০২:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

কোরবানির চামড়ার দামে ধস: ৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতি

সংকটের পুনরাবৃত্তি: ঈদের পর চামড়ার বাজার আবারও মুখ থুবড়ে পড়েছে

২০২৫ সালের ঈদ-উল-আধার পর গরু ও খাসির কাঁচা চামড়ার দাম গোটা বাংলাদেশে আবারও তলানিতে নেমে গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ৫০–৫৫ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪৫–৪৮ টাকা নির্ধারণ করলেও বাস্তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৌসুমী ব্যবসায়ীরা তা ২০–৩০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হন।

অধিক উদ্বেগজনক হলো, অনেক স্থানে চামড়া সংগ্রহকারীরা কোনো ক্রেতা না পেয়ে চামড়া রাস্তায় ফেলে দেন অথবা মসজিদ-মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ বিকল্প ব্যবস্থায় বিনামূল্যে দিয়ে দেন। এই ধারা কেবল অর্থনৈতিক নয়, পরিবেশগত বিপর্যয়ও সৃষ্টি করেছে।

১৫ মাসে ১৯টি বাণিজ্য সংগঠনের নিবন্ধন বাতিল | প্রথম আলো

জেলা-ওয়ারি সংকটের চিত্র

রংপুর বিভাগ:
দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদের পরপরই হাটে চামড়া কিনতে আসে না বড় কোনো পাইকার। দিনাজপুরে গরুর চামড়া ২২–২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে, আর খাসির চামড়া ৮–১০ টাকা। ঠাকুরগাঁওয়ে প্রায় ১৫,০০০ খাসির চামড়া রাস্তার পাশে পড়ে পচে গেছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান।

রাজশাহী বিভাগ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ সীমান্তবর্তী হওয়ায় এখানে পাচারের প্রবণতা বেশি। ঈদের পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিজিবি ৪টি ট্রাকচালিত চামড়া পাচার ঠেকিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে। নওগাঁয় প্রায় ২ কোটি টাকার চামড়া পাচারের আশঙ্কা ছিল।

ঢাকা বিভাগ:
ঢাকার বাইরের জেলা গাজীপুর ও মানিকগঞ্জে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ করেন ঈদের তৃতীয় দিনে। তারা জানান, ঢাকার সিন্ডিকেট চামড়া কিনছে না, আবার নিজেরাও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা পাননি।

৫ টাকায় ছাগলের চামড়া: অখিল চেঁছে বের করলেন মাংস

খুলনা বিভাগ:
সাতক্ষীরায় ঈদের দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ২০–২২ টাকা এবং খাসির চামড়া মাত্র ৫–৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কয়েক হাজার চামড়া হাটে পড়ে ছিল। বাগেরহাটেও প্রায় ৪০ শতাংশ খাসির চামড়া সংগ্রহই করা যায়নি।

চট্টগ্রাম বিভাগ:
কক্সবাজার ও বান্দরবানে পাহাড়ি এলাকায় কোনো সংগ্রহকারীই আসেননি। স্থানীয় এনজিও ‘হোপ ফাউন্ডেশন’ জানিয়েছে, তারা প্রায় ৬ হাজার খাসির চামড়া সংগ্রহ না করেই ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

বরিশাল ও সিলেট বিভাগ:
বরিশালের পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলায় পরিবহন সমস্যার কারণে চামড়া ঢাকায় পৌঁছাতেই পারেনি। সিলেটেও একই চিত্র; মৌলভীবাজারে খাসির চামড়ার দাম ছিল মাত্র ৭–৮ টাকা, যেখানে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অনেক চামড়া পচে গেছে।

কেন বারবার এই সংকট?

