অবশেষে প্রাদেশিক সমিতি ভঙ্গের পর কলিকাতায় একটি সাধারণ রাজস্ব-সমিতি স্থাপিত হয়। হেষ্টিংস গঙ্গাগোবিন্দুকে তাহার দেওয়ান এবং তৎপুত্র প্রাণকৃষ্ণকে নায়েব দেওয়ান নিযুক্ত করেন। পিতাপুত্রে রাজস্ব বিভাগের ভার হস্তে লইয়া স্ব স্ব ক্ষমতা প্রকাশ করিতে লাগিলেন। গঙ্গাগোবিন্দ সিংহকে প্রধান দেওয়ান নিযুক্ত করিবার পর রায়রায়ানের ক্ষমতা হ্রাস করা হয়।
এইরূপে গঙ্গাগোবিন্দকে সমস্ত ক্ষমতা দেওয়ায়, ডিরেক্টরগণ সন্তুষ্ট হন নাই। তাঁহারা ১৭৭৪ সালের ৪ঠা জুলাইএর পত্রে গবর্ণর জেনা রেলকে এইরূপ লিখিয়া পাঠান যে, কোন দেশীয় মধ্যস্থের দ্বারা রাজস্ব-বিষয়ের কথাবার্তার চালনা করিতে হইলে, রায়রায়ানই তাহার উপযুক্ত পাত্র; গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ নহে। কারণ, তাহার পদচ্যুতি তাহাকে কোম্পানীর কার্য্যে অনুপযুক্ত করিয়া তুলিয়াছে।
কিন্তু হেষ্টিংস সাহেব কাহারও কথা শুনিবার পাত্র নহেন। তিনি গঙ্গাগোবিন্দকে সাধারণ রাজস্ব-সমিতির দেওয়ান নিযুক্ত করিয়া, যে সমস্ত ভার প্রদান করিলেন, তাহাতে রায়রায়ানের আর কোনই ক্ষমতা থাকিল না। সমিতির -দেওয়ানের প্রতি এইরূপ ভাবে ক্ষমতা প্রদত্ত হয় যে, সমিতি হইতে যে সমস্ত কাগজপত্র স্বাক্ষরিত হইবে, দেওয়ান তাহাতে আবার নিজ নাম স্বাক্ষর করিবেন।
দেওয়ান সমিতির প্রতেক অধিবেশনে উপস্থিত থাকিয়া, সভ্যদিগের সহিত উপবেশন করিয়া, নিজের সমস্ত কার্য্য সম্পন্ন করিবেন। তিনি সভাপতির নিকট গমন করিয়া, সমস্ত কার্য্যের আদেশ গ্রহণ করিবেন এবং তাহার কতদূর সম্পন্ন হইল, তাঁহাকে অবগত করাই-বেন। সমিতির দেওয়ান যে সমস্ত কার্য্য করিবেন, রায়রায়ান তাহাতে হস্তক্ষেপ করিতে পারিবেন না; তিনি হস্তক্ষেপ করিলে, অনেক সময়ে বিষম বিশৃঙ্খলা উপস্থিত হইবে। রায়রায়ান কর্তৃক এক্ষণে প্রাদেশিক দেওয়ানদিগের তত্ত্বাবধানের প্রয়োজন নাই। সমিতি প্রাদেশিক-দেওয়ান ও নায়েবদিগের প্রতি আদেশ প্রদান করিবেন।