০২:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের সাগর-নদীর হাঙর–রাজ্যে বিপন্ন জীবনের নীরব সংকেত

বাংলাদেশের সাগর ও নদীবহর — বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ বদ্বীপ — এখনও অন্তত ৬৬টি নিশ্চিত হাঙর ও রে মাছের প্রজাতির শেষ আশ্রয়। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা জানায়, এর ৫৮ শতাংশই আইইউসিএনের লাল তালিকায় ‘বিপন্ন’ বা ‘মহাবিপন্ন’ পর্যায়ে; অর্থাৎ বাঁচাতে না পারলে এই শিকারি জীববৈচিত্র্যের বড় অংশ অদূর ভবিষ্যতেই বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশ-ডেল্টা এখন বিশ্বের দ্রুত ক্ষয়মান সামুদ্রিক শিকারি প্রজাতির অন্যতম হটস্পট।

সাগরের উন্মুক্ত জল : প্রজাতির ভাণ্ডার

বঙ্গোপসাগরের খোলা জলে ভেসে বেড়ায় দৈত্যাকার হোয়েল শার্ক (Rhincodon typus) থেকে মাঝারি ব্ল্যাকটিপ, স্পিনার, সিল্কি, এমনকি ভয়ংকর টাইগার শার্কও। ২০২২-এ সেন্ট মার্টিন ঘিরে ১,৭৪৩ বর্গকিলোমিটারের সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা (MPA) ঘোষণার প্রধান কারণ ছিল এই হোয়েল শার্কের মৌসুমি ভ্রমণপথ রক্ষা — মার্চ-মে ও অক্টোবর-ডিসেম্বরে তারা প্ল্যাঙ্কটন খেতে দ্বীপ-উপকূলে ভিড়ে।

হোয়েল শার্কের করিডর

টেকনাফ উপকূলের ‘নাফ ক্যানিয়ন’ থেকে সেন্ট মার্টিন পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এক গভীর খাদ-করিডরকে গবেষকেরা হোয়েল শার্কের প্রধান পথরেখা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। স্যাটেলাইট ট্যাগ ও নৌ-সমীক্ষায় দেখা যায়, কিছু শার্ক মালদ্বীপ পর্যন্ত গিয়ে কয়েক মাসের মধ্যে আবার ফিরে আসে। করিডরে ঝলমলে আলো, অতিরিক্ত পর্যটক নৌযান ও ট্রলারের শব্দদূষণ এই মৃদুভাষী শিকারির জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করছে।

সুন্দরবনের নার্সারি : পশুরশিবশা নেটওয়ার্ক

খুলনা শহরের ঠিক দক্ষিণে রূপসা নদীর নাম বদলে যখন পশুর হয়, মোংলা বন্দরের পাশ ঘেঁষে পশ্চিমে গিয়ে জন্ম দেয় শিবশা। এ দুটি মূল ধারা সুন্দরবনের বুক চিরে কুঙ্গা মোহনায় বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। পথে জয়মনি, শেলা, দুবলা, কেদারপাড়া — মোট ত্রিশেরও বেশি শাখা-খাল এই নেটওয়ার্ককে জালের মতো ছড়িয়ে দেয়। সমৃদ্ধ কাদামাটি, শ্বাসমূল-ভরা ম্যানগ্রোভ আর নিভৃতে ছায়া — সব মিলিয়ে শিশু হাঙর ও রে মাছের নিরাপদ ‘ডে-কেয়ার’ গড়ে উঠেছে এখানে। ২০১৫-১৭-এর ফিশ সার্ভে দেখায়, সুন্দরবনের প্রধান নদীগুলোর (বিশেষত Pashur, Shibsha, Shela) বাজার ও জেলে-নৌকা থেকে উদ্ধার হওয়া অর্ধেকেরও বেশি কিশোর হাঙর ঠিক এ অঞ্চলেরই বাসিন্দা।

কেন শ্রেষ্ঠ নার্সারি?

