সমকালের একটি শিরোনাম “সন্ধ্যায় বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের আলোচনায় বিএনপিসহ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আলোচনা শুরু হয়েছে। চলমান রাজনৈতিক এ পরিস্থিতিতে আজ শনিবার বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় সাক্ষাৎ করবেন।
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিএনপি এবং সাড়ে ৮টায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বাসভবন ‘যমুনা’য় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আর জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্ব দেবেন দলটির আমির শফিকুর রহমান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সাড়ে ৭টায় সাক্ষাতের সময় আমাদের জানানো হয়েছে।’
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও আজ বৈঠকে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ ব্যাপারে দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘সার্বিক বিষয় নিয়ে আলাপ করতে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে সময় চেয়েছিলাম। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আমাদের আজকে রাতে সাক্ষাতের সময় জানানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, দেশে চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “সর্বদলীয় বৈঠকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে না সরকার”
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না বলে জানা গেছে। সরকারের সূত্র বলছে, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারলেই সে ক্ষেত্রে সর্বদলীয় বৈঠক সম্ভব হতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ ভাবনার খবর প্রকাশের পর কয়েকজন উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা করেন। এ কারণে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা গতকাল শুক্রবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারপ্রধান তাঁর অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন। পরিস্থিতির সর্বশেষ ওই পর্যায়ে রয়েছে; এখন রাজনৈতিক দলগুলোই সিদ্ধান্ত নেবে। বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আজ শনিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে পারেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জনে বৃহস্পতিবার থেকে নড়েচড়ে বসে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ ডান ও মধ্যপন্থী দলগুলো। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তারা সরকারপ্রধানের পক্ষে থাকার কথা জানিয়েছে। এদিন রাতেই ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, খেলাফতে মজলিসের নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠক থেকে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে মোবাইলে কথাও বলেন তাঁরা। অন্য দলগুলো নিজেদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করছে বলে জানা গেছে। আজ গণতন্ত্র মঞ্চ বৈঠক করবে। বিএনপির সঙ্গেও তারা আলোচনা করবে বলে জানা গেছে।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “ভারত থেকে আকস্মিক বিদ্যুৎ বন্ধ হলে প্রস্তুত কি বিপিডিবি”
সম্প্রতি পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দুই দেশের এ টানাপড়েন বিদ্যুৎ বাণিজ্যেও প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর তাই যদি হয় অর্থাৎ প্রতিবেশী দেশটি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে তা মোকাবেলায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) প্রস্তুতি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তারা।
ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য বিপিডিবির সঙ্গে দেশটির সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ২ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি রয়েছে। এর মধ্যে জিটুজি চুক্তির আওতায় ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট এবং আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের। সে অনুযায়ী দৈনিক প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসছে ভারত থেকে, যা দেশে মোট বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রায় ১৭ শতাংশ। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো ত্রুটি কিংবা আকস্মিক বন্ধ হয়ে গেলে তার জন্য বিপিডিবির প্রস্তুতি রয়েছে কিনা—সে বিষয়ে সংস্থাটির বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে জানার চেষ্টা করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিপিডিবির ঊর্ধ্বতন দুই কর্মকর্তা জানান, ভারতের সঙ্গে জিটুজির আওতায় বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি আকস্মিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। বিগত এক দশকে এমন পরিস্থিতি কখনো হয়নিও। তবে কোনো কারণে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে সামাল দেয়ার মতো প্রস্তুতি বিপিডিবির রয়েছে বলে দাবি করেন তারা। সেক্ষেত্রে হয়তো কিছুটা লোডশেডিং হতে পারে। অবশ্য বিষয়টি নির্ভর করছে বিদ্যুতের পিক ডিমান্ডের ওপর। যদি বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে সেক্ষেত্রে সামাল দেয়া সম্ভব। চলতি বছরের প্রাক্কলন অনুযায়ী, বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছলে সেক্ষেত্রে হয়তো ভিন্ন পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “ভারতের বিধিনিষেধ স্থগিতে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ চেয়ে সরকারকে চিঠি”
স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আমদানিতে (বাংলাদেশের রপ্তানি) ভারত সরকারের আরোপিত বিধিনিষেধ তিন মাসের জন্য স্থগিত করতে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে চিঠি দিয়েছে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ। বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানান। একইসঙ্গে চলমান রপ্তানি ক্রয়াদেশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধটি স্থগিত করতেও অনুরোধ করেন তিনি। সংগঠনটির একাধিক নেতা বাণিজ্য সচিবকে চিঠি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিকেএমইএ’র চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) উদ্যোগে ১৮ই মে এবং বাণিজ্য সচিবের নেতৃত্বে ২০শে মে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সব অংশীদার ঐকমত্যে পৌঁছান, সেটা হলো বাংলাদেশ সরকারকে সচিব পর্যায়ে ভারতের সঙ্গে জরুরি আলোচনায় বসতে হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে স্থলবন্দরগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ রপ্তানি পণ্য ভারতে প্রবেশ করে, যার মধ্যে বড় একটি অংশ তৈরি পোশাক। গত ১০ মাসে স্থলবন্দরগুলো দিয়ে ১২ হাজার ৮১১ কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে, যার মধ্যে গত আট মাসে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে।
এই বিধিনিষেধের কারণে ইতিমধ্যে রপ্তানি পণ্য সীমান্তে আটকে গেছে, অনেক পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে এবং এলসি’র মাধ্যমে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ক্রেতাদের আস্থা হারানোর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের সুনাম দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
মোহাম্মদ হাতেম সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান, ‘এই নিষেধাজ্ঞার ফলে রপ্তানিকারকরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। ভারত সরকারকে অনুরোধ করতে হবে যেন তারা অন্তত তিন মাসের সময় দেয় এবং বর্তমানে প্রক্রিয়ারত রপ্তানি আদেশ এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখে।’
১৭ই মে স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। শুধু ভারতের নব সেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন।