তাহাতে দেওয়ানেরও স্বাক্ষর থাকিবে। কালেক্টরগণ দেওয়ানের নিকট হিসাব পত্র পাঠাইবেন। হাজরী মহাল প্রভৃতির রাজস্বের বিষয় সমিতির আদেশমতে সভা-পতি ও দেওয়ান তত্ত্বাবধান করিবেন। এইরূপে দেওয়ানের উপর রাজস্ব বিষয়ের সমস্ত ভার দিয়া, রায়রায়ানের ক্ষমতা হ্রাস করিয়া, বহুদিনের প্রচলিত একটি পদ প্রায় রহিত করা হইল। প্রকৃত প্রস্তাবে সমিতির দেওয়ানই রাজস্ববিভাগের সর্ব্বেসর্ব্বা হইয়া দাঁড়াইলেন।
পূর্ব্বে উল্লিখিত হইয়াছে যে, মহম্মদ রেজা খাঁর পদচ্যুতির পর মুর্শিদা-বাদ হইতে কলিকাতায় রাজস্ববিভাগ উঠিয়া আসিলে, কিছু দিনের জন্য কাননগো বিভাগটি উঠাইয়া দেওয়া হয়। কিন্তু যখন রাজস্ববিভাগে গোলযোগ উপস্থিত হয়, তখন কাননগো বিভাগের পুনঃপ্রবর্তন করিতে হইয়াছিল। লক্ষ্মীনারায়ণ ও মহেন্দ্রনারায়ণ দুই জন প্রধান কাননগোর অধীন গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ ও শ্রীনারায়ণ মুস্তফী নায়েব কাননগো নিযুক্ত হইয়াছিলেন। গঙ্গাগোবিন্দ লক্ষ্মীনারায়ণের সহকারী নিযুক্ত হন।
নারের কাননগো কাননগোবিভাগের সমস্ত প্রধান প্রধান কাৰ্য্য করি-তেন। মুসলমান রাজত্বকালে নায়েব কাননগো একটি প্রধান পদরূপে স্থাপিত হয়। প্রধান কাননগোর নিকট রাজস্ব বিষয়ের যে সমস্ত ভার ও কাগজপত্র থাকিত, নায়েব কাননগোকে তাহার নিম্নলিখিত কাৰ্য্যগুলি সম্পন্ন করিতে হইত। সরকারকর্তৃক যে সমস্ত কর নির্ধা-রিত হইত, তাহাদের সমস্ত রসিদাদি নায়েব কাননগোর নিকট থাকিত; এমন কি, সামান্য ভূমিখণ্ডের খাজানার রসিদও রাখিতে তিনি বাধ্য হই-তেন।
সমস্ত জমির সীমাসম্বন্ধীয় কাগজপত্র রাখিবার ভার তাঁহাদের হস্তে ব্যস্ত ছিল। যদি কোন জমির সীমা লইয়া বিবাদ উপস্থিত হইত, তবে, নাহেব কাননগো কাগজ দেখিয়া কাহার জমি তাহা বলিয়া দিতেন। এতদ্ব্যতীত প্রত্যেক স্থানের সদর কাছারী হইতে সামান্স ইজারদারের রাজস্বের হিসাবপত্রও তাঁহাদিগকে রাখিতে হইত, এবং অন্যান্য অনেক হিসাবপত্রও তাঁহাদের নিকট থাকিত।। সুতরাং কাননগোবিভাগের প্রধান প্রধান সমস্ত কাৰ্য্যই নায়েব কাননগো দ্বারা নির্ব্বাহ হইত।
শ্রী নিখিলনাথ রায় 



