  • দিনে দু’বার জোয়ার-ভাটায় লবণাক্ততায় পরিবর্তন — সামুদ্রিক ছানারা ধীরে ধীরে মিঠে পানির সহনশীলতা শেখে।
  • ম্যানগ্রোভের ছাতা শিকারি কমায়; পলিমাটিতে চিংড়ি-কাঁকড়া-ছোট মাছের সমাহার নিয়মিত খাদ্য জোগায়।
  • প্রবল স্রোত ও গভীর খাড়ি দ্রুতগতির শিকারি (ডলফিন, বড় বন্য-বিড়াল) থেকে প্রাকৃতিক ব্যূহ তৈরি করে।

মৌসুমি চিত্র

  • গ্রীষ্ম (মার্চ-মে) : কুঙ্গা মোহনায় ধীর গতিতে ভেসে ওঠে হোয়েল শার্ক।
  • বর্ষা (জুন-আগস্ট) : জয়মনি-শেলা খালে ভিড় জমায় ৩০-৪০ সেমি ব্ল্যাকটিপ ও স্পিনার ছানারা।
  • শরৎ-হেমন্ত (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর) : পশুর মুখে দেখা মেলে ১-১.৫ মিটার তরুণ বুল শার্ক।
  • শীত (ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি) : মাঝে-মাঝে গভীর পশুরে দুর্লভ টাইগার বা হ্যামারহেডের আবির্ভাবও ঘটে ।

টাইগার হাঙরের পেটে কী থাকে? - ওশান ফাউন্ডেশন

মিঠে জলের শিকারি — বুল শার্ক থেকে গাঙ্গেয় হাঙর

বুল শার্ক (Carcharhinus leucas) বাংলাদেশের নদী-উজানে ঢুকে পড়া সবচেয়ে শক্তপোক্ত শিকারি; জেলেরা কর্ণফুলী, সাঙ্গু পেরিয়ে কখনও মেঘনা-ইলিশা, এমনকি পদ্মা পর্যন্ত এদের ধরার ঘটনা জানান। বিপরীতে গাঙ্গেয় হাঙর (Glyphis gangeticus) একসময় Padma-Meghna-Brahmaputra ত্রয়ে নিয়মিত মিললেও এখন মহাবিপন্ন — সর্বশেষ নিশ্চিত রেকর্ড ২০০৬ (সুন্দরবন) ও ২০১৭ (কক্সবাজার)।

অল্প বয়সেই বড় শিকার

এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের উপকূলীয় ল্যান্ডিং সাইটে ধরা পড়া হাঙর ও রে মাছের ৯৮ শতাংশই অপরিপক্ব — প্রজনন বয়সে পৌঁছানোর আগেই জালে আটকা পড়ছে। এর বড় ভাগ আসে পশুর-শিবশা এলাকায়, যেটি আবার তাদের প্রধান নার্সারিও।

সুন্দরবনে তেলবাহী জাহাজ চালকের লাশ উদ্ধার - BBC News বাংলা

বিপর্যয়ের ভরকেন্দ্র : তেল-দূষণ থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক

২০১৪-র তেলবাহী জাহাজডুবিতে Shela নদী-সহ সুন্দরবনের ২০টিরও বেশি খালে ছড়ায় ৩৫০ টন ফার্নেস অয়েল। আর সাম্প্রতিক গবেষণায় পশুর নদীর পানি, পলিমাটি ও মাছের দেহে উচ্চমাত্রার মাইক্রোপ্লাস্টিক ধরা পড়েছে, যা হাঙর-প্ল্যাঙ্কটন খাদ্যশৃঙ্খলে সরাসরি সংক্রমণ ঘটায়।

আইন ও বাস্তবতা

২০২৪-এ বন অধিদপ্তর পশুর-শিবশা-কুঙ্গার সাতটি খালকে ‘শার্ক-রে সংরক্ষণ এলাকা’ ঘোষণা করেছে; ৩০ কেজির নিচে হাঙর ধরাকে দণ্ডনীয় অপরাধ করা হলেও টহল সীমিত থাকায় শিশু হাঙর এখনও নিয়মিত জালে ওঠে।

