০৬:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিয়েছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগন্নাথ মন্দির আর প্রসাদ বিতরণ নিয়ে কেন রাজনৈতিক বিতর্ক পশ্চিমবঙ্গে? মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ও গঙ্গা জলচুক্তি নবায়ন নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন: বাংলাদেশের বড় একটি ভুল, প্রতিশোধ বনাম সংস্কার সাকিব আল হাসান: বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এক অমর কিংবদন্তি বাংলা নাটকের সুপারস্টার অপূর্বের জন্মদিন আজ শিবসা নদী: শতবর্ষী এক প্রাণপ্রবাহ ও তার সুন্দরবনের প্রভাব ইরান যুদ্ধ ও ‘ট্রাম্প নীতি’ চীনের বহুমুখী বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গিকে ঘোলাটে করে দিচ্ছে আসিয়ান এখন আর কেবল বৈশ্বিক পুঁজির নীরব গ্রাহক নয় প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-১৯)

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩০১)

এইরূপে নিজে রাজস্বসমিতির দেওয়ান ও নায়েব কাননগো এবং পুত্র প্রাণকৃষ্ণকে নায়েব দেওয়ানের পদে নিযুক্ত করিয়া, গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ সিংহপরাক্রমে রাজস্ববিভাগের বন্দোবস্ত আরম্ভ করিলেন। বর্দ্ধমান, নদীয়া, রাজশাহী, দিনাজপুর প্রভৃতি স্থানের জমিদারেরা তটস্থ হইয়া, সর্ব্বদা দেওয়ানজীর মনস্তষ্টির জন্য প্রয়াস পাইতে লাগিলেন। সকলে অবগত হইলেন যে, গবর্ণর জেনারেল দেওয়ানজীর হাতধরা এবং সমিতির সভ্যগণ তাঁহার হস্তে ক্রীড়াপুত্তল।
এ ক্ষেত্রে দেওয়ানজীকে সন্তুষ্ট করা ব্যতীত আর দ্বিতীয় উপায় নাই। তিনি ইচ্ছা করিলে, একের জমিদারী অন্যকে প্রদান করিতে পারেন, কাহাকেও একেবারে উচ্ছেদ করিতেও পারেন, কাহারও দ্বিগুণ মাত্রায় কর বৃদ্ধি করিতে পারেন। গবর্ণর জেনারেলকে তিনি যে পরামর্শ দিতেন, তিনি সেই পরামর্শানুসারে কাৰ্য্য করিতেন। কাজেই জমিদার, তালুকদার, ইজারদারগণ, ভীত ও চকিত অবস্থায় দেওয়ানজীর সন্তোষের জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। ভেট, উপহার, ডালিতে প্রতিদিন দেওয়ানজীর বাটী পরিপূর্ণ হইতে লাগিল।
রাশি রাশি নজরে দেওয়ানজীর নজর বৃদ্ধি হইতে লাগিল। অবশেষে নিজের ও গবর্ণর জেনারেলের আকাঙ্ক্ষা পরিতৃপ্তির জন্য জমিদার ও তালুকদারদিগের উপর অত্যাচার আরম্ভহইল। সামান্য উৎকোচ দিয়া কাহারও নিস্তার ছিল না। যেরূপে হউক ভূস্বামিগণ তাঁহাদের আশা পূর্ণ করিতে সচেষ্ট হইলেন। ক্রমে নিরীহ প্রজারা অত্যাচারে প্রপীড়িত হইয়া উঠিল। কিন্তু কে তাহাদের কথায় কর্ণপাত করে? গবর্ণর জেনারেল ও দেওয়ানজী আপনাদের ক্ষতির আশঙ্কায় প্রজাদিগের কাতরোক্তিতে কর্ণপাত করিলেন না।
তাহাদের কাতর কণ্ঠধ্বনি বিরাট্ আকাশে বিলীন হইতে লাগিল। জমিদারগণের নায়েব, গোমস্তা, উকীল, মুৎসুদ্দীতে দেওয়ানজীর বাসভবন প্রতিনিয়ত সমারোহময় হইতে লাগিল। আজ’ বঙ্গের দিপাল জমিদারগণ ভয়ে গঙ্গাগোবিন্দের শরণাপন্ন হইবার জন্য বাস্ত হইয়া উঠিলেন। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের পুত্রগণের মধ্যে বিষয়ের বিভাগ লইয়া বিবাদ উপস্থিত হওয়ায়, তাঁহার পুত্র শম্ভুচন্দ্র গঙ্গাগোবিন্দের শরণাপন্ন হন। শুনা যায় রাজা বিপদ দেখিয়া দেওয়ানজীকে লিখিয়া পাঠাইলেন, “দরবার অসাধ্য, পুত্র অবাধ্য, ভরসা কেবল গঙ্গাগোবিন্দ” কিন্তু গঙ্গাগোবিন্দ তাহাতেও কর্ণপাত করেন নাই।

