০৯:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
৫৪০ কোটি টাকার ‘মাদক অর্থ’ পাচারে অভিযুক্ত বিক্রম সিং মজিঠিয়া উনসানে সমুদ্র সৈকতের রিসোর্ট উদ্বোধন: পর্যটনে বাজি ধরছে উত্তর কোরিয়া ওএমএস ও টিসিবি ডিলার নিয়োগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধের আহ্বান এসএসসি টেস্টের দুই দিনে শ্রীলঙ্কার রাজত্ব রাসেল ভাইপারের হুমকি: শহরেও ঢুকছে বিপজ্জনক সাপ! মঙ্গল অভিযানের প্রস্তুতি: মহাকাশে পাঠানো হলো গাঁজা গাছের বীজ ২০২৫ সালের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ আইসল্যান্ড, শীর্ষ দশে সিঙ্গাপুর নৌকার বাংলাদেশ: জেলা-জেলা ঘিরে এক ইতিহাস ও সংস্কৃতি ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্ট বা পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কী? কীভাবে এটি করা হয়? নেতানিয়াহুর বিচার বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের

নিজস্ব এ আই মডেলের ওপর জোর দিচ্ছে ভারত

এআইতে ভারতের দ্রুত উত্থান

বর্তমানে ভারত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) নিয়ে ব্যাপক উৎসাহে রয়েছে। চ্যাটজিপিটির ক্ষেত্রে ভারতের বাজারই সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল। কিছু অনুমান বলছে, বিশ্বব্যাপী মোট ব্যবহারকারীর প্রায় ১৪ শতাংশই ভারতীয়। শুধু বিদেশি প্রযুক্তির উপর নির্ভর না থেকে দেশীয় উদ্যোগও শুরু হয়েছে। ২৩ মে বেঙ্গালুরুভিত্তিক স্টার্টআপ ‘সর্বম এআই’ ভারতীয় ভাষায় কথা বলতে সক্ষম একটি লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম) উন্মোচন করেছে। পাশাপাশি সরকারি অর্থায়নে তৈরি ‘ভারত জেন’ নামের আরেকটি মডেলও চালু হয়েছে। এই দুটি মডেল ব্যবহারকারীদের হিন্দি থেকে মালায়ালামসহ বিভিন্ন ভাষায় এআই ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে।

সরকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও পরিকল্পনা

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারত সরকার চায়, দেশটি বিশ্বে এআই নেতৃত্বে জায়গা করে নিক। মোদির ভাষায়, ভারতের অংশগ্রহণ ছাড়া বৈশ্বিক এআই উন্নয়ন অসম্পূর্ণ। প্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ১০ মাসের মধ্যে ভারত নিজস্ব ফাউন্ডেশনাল মডেল তৈরি করবে এবং ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে দেশীয় এআই চিপ বানাবে।

বর্তমান বাস্তবতা: সীমিত অগ্রগতি

তবে বাস্তবে ভারতের অগ্রগতি এখনও অনেক পিছিয়ে। সর্বম এআই-এর প্রযুক্তি ফরাসি কোম্পানি মিস্ট্রালের প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরি। ভারত জেনও অন্যান্য ওপেন সোর্স প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। বিশ্বের শীর্ষ ২০০ এলএলএম তালিকায় এখনো কোনো ভারতীয় মডেল নেই। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এআই ইনডেক্স অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারতে বেসরকারি এআই বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ১.২ বিলিয়ন ডলার। এর তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে ১০৯ বিলিয়ন ডলার এবং চীনে ৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। বিনিয়োগের হিসাবে ভারত বর্তমানে অস্ট্রিয়া ও সুইডেনেরও পিছনে রয়েছে।

প্রযুক্তিগত কাঠামোগত দুর্বলতা

ডিজিটাল অবকাঠামোর দিক থেকেও ভারত অনেক পিছিয়ে। বিশ্বব্যাপী তথ্যকেন্দ্র ধারণক্ষমতার মাত্র ৩ শতাংশ ভারতের দখলে। যেখানে আমেরিকা ও চীন নিজেদের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে, ভারত সেখানে বিদেশি প্রযুক্তিকে নিজের মতো করে ব্যবহার করছে। এটি সাময়িক ধাপ নাকি স্থায়ী সীমাবদ্ধতা হবে—তা এখনও স্পষ্ট নয়।