করণীয় — এখনই উদ্যোগ

বর্ষা শুরুর আগে ৪৫ দিন ‘শিশু হাঙর নিষিদ্ধ মৌসুম’ ঘোষণা করে সব খাল-নৌসম্ভার বন্ধ রাখা।

জেলে-নিয়ন্ত্রিত ‘হাঙর পর্যবেক্ষণ ভ্রমণ’ চালু করে বিকল্প আয়ের পথ দেখানো।

Ocean Justice in Focus: Bangladesh and The Global Oceans Treaty -  Greenpeace South Asia

ট্রলার অপারেশন ও নৌ-লাইট নিয়ন্ত্রণে বঙ্গোপসাগরে যেমন এমপিএ গড়া হয়েছে, তেমনই ‘নদীমুখ সংরক্ষণ লাইট-জোন’ পশুর-শিবশায় জরুরি।

হাঙর বাঁচলেই বাঁচবে সমুদ্র-নদীর ভারসাম্য

রূপসা বদলে পশুর, পশুর ভাগ হয়ে শিবশা — এই দ্বিপ্রবাহের শাখা-উপশাখায় খেলার ছলে বড় হয় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ হাঙর বাহিনী। হোয়েল শার্কের ধীর পদক্ষেপ থেকে শিশু ব্ল্যাকটিপের প্রথম শিকার অভিযান — সবকিছুই সমুদ্র-নদী বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই পশুর-শিবশা-শেলা বাঁচলে বাঁচবে বঙ্গোপসাগরের শিকারি নীলস্বর্গ; আর সেই স্বর্গ টিকিয়ে রাখাই সুন্দরবন, নদী-কেন্দ্রিক মানুষ ও সমুদ্রজীবনের টিকে থাকার পূর্বশর্ত।

বাংলাদেশের সাগর-নদীর হাঙর–রাজ্যে বিপন্ন জীবনের নীরব সংকেত

১০:০০:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের সাগর ও নদীবহর — বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ বদ্বীপ — এখনও অন্তত ৬৬টি নিশ্চিত হাঙর ও রে মাছের প্রজাতির শেষ আশ্রয়। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা জানায়, এর ৫৮ শতাংশই আইইউসিএনের লাল তালিকায় ‘বিপন্ন’ বা ‘মহাবিপন্ন’ পর্যায়ে; অর্থাৎ বাঁচাতে না পারলে এই শিকারি জীববৈচিত্র্যের বড় অংশ অদূর ভবিষ্যতেই বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশ-ডেল্টা এখন বিশ্বের দ্রুত ক্ষয়মান সামুদ্রিক শিকারি প্রজাতির অন্যতম হটস্পট।

সাগরের উন্মুক্ত জল : প্রজাতির ভাণ্ডার

বঙ্গোপসাগরের খোলা জলে ভেসে বেড়ায় দৈত্যাকার হোয়েল শার্ক (Rhincodon typus) থেকে মাঝারি ব্ল্যাকটিপ, স্পিনার, সিল্কি, এমনকি ভয়ংকর টাইগার শার্কও। ২০২২-এ সেন্ট মার্টিন ঘিরে ১,৭৪৩ বর্গকিলোমিটারের সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা (MPA) ঘোষণার প্রধান কারণ ছিল এই হোয়েল শার্কের মৌসুমি ভ্রমণপথ রক্ষা — মার্চ-মে ও অক্টোবর-ডিসেম্বরে তারা প্ল্যাঙ্কটন খেতে দ্বীপ-উপকূলে ভিড়ে।

