পরিবার থেকে শুরু, রেস্টুরেন্ট আর রান্নার বইয়ের যাত্রা
দ্য ফ্লাইজেরিয়ানস নামে পরিচিত দুই বোন জেস এবং জো এডুন তাদের রান্নার প্রেরণা পেয়েছেন তাদের দাদীর কাছ থেকে। ছোটবেলা থেকেই তারা রান্না ঘরে দাদীর পাশে সময় কাটাতেন, আর সেই শিখন থেকেই আজ তারা এক জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টের মালিক। ২০২২ সালে তাদের রেস্টুরেন্ট চালু হওয়ার পর থেকেই তারা ওয়েস্ট আফ্রিকান খাবারকে যুক্তরাজ্যের বারবিকিউ সংস্কৃতির সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করছেন।
তাদের রান্নার জনপ্রিয়তা এতটাই বেড়েছে যে তারা এখন একটি রেসিপি বই প্রকাশ করেছেন, যেখানে তাদের শ্রেষ্ঠ খাবারগুলোর রান্নার পদ্ধতি স্থান পেয়েছে। এই দুই বোন আগামী সামার গুড ফুড শো-তেও অংশ নিচ্ছেন, যেখানে তারা তাদের স্বাদ ও সৃষ্টিশীলতার জাদু দর্শকদের সামনে তুলে ধরবেন।
ওয়েস্ট আফ্রিকান স্বাদের বৈশিষ্ট্য
ওয়েস্ট আফ্রিকান রান্নায় ঝাঁজ, মসলা, ধোঁয়ার গন্ধ এবং সাহসী স্বাদের মিশ্রণ রয়েছে। দ্য ফ্লাইজেরিয়ানসের রেসিপিগুলোতে রয়েছে—
- সুগন্ধি জলোফ রাইস
- মরিচ ও আদা দিয়ে ম্যারিনেট করা গ্রিল চিকেন
- মশলাদার বিফ স্কিউয়ার
- পেঁয়াজ ও মরিচ দিয়ে তৈরি সস
এই রেসিপিগুলো শুধু যে স্বাদে অনন্য তা-ই নয়, এগুলোর প্রতিটিই গ্রীষ্মকালের আড্ডা বা পারিবারিক বারবিকিউতে আনে আনন্দ আর উন্মাদনা।
তাদের জনপ্রিয় কিছু রেসিপির বৈশিষ্ট্য
জলোফ রাইস: টমেটো, মরিচ, পেঁয়াজ আর মশলার সংমিশ্রণে তৈরি এই রাইস ডিশটি ওয়েস্ট আফ্রিকার পরিচয় বহন করে। ফ্লাইজেরিয়ানস এই রেসিপিটিকে নিজস্ব স্টাইলে পরিবেশন করেন।
সুয়িয়া বিফ স্কিউয়ার: গরুর মাংসের টুকরোগুলো এক ধরনের স্পাইসি ম্যারিনেডে ডুবিয়ে তারপর গ্রিলে রোস্ট করা হয়। এর সাইডে দেওয়া হয় পেঁয়াজ আর মরিচের সালাদ।
চিলি চিকেন ড্রামস্টিক: মসলা দিয়ে মাখানো ড্রামস্টিকগুলো ধীরে ধীরে গ্রিলে রান্না করা হয় যাতে প্রতিটি কামড় হয় রসে ভরা।
রান্নার মাধ্যমে সংস্কৃতির সংযোগ
দ্য ফ্লাইজেরিয়ানস শুধু খাবার পরিবেশন করেন না, তারা তাদের সংস্কৃতিও ছড়িয়ে দেন। প্রতিটি রেসিপি তাদের পারিবারিক ইতিহাস, তাদের দাদীর হাতের স্বাদ এবং ওয়েস্ট আফ্রিকার ঐতিহ্য বহন করে। রান্না তাদের কাছে শুধুই কাজ নয়—এটি এক ধরনের আত্মপরিচয়ের প্রকাশ।
গুড ফুড শোতে অংশগ্রহণ
আগামী গ্রীষ্মে তারা যুক্তরাজ্যের জনপ্রিয় গুড ফুড শোতে অংশ নিচ্ছেন, যেখানে তারা লাইভ রান্না দেখাবেন এবং দর্শকদের শেখাবেন কীভাবে ওয়েস্ট আফ্রিকান খাবার সহজে নিজের রান্নাঘরে বানানো যায়। এটা তাদের জন্য যেমন গর্বের বিষয়, তেমনি দর্শকদের জন্যও এক অসাধারণ সুযোগ।
উপসংহার
দ্য ফ্লাইজেরিয়ানস প্রমাণ করেছেন যে পারিবারিক রান্না শুধু স্বাদেই নয়, ভালোবাসা, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিরও বাহক। তাদের রেসিপিগুলোতে আছে ওয়েস্ট আফ্রিকার হৃদয়, আর তারা যেভাবে তা পরিবেশন করেন, তাতে স্পষ্ট—রান্না তাদের জন্য শিল্প, উত্তরাধিকার এবং আত্মার প্রকাশ।