাকা পাইয়াছিলেন বলিয়া প্রকাশ করেন; অবশিষ্ট এক লক্ষ গঙ্গাগোবিন্দ তাঁহাকে প্রবঞ্চনা করিয়াছেন বলিয়া,
হেষ্টিংস গঙ্গাগোবিন্দের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং তাঁহার উপর বিশ্বাস করিতে অনিচ্ছুক হন। কিন্তু এ সমস্তই রহস্যময়। হেষ্টিংস কোন কালে দেওয়ানজীর প্রতি আন্তরিক অসন্তুষ্ট হন নাই।
যেখানে উৎকোচাদি সম্বন্ধে বিশেষ পীড়াপীড়ি উপস্থিত হইত, সেই স্থানে তিনি তাঁহার প্রতি কৃত্রিম ক্রোধ প্রকাশ করিতেন। এ ক্ষেত্রেও তাহাই ঘটিয়াছিল। হেষ্টিংস বলেন যে, তিনি যে ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে ৩ লক্ষ টাকা প্রাপ্ত হন; তাহা কোম্পানীর ব্যবহারের জন্যই প্রদান করিয়াছিলেন; তিনি তাহা হইতে এক কপদকও লন নাই; কিন্তু বিশেষ অনুসন্ধানে প্রকাশ পায় যে, দিনাজপুরের ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে কেবল ২ লক্ষ টাকা কোম্পানীর কার্য্যে প্রদত্ত হয়।
অবশিষ্ট ২ লক্ষ টাকার কথা হেষ্টিংস সাহেব উত্তমরূপে প্রমাণ দিতে পারেন নাই; কেবল গঙ্গা-” গোবিন্দের নিকট হইতে এক লক্ষ প্রাপ্ত হন নাই বলিয়া, তাঁহার উপর ক্রোধ প্রকাশ করিয়াছিলেন। ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে অবশিষ্ট ২ লক্ষ টাকার কি হইল, তাহা বোধ হয়, নূতন করিয়া বলিয়া দিতে হইবে না। হেষ্টিংস ও তাঁহার প্রিয় দেওয়ানজা গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ উভয়ে যে আত্মসাৎ করিয়াছিলেন, ইহা বোধ হয়, বুঝিতে কাহারও বিলম্ব হইবে না। কোম্পানীর সৌভাগ্য বলিতে হইবে, যে, সেই ৪ লক্ষ টাকাই তাঁহাদের বিশ্বস্ত কর্মচারিগণের উপহারে প্রযুক্ত হয় নাই।
দিনাজপুরের পর বিহারের বন্দোবস্তের সহিত গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ বিজড়িত ছিলেন বলিয়া অনেকে অনুমান করিয়া থাকেন। নূতন বন্দোবস্তের সময় খেলারাম ও কল্যাণ সিংহকে বিহারের ইজারা প্রদান। করা হয় এবং কল্যাণ সিংহকে সেখানকার দেওয়ানের পদে নিযুক্ত করাও হইয়াছিল। এই সমস্ত বন্দোবস্তের ভার গঙ্গাগোবিন্দ সিংহের হস্তে পতিত হওয়ায়, তিনি নিজের ও প্রভু হেষ্টিংসের সুবিধা করিতে ত্রুটি ‘করেন নাই। দিনাজপুরের রাধানাথের ন্যায় দেওয়ানজী খেলারাম ও কল্যাণ সিংহকে চাপিয়া ধরিলেন এবং তাহাদের নিকট হইতে ৪ লক্ষ টাকা আদায় করিয়া লইলেন।