সংরক্ষণের অবকাঠামো নেই: সারা দেশে মাত্র ৩২টি বড় আকারের হিমাগার আছে, যা মোট চামড়া উৎপাদনের ১০ শতাংশও রাখতে পারে না। লবণের দামও ঈদের আগে বেড়ে যায়, যা সংরক্ষণের ব্যয় বাড়ায়।

ট্যানারি সিন্ডিকেটের আধিপত্য: ঢাকায় অবস্থিত কিছু বড় ট্যানারি মালিক পুরো বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে। তারা ঈদের ঠিক পরপরই দাম কমিয়ে দেয় এবং অনেক ক্ষেত্রেই চামড়া সংগ্রহ দেরি করে ফেলে।

 

ঋণ জটিলতা ও ব্যাংক নিষ্ক্রিয়তা: বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের ১০ দিন আগেও ৬০ শতাংশ ট্যানারি তাদের চাহিদার ঋণ পায়নি।

বাজারদরের বাস্তবায়নে শিথিলতা: বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাগজে দাম ঘোষণা করলেও তা মাঠে বাস্তবায়নে স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ছিল স্পষ্ট। কোনো নজরদারি ছিল না।

পাচার কি এখনো চলছে?

হ্যাঁ। বিজিবি, পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে চামড়ার উচ্চ চাহিদা থাকায় প্রতি বছর শত শত টন চামড়া সীমান্ত দিয়ে পাচার হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে বিশেষভাবে পাচার প্রবণতা বেশি। ছোট ট্রাকে করে রাতের আঁধারে চামড়া পার করা হয়। পাচার ঠেকাতে বিজিবি অভিযান চালালেও পাচারকারীরা প্রভাবশালী চক্রের ছত্রছায়ায় থাকে বলে জানা গেছে।

কত টাকা ক্ষতি হলো?

খাতসংশ্লিষ্টদের হিসাব অনুযায়ী:

  • কম দামে বিক্রি: আনুমানিক ১.২ কোটি চামড়ার মধ্যে প্রায় ৬০% চামড়া বাজার মূল্যের অর্ধেক বা তারও কম দামে বিক্রি হয়েছে।
  • নষ্ট ও পরিত্যক্ত চামড়া: প্রায় ৮–১০ লাখ চামড়া সংগ্রহই করা হয়নি বা পচে গেছে।
  • পাচার ও বাজার ফাঁকির ক্ষতি: পাচার ও সিন্ডিকেটের কারণে কমপক্ষে ৭০–৮০ কোটি টাকার রাজস্ব এবং প্রক্রিয়াজাত মূল্য সংযোজন হারিয়েছে দেশ।

মোট সম্ভাব্য ক্ষতি: ৩০০৩৫০ কোটি টাকা

সমাধানে কী করা উচিত?

বিশেষজ্ঞ ও খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে কিছু মৌলিক পদক্ষেপ জরুরি:

জেলা পর্যায়ে সংরক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন

প্রতিটি জেলা শহরে ভ্রাম্যমাণ কোল্ড স্টোরেজ এবং লবণযুক্ত সংরক্ষণকেন্দ্র স্থাপন করা জরুরি।

ট্যানারিগুলোর জন্য আগাম ঋণ নিশ্চিতকরণ

ঈদের ১৫ দিন আগেই ট্যানারি মালিকদের জন্য দ্রুত ঋণ মঞ্জুরির বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।

ন্যূনতম মূল্য সহায়তা ও সরকারি হস্তক্ষেপ

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও মৌসুমী সংগ্রাহকদের জন্য ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করে তা সরকারি প্রণোদনা দিয়ে নিশ্চিত করা যেতে পারে।

পাচার রোধে কড়া নজরদারি ও তথ্যভিত্তিক অভিযান

BGB, RAB ও কাস্টমসের যৌথ তদারকি ও প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

ট্যানারি ক্লাস্টারে রপ্তানিযোগ্য প্রক্রিয়াকরণে বিনিয়োগ

সাভারসহ অন্যান্য ট্যানারি ক্লাস্টারে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে, যাতে বিশ্ববাজারে চামড়া বিক্রি করা যায়।

প্রতিবছর ঈদ-উল-আযহা বাংলাদেশের জন্য একটি অর্থনৈতিক সম্ভাবনার উৎস হতে পারত। কিন্তু দায়িত্বহীনতা, নীতিগত ঘাটতি এবং সিন্ডিকেটের আধিপত্যের কারণে এই উৎসই এখন ক্ষতির উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি সরকার কাঠামোগত সংস্কার এবং কঠোর বাস্তবায়ন না করে, তবে আগামী বছরগুলোতেও এই ক্ষয়িষ্ণু প্রবণতা আরও তীব্র হবে।