সরকারি উদ্যোগ: বিনিয়োগ ও অবকাঠামো তৈরির চেষ্টা

গত বছর ভারত সরকার ১.২ বিলিয়ন ডলারের একটি এআই কর্মসূচি চালু করেছে। এর আওতায় গবেষক ও স্টার্টআপদের জন্য ৩৪ হাজারের বেশি চিপ কেনা হয়েছে। সর্বম এআই ছয় মাসের জন্য ৪ হাজার চিপ ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে। ভারত এআই মিশনের প্রধান অভিষেক সিং জানান, এই কর্মসূচির লক্ষ্য একটি দেশীয় ইকোসিস্টেম তৈরি করা। এখানে বিশ্ববাজারের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ দামে এআই প্রসেসর সরবরাহ করা হচ্ছে। সর্বমসহ চারটি প্রতিষ্ঠানকে দেশীয় এআই মডেল তৈরির জন্য বাছাই করা হয়েছে।

ডেটা সংকট: অগ্রগতির বড় বাধা

ভারতে বিপুল পরিমাণ ডেটা তৈরি হচ্ছে, যেমন জাতীয় বায়োমেট্রিক আইডি, রিয়েলটাইম পেমেন্ট সিস্টেম ইত্যাদি থেকে। কিন্তু এই ডেটার বড় অংশই গবেষক ও ডেভেলপারদের নাগালের বাইরে থেকে যাচ্ছে। ভারত এআই মিশন কিছু ডেটাসেট উন্মুক্ত করলেও অগ্রগতি ধীর। উচ্চমানের খোলা ডেটার অভাবে নতুন উদ্ভাবন কঠিন হয়ে পড়ছে।

মানবসম্পদের সংকট

এআই গবেষণায় দক্ষ জনবলেরও ঘাটতি রয়েছে। প্রচুর কোডার থাকলেও বিশ্বমানের গবেষকদের সংখ্যা খুবই কম। যারা আছেন, তাদের অনেকেই বিদেশে পাড়ি দেন। ২০২২ সালে ম্যাক্রোপোলো নামে এক মার্কিন গবেষণায় দেখা যায়, ভারতের শীর্ষ এআই গবেষকদের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ দেশে থাকেন। বিদেশে অধিক সম্পদ ও মেধার সঙ্গে কাজের সুযোগ তাদের আকর্ষণ করে। ফলে দেশে মৌলিক গবেষণার পরিসর সংকুচিত থাকে।

গবেষণার সংস্কৃতি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব

যারা দেশে থাকেন, তাদের বড় অংশই গুগল, মাইক্রোসফটের মতো বিদেশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ভারতীয় শাখায় কাজ করেন। কিন্তু এসব উপস্থিতি যথেষ্ট শক্তিশালী স্থানীয় গবেষণা ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে পারেনি। ফিনটেক প্রতিষ্ঠান জেরোধার প্রযুক্তি প্রধান কৈলাশ নাধ বলেন, ভারতে ধৈর্যশীল মৌলিক গবেষণার সংস্কৃতি নেই। শিল্প ও শিক্ষাক্ষেত্রের সমন্বয়ও দুর্বল। ফলে গবেষণা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে সীমিত আকারেই থেকে যাচ্ছে।

‘ভারতের জন্য উপযোগী এআই’ — স্থানীয় প্রয়োজন বনাম বৈশ্বিক সম্ভাবনা

ভারতের নীতিনির্ধারকেরা প্রায়ই বলেন, ভারতের জন্য উপযোগী এআই তৈরি করতে হবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যাংকিংসহ নানা খাতে ভারতের নিজস্ব সমস্যার সমাধানে এআই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কিন্তু কেবল অভ্যন্তরীণ বাজারে সীমাবদ্ধ থাকলে বৈশ্বিক নেতৃত্বের স্বপ্ন পূরণ কঠিন হবে। ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট অনিরুদ্ধ সূরী মনে করেন, বড় ঝুঁকি নিতে না পারলে ভারতের এআই স্বপ্ন থমকে যাবে। তার ভাষায়, এআই শুধু প্রযুক্তি নয়, এটি ভবিষ্যৎ অর্থনীতির বিশাল ইঞ্জিন।