হোয়েল শার্কের করিডর

টেকনাফ উপকূলের ‘নাফ ক্যানিয়ন’ থেকে সেন্ট মার্টিন পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এক গভীর খাদ-করিডরকে গবেষকেরা হোয়েল শার্কের প্রধান পথরেখা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। স্যাটেলাইট ট্যাগ ও নৌ-সমীক্ষায় দেখা যায়, কিছু শার্ক মালদ্বীপ পর্যন্ত গিয়ে কয়েক মাসের মধ্যে আবার ফিরে আসে। করিডরে ঝলমলে আলো, অতিরিক্ত পর্যটক নৌযান ও ট্রলারের শব্দদূষণ এই মৃদুভাষী শিকারির জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করছে।

সুন্দরবনের নার্সারি : পশুরশিবশা নেটওয়ার্ক

খুলনা শহরের ঠিক দক্ষিণে রূপসা নদীর নাম বদলে যখন পশুর হয়, মোংলা বন্দরের পাশ ঘেঁষে পশ্চিমে গিয়ে জন্ম দেয় শিবশা। এ দুটি মূল ধারা সুন্দরবনের বুক চিরে কুঙ্গা মোহনায় বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। পথে জয়মনি, শেলা, দুবলা, কেদারপাড়া — মোট ত্রিশেরও বেশি শাখা-খাল এই নেটওয়ার্ককে জালের মতো ছড়িয়ে দেয়। সমৃদ্ধ কাদামাটি, শ্বাসমূল-ভরা ম্যানগ্রোভ আর নিভৃতে ছায়া — সব মিলিয়ে শিশু হাঙর ও রে মাছের নিরাপদ ‘ডে-কেয়ার’ গড়ে উঠেছে এখানে। ২০১৫-১৭-এর ফিশ সার্ভে দেখায়, সুন্দরবনের প্রধান নদীগুলোর (বিশেষত Pashur, Shibsha, Shela) বাজার ও জেলে-নৌকা থেকে উদ্ধার হওয়া অর্ধেকেরও বেশি কিশোর হাঙর ঠিক এ অঞ্চলেরই বাসিন্দা।

কেন শ্রেষ্ঠ নার্সারি?

  • দিনে দু’বার জোয়ার-ভাটায় লবণাক্ততায় পরিবর্তন — সামুদ্রিক ছানারা ধীরে ধীরে মিঠে পানির সহনশীলতা শেখে।
  • ম্যানগ্রোভের ছাতা শিকারি কমায়; পলিমাটিতে চিংড়ি-কাঁকড়া-ছোট মাছের সমাহার নিয়মিত খাদ্য জোগায়।
  • প্রবল স্রোত ও গভীর খাড়ি দ্রুতগতির শিকারি (ডলফিন, বড় বন্য-বিড়াল) থেকে প্রাকৃতিক ব্যূহ তৈরি করে।

মৌসুমি চিত্র

  • গ্রীষ্ম (মার্চ-মে) : কুঙ্গা মোহনায় ধীর গতিতে ভেসে ওঠে হোয়েল শার্ক।
  • বর্ষা (জুন-আগস্ট) : জয়মনি-শেলা খালে ভিড় জমায় ৩০-৪০ সেমি ব্ল্যাকটিপ ও স্পিনার ছানারা।
  • শরৎ-হেমন্ত (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর) : পশুর মুখে দেখা মেলে ১-১.৫ মিটার তরুণ বুল শার্ক।
  • শীত (ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি) : মাঝে-মাঝে গভীর পশুরে দুর্লভ টাইগার বা হ্যামারহেডের আবির্ভাবও ঘটে ।

টাইগার হাঙরের পেটে কী থাকে? - ওশান ফাউন্ডেশন

মিঠে জলের শিকারি — বুল শার্ক থেকে গাঙ্গেয় হাঙর

বুল শার্ক (Carcharhinus leucas) বাংলাদেশের নদী-উজানে ঢুকে পড়া সবচেয়ে শক্তপোক্ত শিকারি; জেলেরা কর্ণফুলী, সাঙ্গু পেরিয়ে কখনও মেঘনা-ইলিশা, এমনকি পদ্মা পর্যন্ত এদের ধরার ঘটনা জানান। বিপরীতে গাঙ্গেয় হাঙর (Glyphis gangeticus) একসময় Padma-Meghna-Brahmaputra ত্রয়ে নিয়মিত মিললেও এখন মহাবিপন্ন — সর্বশেষ নিশ্চিত রেকর্ড ২০০৬ (সুন্দরবন) ও ২০১৭ (কক্সবাজার)।