কোরবানির চামড়ার দামে ধস: ৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতি

০৩:৪৫:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

সংকটের পুনরাবৃত্তি: ঈদের পর চামড়ার বাজার আবারও মুখ থুবড়ে পড়েছে

২০২৫ সালের ঈদ-উল-আধার পর গরু ও খাসির কাঁচা চামড়ার দাম গোটা বাংলাদেশে আবারও তলানিতে নেমে গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম ৫০–৫৫ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪৫–৪৮ টাকা নির্ধারণ করলেও বাস্তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৌসুমী ব্যবসায়ীরা তা ২০–৩০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হন।

অধিক উদ্বেগজনক হলো, অনেক স্থানে চামড়া সংগ্রহকারীরা কোনো ক্রেতা না পেয়ে চামড়া রাস্তায় ফেলে দেন অথবা মসজিদ-মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ বিকল্প ব্যবস্থায় বিনামূল্যে দিয়ে দেন। এই ধারা কেবল অর্থনৈতিক নয়, পরিবেশগত বিপর্যয়ও সৃষ্টি করেছে।

১৫ মাসে ১৯টি বাণিজ্য সংগঠনের নিবন্ধন বাতিল | প্রথম আলো

জেলা-ওয়ারি সংকটের চিত্র

রংপুর বিভাগ:
দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদের পরপরই হাটে চামড়া কিনতে আসে না বড় কোনো পাইকার। দিনাজপুরে গরুর চামড়া ২২–২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে, আর খাসির চামড়া ৮–১০ টাকা। ঠাকুরগাঁওয়ে প্রায় ১৫,০০০ খাসির চামড়া রাস্তার পাশে পড়ে পচে গেছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান।

রাজশাহী বিভাগ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ সীমান্তবর্তী হওয়ায় এখানে পাচারের প্রবণতা বেশি। ঈদের পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিজিবি ৪টি ট্রাকচালিত চামড়া পাচার ঠেকিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে। নওগাঁয় প্রায় ২ কোটি টাকার চামড়া পাচারের আশঙ্কা ছিল।

ঢাকা বিভাগ:
ঢাকার বাইরের জেলা গাজীপুর ও মানিকগঞ্জে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ করেন ঈদের তৃতীয় দিনে। তারা জানান, ঢাকার সিন্ডিকেট চামড়া কিনছে না, আবার নিজেরাও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা পাননি।

৫ টাকায় ছাগলের চামড়া: অখিল চেঁছে বের করলেন মাংস

খুলনা বিভাগ:
সাতক্ষীরায় ঈদের দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ২০–২২ টাকা এবং খাসির চামড়া মাত্র ৫–৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কয়েক হাজার চামড়া হাটে পড়ে ছিল। বাগেরহাটেও প্রায় ৪০ শতাংশ খাসির চামড়া সংগ্রহই করা যায়নি।

চট্টগ্রাম বিভাগ:
কক্সবাজার ও বান্দরবানে পাহাড়ি এলাকায় কোনো সংগ্রহকারীই আসেননি। স্থানীয় এনজিও ‘হোপ ফাউন্ডেশন’ জানিয়েছে, তারা প্রায় ৬ হাজার খাসির চামড়া সংগ্রহ না করেই ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

বরিশাল ও সিলেট বিভাগ:
বরিশালের পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলায় পরিবহন সমস্যার কারণে চামড়া ঢাকায় পৌঁছাতেই পারেনি। সিলেটেও একই চিত্র; মৌলভীবাজারে খাসির চামড়ার দাম ছিল মাত্র ৭–৮ টাকা, যেখানে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অনেক চামড়া পচে গেছে।

কেন বারবার এই সংকট?