আশা ও চ্যালেঞ্জের সন্ধিক্ষণে ভারত

ভারত এর আগে ইন্টারনেট, স্মার্টফোনসহ ডিজিটাল পরিবর্তনের বড় ঢেউ দেখেছে। তবে সেসব ক্ষেত্রে আমেরিকান টেক জায়ান্টরাই নেতৃত্বে থেকেছে। ভারতীয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা বিশাল হলেও দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রসার মূলত ই-কমার্স ও ফিনটেকে সীমাবদ্ধ থেকেছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তারা খুব বেশি এগুতে পারেনি। কিন্তু উদ্ভাবনের সিঁড়ি বেয়ে উন্নত অর্থনীতির দিকে ওঠার জন্য এআই ভারতের সামনে এক বিরাট সুযোগ হয়ে এসেছে। এই সুযোগ হাতছাড়া করার সময় এখন নয়।

৫৪০ কোটি টাকার ‘মাদক অর্থ’ পাচারে অভিযুক্ত বিক্রম সিং মজিঠিয়া

নিজস্ব এ আই মডেলের ওপর জোর দিচ্ছে ভারত

১২:৩০:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

এআইতে ভারতের দ্রুত উত্থান

বর্তমানে ভারত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) নিয়ে ব্যাপক উৎসাহে রয়েছে। চ্যাটজিপিটির ক্ষেত্রে ভারতের বাজারই সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল। কিছু অনুমান বলছে, বিশ্বব্যাপী মোট ব্যবহারকারীর প্রায় ১৪ শতাংশই ভারতীয়। শুধু বিদেশি প্রযুক্তির উপর নির্ভর না থেকে দেশীয় উদ্যোগও শুরু হয়েছে। ২৩ মে বেঙ্গালুরুভিত্তিক স্টার্টআপ ‘সর্বম এআই’ ভারতীয় ভাষায় কথা বলতে সক্ষম একটি লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম) উন্মোচন করেছে। পাশাপাশি সরকারি অর্থায়নে তৈরি ‘ভারত জেন’ নামের আরেকটি মডেলও চালু হয়েছে। এই দুটি মডেল ব্যবহারকারীদের হিন্দি থেকে মালায়ালামসহ বিভিন্ন ভাষায় এআই ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে।

সরকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও পরিকল্পনা

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারত সরকার চায়, দেশটি বিশ্বে এআই নেতৃত্বে জায়গা করে নিক। মোদির ভাষায়, ভারতের অংশগ্রহণ ছাড়া বৈশ্বিক এআই উন্নয়ন অসম্পূর্ণ। প্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ১০ মাসের মধ্যে ভারত নিজস্ব ফাউন্ডেশনাল মডেল তৈরি করবে এবং ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে দেশীয় এআই চিপ বানাবে।

বর্তমান বাস্তবতা: সীমিত অগ্রগতি

তবে বাস্তবে ভারতের অগ্রগতি এখনও অনেক পিছিয়ে। সর্বম এআই-এর প্রযুক্তি ফরাসি কোম্পানি মিস্ট্রালের প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরি। ভারত জেনও অন্যান্য ওপেন সোর্স প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। বিশ্বের শীর্ষ ২০০ এলএলএম তালিকায় এখনো কোনো ভারতীয় মডেল নেই। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এআই ইনডেক্স অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারতে বেসরকারি এআই বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ১.২ বিলিয়ন ডলার। এর তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে ১০৯ বিলিয়ন ডলার এবং চীনে ৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। বিনিয়োগের হিসাবে ভারত বর্তমানে অস্ট্রিয়া ও সুইডেনেরও পিছনে রয়েছে।

প্রযুক্তিগত কাঠামোগত দুর্বলতা

ডিজিটাল অবকাঠামোর দিক থেকেও ভারত অনেক পিছিয়ে। বিশ্বব্যাপী তথ্যকেন্দ্র ধারণক্ষমতার মাত্র ৩ শতাংশ ভারতের দখলে। যেখানে আমেরিকা ও চীন নিজেদের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে, ভারত সেখানে বিদেশি প্রযুক্তিকে নিজের মতো করে ব্যবহার করছে। এটি সাময়িক ধাপ নাকি স্থায়ী সীমাবদ্ধতা হবে—তা এখনও স্পষ্ট নয়।

সরকারি উদ্যোগ: বিনিয়োগ ও অবকাঠামো তৈরির চেষ্টা

গত বছর ভারত সরকার ১.২ বিলিয়ন ডলারের একটি এআই কর্মসূচি চালু করেছে। এর আওতায় গবেষক ও স্টার্টআপদের জন্য ৩৪ হাজারের বেশি চিপ কেনা হয়েছে। সর্বম এআই ছয় মাসের জন্য ৪ হাজার চিপ ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে। ভারত এআই মিশনের প্রধান অভিষেক সিং জানান, এই কর্মসূচির লক্ষ্য একটি দেশীয় ইকোসিস্টেম তৈরি করা। এখানে বিশ্ববাজারের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ দামে এআই প্রসেসর সরবরাহ করা হচ্ছে। সর্বমসহ চারটি প্রতিষ্ঠানকে দেশীয় এআই মডেল তৈরির জন্য বাছাই করা হয়েছে।