ইরান ইউরেনিয়াম সরিয়ে নিয়েছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩০১)

১১:০০:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
এইরূপে নিজে রাজস্বসমিতির দেওয়ান ও নায়েব কাননগো এবং পুত্র প্রাণকৃষ্ণকে নায়েব দেওয়ানের পদে নিযুক্ত করিয়া, গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ সিংহপরাক্রমে রাজস্ববিভাগের বন্দোবস্ত আরম্ভ করিলেন। বর্দ্ধমান, নদীয়া, রাজশাহী, দিনাজপুর প্রভৃতি স্থানের জমিদারেরা তটস্থ হইয়া, সর্ব্বদা দেওয়ানজীর মনস্তষ্টির জন্য প্রয়াস পাইতে লাগিলেন। সকলে অবগত হইলেন যে, গবর্ণর জেনারেল দেওয়ানজীর হাতধরা এবং সমিতির সভ্যগণ তাঁহার হস্তে ক্রীড়াপুত্তল।
এ ক্ষেত্রে দেওয়ানজীকে সন্তুষ্ট করা ব্যতীত আর দ্বিতীয় উপায় নাই। তিনি ইচ্ছা করিলে, একের জমিদারী অন্যকে প্রদান করিতে পারেন, কাহাকেও একেবারে উচ্ছেদ করিতেও পারেন, কাহারও দ্বিগুণ মাত্রায় কর বৃদ্ধি করিতে পারেন। গবর্ণর জেনারেলকে তিনি যে পরামর্শ দিতেন, তিনি সেই পরামর্শানুসারে কাৰ্য্য করিতেন। কাজেই জমিদার, তালুকদার, ইজারদারগণ, ভীত ও চকিত অবস্থায় দেওয়ানজীর সন্তোষের জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। ভেট, উপহার, ডালিতে প্রতিদিন দেওয়ানজীর বাটী পরিপূর্ণ হইতে লাগিল।
রাশি রাশি নজরে দেওয়ানজীর নজর বৃদ্ধি হইতে লাগিল। অবশেষে নিজের ও গবর্ণর জেনারেলের আকাঙ্ক্ষা পরিতৃপ্তির জন্য জমিদার ও তালুকদারদিগের উপর অত্যাচার আরম্ভহইল। সামান্য উৎকোচ দিয়া কাহারও নিস্তার ছিল না। যেরূপে হউক ভূস্বামিগণ তাঁহাদের আশা পূর্ণ করিতে সচেষ্ট হইলেন। ক্রমে নিরীহ প্রজারা অত্যাচারে প্রপীড়িত হইয়া উঠিল। কিন্তু কে তাহাদের কথায় কর্ণপাত করে? গবর্ণর জেনারেল ও দেওয়ানজী আপনাদের ক্ষতির আশঙ্কায় প্রজাদিগের কাতরোক্তিতে কর্ণপাত করিলেন না।
তাহাদের কাতর কণ্ঠধ্বনি বিরাট্ আকাশে বিলীন হইতে লাগিল। জমিদারগণের নায়েব, গোমস্তা, উকীল, মুৎসুদ্দীতে দেওয়ানজীর বাসভবন প্রতিনিয়ত সমারোহময় হইতে লাগিল। আজ’ বঙ্গের দিপাল জমিদারগণ ভয়ে গঙ্গাগোবিন্দের শরণাপন্ন হইবার জন্য বাস্ত হইয়া উঠিলেন। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের পুত্রগণের মধ্যে বিষয়ের বিভাগ লইয়া বিবাদ উপস্থিত হওয়ায়, তাঁহার পুত্র শম্ভুচন্দ্র গঙ্গাগোবিন্দের শরণাপন্ন হন। শুনা যায় রাজা বিপদ দেখিয়া দেওয়ানজীকে লিখিয়া পাঠাইলেন, “দরবার অসাধ্য, পুত্র অবাধ্য, ভরসা কেবল গঙ্গাগোবিন্দ” কিন্তু গঙ্গাগোবিন্দ তাহাতেও কর্ণপাত করেন নাই।