০২:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

ইন্দোনেশিয়ায় আগ্নেয়গিরির ছয় মাইল উঁচু ছাইয়ের মেঘ

লেউওটোবি লাকি লাকির অগ্ন্যুৎপাত ও সর্বোচ্চ সতর্কতা

ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলের আগ্নেয়গিরি মাউন্ট লেউওটোবি লাকি লাকি মঙ্গলবার হঠাৎ অগ্ন্যুৎপাত শুরু করে, যার ফলে আকাশে ছয় মাইল বা প্রায় দশ কিলোমিটার উঁচু পর্যন্ত ছাইয়ের বিশাল মেঘ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা আগ্নেয়গিরি সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ স্তর চার ঘোষণা করে।

পার্শ্ববর্তী গ্রামে ছাই ও কংকর বৃষ্টি

অগ্ন্যুৎপাতের ফলে আগ্নেয় ছাই, পাথর ও অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ আশপাশের গ্রামগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষত বোরু, হেওয়া ও ওয়াতোবুকু এলাকায় এসব ধ্বংসাবশেষের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে নিরাপদ এলাকায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও এখনো কোনো হতাহতের খবর আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।

২০২৫ সালের অন্যতম বড় অগ্ন্যুৎপাত

ইন্দোনেশিয়ার সংবাদ সংস্থা  জানায়, ২০২৫ সালের মধ্যে এটি অন্যতম বড় অগ্ন্যুৎপাত, কারণ ছাইয়ের স্তম্ভের উচ্চতা অন্য যেকোনো ঘটনার তুলনায় বেশি। আগ্নেয়গিরির এই অগ্ন্যুৎপাত এখনও পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং বুধবারও দূর থেকে ছত্রাক-আকৃতির ছাইয়ের মেঘ ৯০ মাইল দূর থেকেও দৃশ্যমান ছিল।

দ্বিগুণ বিপদের আশঙ্কা: পাশে আরও একটি শৃঙ্গ

মাউন্ট লেউওটোবি লাকি লাকি অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার ফ্লোরেস দ্বীপে। এর পাশেই রয়েছে আরেকটি আগ্নেয়গিরি—লেউওটোবি পেরেমপুয়ান। নভেম্বর মাসে এই দুটি আগ্নেয়গিরির একটি অগ্ন্যুৎপাতে নয়জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছিল বলে এপি সূত্রে জানা যায়।

বিমানবন্দর বন্ধবালির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

মঙ্গলবারের অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ইস্ট নুসা তেঙ্গারা প্রদেশের স্থানীয় বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। বালি যাওয়া-আসার ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়। এর প্রভাব পড়ে এয়ার নিউজিল্যান্ড, ভার্জিন, ক্যান্টাস এবং এয়ার ইন্ডিয়ার মতো আন্তর্জাতিক ফ্লাইটেও। ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, দিল্লি থেকে বালিগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইট মাঝপথে ঘুরিয়ে নেওয়া হয়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের চাপে ইন্দোনেশিয়া

একইসঙ্গে ইন্দোনেশিয়া আরও কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি। পশ্চিম জাভায় ভূমিধস, সেন্ট্রাল সুলাওয়েসি এবং বানতেনে রয়েছে প্রবল বন্যা। সব মিলিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিপর্যয় অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে।

ইন্দোনেশিয়ায় আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণ একটি সাধারণ ঘটনা হলেও এবারের লেউওটোবি লাকি লাকি’র অগ্ন্যুৎপাত তার তীব্রতা, ছাইয়ের উচ্চতা এবং এর বহুমুখী প্রভাবের কারণে আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে। দেশজুড়ে ভ্রমণ, নিরাপত্তা ও জনজীবন এখন জরুরি প্রস্তুতি ও সতর্কতার মধ্য দিয়ে পার হচ্ছে।

ইন্দোনেশিয়ায় আগ্নেয়গিরির ছয় মাইল উঁচু ছাইয়ের মেঘ

০৬:৪৮:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

লেউওটোবি লাকি লাকির অগ্ন্যুৎপাত ও সর্বোচ্চ সতর্কতা

ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলের আগ্নেয়গিরি মাউন্ট লেউওটোবি লাকি লাকি মঙ্গলবার হঠাৎ অগ্ন্যুৎপাত শুরু করে, যার ফলে আকাশে ছয় মাইল বা প্রায় দশ কিলোমিটার উঁচু পর্যন্ত ছাইয়ের বিশাল মেঘ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা আগ্নেয়গিরি সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ স্তর চার ঘোষণা করে।

পার্শ্ববর্তী গ্রামে ছাই ও কংকর বৃষ্টি

অগ্ন্যুৎপাতের ফলে আগ্নেয় ছাই, পাথর ও অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ আশপাশের গ্রামগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষত বোরু, হেওয়া ও ওয়াতোবুকু এলাকায় এসব ধ্বংসাবশেষের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে নিরাপদ এলাকায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও এখনো কোনো হতাহতের খবর আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।

২০২৫ সালের অন্যতম বড় অগ্ন্যুৎপাত

ইন্দোনেশিয়ার সংবাদ সংস্থা  জানায়, ২০২৫ সালের মধ্যে এটি অন্যতম বড় অগ্ন্যুৎপাত, কারণ ছাইয়ের স্তম্ভের উচ্চতা অন্য যেকোনো ঘটনার তুলনায় বেশি। আগ্নেয়গিরির এই অগ্ন্যুৎপাত এখনও পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং বুধবারও দূর থেকে ছত্রাক-আকৃতির ছাইয়ের মেঘ ৯০ মাইল দূর থেকেও দৃশ্যমান ছিল।

দ্বিগুণ বিপদের আশঙ্কা: পাশে আরও একটি শৃঙ্গ

মাউন্ট লেউওটোবি লাকি লাকি অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার ফ্লোরেস দ্বীপে। এর পাশেই রয়েছে আরেকটি আগ্নেয়গিরি—লেউওটোবি পেরেমপুয়ান। নভেম্বর মাসে এই দুটি আগ্নেয়গিরির একটি অগ্ন্যুৎপাতে নয়জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছিল বলে এপি সূত্রে জানা যায়।

বিমানবন্দর বন্ধবালির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

মঙ্গলবারের অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ইস্ট নুসা তেঙ্গারা প্রদেশের স্থানীয় বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। বালি যাওয়া-আসার ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়। এর প্রভাব পড়ে এয়ার নিউজিল্যান্ড, ভার্জিন, ক্যান্টাস এবং এয়ার ইন্ডিয়ার মতো আন্তর্জাতিক ফ্লাইটেও। ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, দিল্লি থেকে বালিগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইট মাঝপথে ঘুরিয়ে নেওয়া হয়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের চাপে ইন্দোনেশিয়া

একইসঙ্গে ইন্দোনেশিয়া আরও কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি। পশ্চিম জাভায় ভূমিধস, সেন্ট্রাল সুলাওয়েসি এবং বানতেনে রয়েছে প্রবল বন্যা। সব মিলিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিপর্যয় অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে।

ইন্দোনেশিয়ায় আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণ একটি সাধারণ ঘটনা হলেও এবারের লেউওটোবি লাকি লাকি’র অগ্ন্যুৎপাত তার তীব্রতা, ছাইয়ের উচ্চতা এবং এর বহুমুখী প্রভাবের কারণে আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে। দেশজুড়ে ভ্রমণ, নিরাপত্তা ও জনজীবন এখন জরুরি প্রস্তুতি ও সতর্কতার মধ্য দিয়ে পার হচ্ছে।