ডেটা সংকট: অগ্রগতির বড় বাধা

ভারতে বিপুল পরিমাণ ডেটা তৈরি হচ্ছে, যেমন জাতীয় বায়োমেট্রিক আইডি, রিয়েলটাইম পেমেন্ট সিস্টেম ইত্যাদি থেকে। কিন্তু এই ডেটার বড় অংশই গবেষক ও ডেভেলপারদের নাগালের বাইরে থেকে যাচ্ছে। ভারত এআই মিশন কিছু ডেটাসেট উন্মুক্ত করলেও অগ্রগতি ধীর। উচ্চমানের খোলা ডেটার অভাবে নতুন উদ্ভাবন কঠিন হয়ে পড়ছে।

মানবসম্পদের সংকট

এআই গবেষণায় দক্ষ জনবলেরও ঘাটতি রয়েছে। প্রচুর কোডার থাকলেও বিশ্বমানের গবেষকদের সংখ্যা খুবই কম। যারা আছেন, তাদের অনেকেই বিদেশে পাড়ি দেন। ২০২২ সালে ম্যাক্রোপোলো নামে এক মার্কিন গবেষণায় দেখা যায়, ভারতের শীর্ষ এআই গবেষকদের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ দেশে থাকেন। বিদেশে অধিক সম্পদ ও মেধার সঙ্গে কাজের সুযোগ তাদের আকর্ষণ করে। ফলে দেশে মৌলিক গবেষণার পরিসর সংকুচিত থাকে।

গবেষণার সংস্কৃতি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব

যারা দেশে থাকেন, তাদের বড় অংশই গুগল, মাইক্রোসফটের মতো বিদেশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ভারতীয় শাখায় কাজ করেন। কিন্তু এসব উপস্থিতি যথেষ্ট শক্তিশালী স্থানীয় গবেষণা ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে পারেনি। ফিনটেক প্রতিষ্ঠান জেরোধার প্রযুক্তি প্রধান কৈলাশ নাধ বলেন, ভারতে ধৈর্যশীল মৌলিক গবেষণার সংস্কৃতি নেই। শিল্প ও শিক্ষাক্ষেত্রের সমন্বয়ও দুর্বল। ফলে গবেষণা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে সীমিত আকারেই থেকে যাচ্ছে।

‘ভারতের জন্য উপযোগী এআই’ — স্থানীয় প্রয়োজন বনাম বৈশ্বিক সম্ভাবনা

ভারতের নীতিনির্ধারকেরা প্রায়ই বলেন, ভারতের জন্য উপযোগী এআই তৈরি করতে হবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যাংকিংসহ নানা খাতে ভারতের নিজস্ব সমস্যার সমাধানে এআই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কিন্তু কেবল অভ্যন্তরীণ বাজারে সীমাবদ্ধ থাকলে বৈশ্বিক নেতৃত্বের স্বপ্ন পূরণ কঠিন হবে। ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট অনিরুদ্ধ সূরী মনে করেন, বড় ঝুঁকি নিতে না পারলে ভারতের এআই স্বপ্ন থমকে যাবে। তার ভাষায়, এআই শুধু প্রযুক্তি নয়, এটি ভবিষ্যৎ অর্থনীতির বিশাল ইঞ্জিন।

আশা ও চ্যালেঞ্জের সন্ধিক্ষণে ভারত

ভারত এর আগে ইন্টারনেট, স্মার্টফোনসহ ডিজিটাল পরিবর্তনের বড় ঢেউ দেখেছে। তবে সেসব ক্ষেত্রে আমেরিকান টেক জায়ান্টরাই নেতৃত্বে থেকেছে। ভারতীয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা বিশাল হলেও দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রসার মূলত ই-কমার্স ও ফিনটেকে সীমাবদ্ধ থেকেছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তারা খুব বেশি এগুতে পারেনি। কিন্তু উদ্ভাবনের সিঁড়ি বেয়ে উন্নত অর্থনীতির দিকে ওঠার জন্য এআই ভারতের সামনে এক বিরাট সুযোগ হয়ে এসেছে। এই সুযোগ হাতছাড়া করার সময় এখন নয়।