সংরক্ষণের অবকাঠামো নেই: সারা দেশে মাত্র ৩২টি বড় আকারের হিমাগার আছে, যা মোট চামড়া উৎপাদনের ১০ শতাংশও রাখতে পারে না। লবণের দামও ঈদের আগে বেড়ে যায়, যা সংরক্ষণের ব্যয় বাড়ায়।

ট্যানারি সিন্ডিকেটের আধিপত্য: ঢাকায় অবস্থিত কিছু বড় ট্যানারি মালিক পুরো বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে। তারা ঈদের ঠিক পরপরই দাম কমিয়ে দেয় এবং অনেক ক্ষেত্রেই চামড়া সংগ্রহ দেরি করে ফেলে।

 

ঋণ জটিলতা ও ব্যাংক নিষ্ক্রিয়তা: বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের ১০ দিন আগেও ৬০ শতাংশ ট্যানারি তাদের চাহিদার ঋণ পায়নি।

বাজারদরের বাস্তবায়নে শিথিলতা: বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাগজে দাম ঘোষণা করলেও তা মাঠে বাস্তবায়নে স্থানীয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ছিল স্পষ্ট। কোনো নজরদারি ছিল না।

পাচার কি এখনো চলছে?

হ্যাঁ। বিজিবি, পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে চামড়ার উচ্চ চাহিদা থাকায় প্রতি বছর শত শত টন চামড়া সীমান্ত দিয়ে পাচার হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে বিশেষভাবে পাচার প্রবণতা বেশি। ছোট ট্রাকে করে রাতের আঁধারে চামড়া পার করা হয়। পাচার ঠেকাতে বিজিবি অভিযান চালালেও পাচারকারীরা প্রভাবশালী চক্রের ছত্রছায়ায় থাকে বলে জানা গেছে।

কত টাকা ক্ষতি হলো?

খাতসংশ্লিষ্টদের হিসাব অনুযায়ী:

  • কম দামে বিক্রি: আনুমানিক ১.২ কোটি চামড়ার মধ্যে প্রায় ৬০% চামড়া বাজার মূল্যের অর্ধেক বা তারও কম দামে বিক্রি হয়েছে।
  • নষ্ট ও পরিত্যক্ত চামড়া: প্রায় ৮–১০ লাখ চামড়া সংগ্রহই করা হয়নি বা পচে গেছে।
  • পাচার ও বাজার ফাঁকির ক্ষতি: পাচার ও সিন্ডিকেটের কারণে কমপক্ষে ৭০–৮০ কোটি টাকার রাজস্ব এবং প্রক্রিয়াজাত মূল্য সংযোজন হারিয়েছে দেশ।

মোট সম্ভাব্য ক্ষতি: ৩০০৩৫০ কোটি টাকা

সমাধানে কী করা উচিত?

বিশেষজ্ঞ ও খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে কিছু মৌলিক পদক্ষেপ জরুরি:

জেলা পর্যায়ে সংরক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন

প্রতিটি জেলা শহরে ভ্রাম্যমাণ কোল্ড স্টোরেজ এবং লবণযুক্ত সংরক্ষণকেন্দ্র স্থাপন করা জরুরি।

ট্যানারিগুলোর জন্য আগাম ঋণ নিশ্চিতকরণ

ঈদের ১৫ দিন আগেই ট্যানারি মালিকদের জন্য দ্রুত ঋণ মঞ্জুরির বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।

ন্যূনতম মূল্য সহায়তা ও সরকারি হস্তক্ষেপ

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও মৌসুমী সংগ্রাহকদের জন্য ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করে তা সরকারি প্রণোদনা দিয়ে নিশ্চিত করা যেতে পারে।

পাচার রোধে কড়া নজরদারি ও তথ্যভিত্তিক অভিযান

BGB, RAB ও কাস্টমসের যৌথ তদারকি ও প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

ট্যানারি ক্লাস্টারে রপ্তানিযোগ্য প্রক্রিয়াকরণে বিনিয়োগ

সাভারসহ অন্যান্য ট্যানারি ক্লাস্টারে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে, যাতে বিশ্ববাজারে চামড়া বিক্রি করা যায়।

প্রতিবছর ঈদ-উল-আযহা বাংলাদেশের জন্য একটি অর্থনৈতিক সম্ভাবনার উৎস হতে পারত। কিন্তু দায়িত্বহীনতা, নীতিগত ঘাটতি এবং সিন্ডিকেটের আধিপত্যের কারণে এই উৎসই এখন ক্ষতির উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি সরকার কাঠামোগত সংস্কার এবং কঠোর বাস্তবায়ন না করে, তবে আগামী বছরগুলোতেও এই ক্ষয়িষ্ণু প্রবণতা আরও তীব্র হবে।