শিল্পবাতাস থমকে গেছে—কারখানায় আগুন, ৩.৫ লাখ বেকারের উদ্ভব
কারখানায় আগুন ও ভাঙচুরের নৈরাজ্য
- আন্দোলনের উত্তাপে ঢাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলগুলোতে কয়েকশটি কারখানায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, ঢাকা মেট্রোর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে অস্থিতিশীলতা বেশি দেখা গেছে।
- উদাহরণস্বরূপ, নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় জুলাই মাসেই অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল, যেটিতে ২০০০ শ্রমিক একদিনের মধ্যে চাকরি হারায়।
- গাজীপুরে পেট্রোপণ্যের ব্যবসা নিয়ে আন্দোলনরতদের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে অন্তত ১৫টি ইটভাটা ভাঙচুরের মুখে পড়ে। এর ফলে শতাধিক দিনের উৎপাদন থেমে যায়।
৩.৫ লাখ বেকার—সংখ্যা যা চাপে ফেলেছে পরিবারগুলোকে
- সরকারের পরিসংখ্যান মতে, আন্দোলনের কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার শ্রমিক চাকরি হারিয়েছে। এর মধ্যে বড় অংশই ছিল নিম্নপদে নিয়োজিত শ্রমিক, যারা মাসে গড়ে ৮০০০–১০০০০ টাকা আয়ের উপর নির্ভর করত।
- নারায়ণগঞ্জ বস্তি এলাকা থেকে অমৃতলাল রায় (৪৫) বলেন, “একদিনে কারখানা বন্ধ হয়ে গেল, আমার ছেলে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে কাজ করতো। এখন সে দিনে মুজিবপুরে মজুরি খোঁজে, পাই না। পরিবার চালানো দাঁড়িয়ে গেছে।”
- গাজীপুরের আরেক জন, জরিন শিকদার (৩২), বলেন, “অগ্নিসংযোগের পর আমার সংস্থাও বস্তু তৈরি করছে না। বেতন বন্ধ। বুঝি না, আগামীকাল খাব কী, ঋণের টাকা কী ভাবে দিব?”
শিল্পপতিদের ওপর রাজনৈতিক ঝড়
- যেসব শিল্পপতি আন্দোলনে অখুশি, তারা রাজনৈতিক হুমকি, দমন-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এর কারণে তারা রাষ্ট্রীয় সহায়তা পাচ্ছে না, ফলে নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
- আইনি জটিলতা: অনেক শিল্পপতি আন্দোলনের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছেন, দমন-পীড়নের ভয়ে কারো কারো বিদেশে পলাতক হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে গ্রহণ করছে।