অল্প বয়সেই বড় শিকার

এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের উপকূলীয় ল্যান্ডিং সাইটে ধরা পড়া হাঙর ও রে মাছের ৯৮ শতাংশই অপরিপক্ব — প্রজনন বয়সে পৌঁছানোর আগেই জালে আটকা পড়ছে। এর বড় ভাগ আসে পশুর-শিবশা এলাকায়, যেটি আবার তাদের প্রধান নার্সারিও।

সুন্দরবনে তেলবাহী জাহাজ চালকের লাশ উদ্ধার - BBC News বাংলা

বিপর্যয়ের ভরকেন্দ্র : তেল-দূষণ থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক

২০১৪-র তেলবাহী জাহাজডুবিতে Shela নদী-সহ সুন্দরবনের ২০টিরও বেশি খালে ছড়ায় ৩৫০ টন ফার্নেস অয়েল। আর সাম্প্রতিক গবেষণায় পশুর নদীর পানি, পলিমাটি ও মাছের দেহে উচ্চমাত্রার মাইক্রোপ্লাস্টিক ধরা পড়েছে, যা হাঙর-প্ল্যাঙ্কটন খাদ্যশৃঙ্খলে সরাসরি সংক্রমণ ঘটায়।

আইন ও বাস্তবতা

২০২৪-এ বন অধিদপ্তর পশুর-শিবশা-কুঙ্গার সাতটি খালকে ‘শার্ক-রে সংরক্ষণ এলাকা’ ঘোষণা করেছে; ৩০ কেজির নিচে হাঙর ধরাকে দণ্ডনীয় অপরাধ করা হলেও টহল সীমিত থাকায় শিশু হাঙর এখনও নিয়মিত জালে ওঠে।

করণীয় — এখনই উদ্যোগ

বর্ষা শুরুর আগে ৪৫ দিন ‘শিশু হাঙর নিষিদ্ধ মৌসুম’ ঘোষণা করে সব খাল-নৌসম্ভার বন্ধ রাখা।

জেলে-নিয়ন্ত্রিত ‘হাঙর পর্যবেক্ষণ ভ্রমণ’ চালু করে বিকল্প আয়ের পথ দেখানো।

Ocean Justice in Focus: Bangladesh and The Global Oceans Treaty -  Greenpeace South Asia

ট্রলার অপারেশন ও নৌ-লাইট নিয়ন্ত্রণে বঙ্গোপসাগরে যেমন এমপিএ গড়া হয়েছে, তেমনই ‘নদীমুখ সংরক্ষণ লাইট-জোন’ পশুর-শিবশায় জরুরি।

হাঙর বাঁচলেই বাঁচবে সমুদ্র-নদীর ভারসাম্য

রূপসা বদলে পশুর, পশুর ভাগ হয়ে শিবশা — এই দ্বিপ্রবাহের শাখা-উপশাখায় খেলার ছলে বড় হয় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ হাঙর বাহিনী। হোয়েল শার্কের ধীর পদক্ষেপ থেকে শিশু ব্ল্যাকটিপের প্রথম শিকার অভিযান — সবকিছুই সমুদ্র-নদী বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই পশুর-শিবশা-শেলা বাঁচলে বাঁচবে বঙ্গোপসাগরের শিকারি নীলস্বর্গ; আর সেই স্বর্গ টিকিয়ে রাখাই সুন্দরবন, নদী-কেন্দ্রিক মানুষ ও সমুদ্রজীবনের টিকে থাকার পূর্বশর্ত।