১২:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ট্রাম্পের শুল্ক চিঠি এশিয়াকে ১ আগস্টের মধ্যে চুক্তি করতে চাপ দিচ্ছে

ভূমিকা

গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে একতরফাভিত্তিক শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন,তা কার্যকর করার বিষয়ে এশিয়ার বিভিন্ন মিত্রদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, লাওস ও মায়ানমারের মতো দেশগুলোকে ১ আগস্টের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি হয়নি অর্থাৎ না হলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে।

পাঠানো অস্বস্তিকর চিঠি

প্রথম দফায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো ইশিবা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি লি জে-মিয়ং-এর কাছে জানানো হয়েছে যে তাদের দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে—ওয়াশিংটন এমনটাই জানিয়েছে। এর পরই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকেও প্রায় একই ধরনের চিঠি পৌঁছেছে।

Trump sets 25% tariffs on Japan and South Korea, and new import taxes on 12 other nations

দেশ অনুযায়ী শুল্কের হার

  • মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া: যথাক্রমে ২৫% ও ৩২%
  • থাইল্যান্ড: ৩৬%
  • লাওস ও মায়ানমার: ৪০%
  • কম্বোডিয়া: ৩৬% (আগের ৪৯%-এর পরিবর্তে কম)

সিঙ্গাপুর, ভারত ও তাইওয়ান এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো নোটিশ পায়নি।

ক্ষেত্রভিত্তিক শুল্ক

অটোমোবাইল পণ্যে ২৫% এবং স্টিল–অ্যালুমিনিয়ামে ৫০% শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। পাশাপাশি, অন্য কোনো দেশে তৈরি হলেও আমেরিকায় সরাসরি ভোগ্যপণ্য হিসেবে পাঠানো পণ্যগুলোর ওপর আরও উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ হতে পারে। যদি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক আরোপ হয়, তাহলে “জবাবী ব্যবস্থা” নেওয়ার হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ডেডলাইনে শিথিলতার ইঙ্গিত

ট্রাম্প নিজেই বলেছেন, “এই চিঠি শতভাগ চূড়ান্ত নয়,” অর্থাৎ ডেডলাইন বাড়তে পারে। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের উইলিয়াম অ্যালান রেইনশ-এর মতে, হুমকি স্পষ্ট করলেই— ডেডলাইন টেনে দিলেই—চুক্তির জন্য চাপ আরও বৃদ্ধি পাবে।

China accuses US of bullying with Trump tariffs

আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া

চীনের সরকারি ‘পিপলস ডেইলি’ পত্রিকা ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে “বুলিং” আখ্যা দিয়েছে এবং “কেবল সংলাপ ও সহযোগিতা”কেই সমাধান মনে করেছে। মালয়েশিয়া আশা করছে যে ইলেকট্রনিক শিল্পসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর জন্য তারা নিম্ন হারে শুল্ক আরোপে সতর্ক পদক্ষেপ নিতে পারবে। ইন্দোনেশিয়ায় শুল্ক বৃদ্ধির অর্থনীতিতে বড় ঝুঁকি নয়—মোট রপ্তানির মাত্র ৩% যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক। তবে গার্মেন্টস, ফার্নিচার ও অটোপার্টসের মতো শ্রমনির্ভর খাতে প্রভাব পড়তে পারে।

ভবিষ্যতের দিকে

জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, মায়ানমার ও লাওসের নেতারা ইতোমধ্যেই আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ১ আগস্টের একের পর এক ডেডলাইন আসছে; তারপর পরিস্থিতি কী হবে—শুল্ক বাড়বে নাকি পুনরায় স্থগিত হবে—এখানে ট্রাম্পের হতাশামিশ্রিত নীতি লুকিয়ে আছে। একই সময়ে ভারতের সাথেও ‘মিনি চুক্তি’ হওয়া-না-ওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। এশিয়ার ব্যবসায়িক মহল ইতোমধ্যেই শক্তিশালী প্রতিকূলতার মোকাবিলায় সরবরাহ শৃঙ্খল পুনর্গঠন করতে ব্যস্ত।

ট্রাম্পের শুল্ক চিঠি এশিয়াকে ১ আগস্টের মধ্যে চুক্তি করতে চাপ দিচ্ছে

০৮:৩৪:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

ভূমিকা

গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে একতরফাভিত্তিক শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন,তা কার্যকর করার বিষয়ে এশিয়ার বিভিন্ন মিত্রদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, লাওস ও মায়ানমারের মতো দেশগুলোকে ১ আগস্টের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি হয়নি অর্থাৎ না হলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে।

পাঠানো অস্বস্তিকর চিঠি

প্রথম দফায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো ইশিবা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি লি জে-মিয়ং-এর কাছে জানানো হয়েছে যে তাদের দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে—ওয়াশিংটন এমনটাই জানিয়েছে। এর পরই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকেও প্রায় একই ধরনের চিঠি পৌঁছেছে।

Trump sets 25% tariffs on Japan and South Korea, and new import taxes on 12 other nations

দেশ অনুযায়ী শুল্কের হার

  • মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া: যথাক্রমে ২৫% ও ৩২%
  • থাইল্যান্ড: ৩৬%
  • লাওস ও মায়ানমার: ৪০%
  • কম্বোডিয়া: ৩৬% (আগের ৪৯%-এর পরিবর্তে কম)

সিঙ্গাপুর, ভারত ও তাইওয়ান এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো নোটিশ পায়নি।

ক্ষেত্রভিত্তিক শুল্ক

অটোমোবাইল পণ্যে ২৫% এবং স্টিল–অ্যালুমিনিয়ামে ৫০% শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। পাশাপাশি, অন্য কোনো দেশে তৈরি হলেও আমেরিকায় সরাসরি ভোগ্যপণ্য হিসেবে পাঠানো পণ্যগুলোর ওপর আরও উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ হতে পারে। যদি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক আরোপ হয়, তাহলে “জবাবী ব্যবস্থা” নেওয়ার হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ডেডলাইনে শিথিলতার ইঙ্গিত

ট্রাম্প নিজেই বলেছেন, “এই চিঠি শতভাগ চূড়ান্ত নয়,” অর্থাৎ ডেডলাইন বাড়তে পারে। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের উইলিয়াম অ্যালান রেইনশ-এর মতে, হুমকি স্পষ্ট করলেই— ডেডলাইন টেনে দিলেই—চুক্তির জন্য চাপ আরও বৃদ্ধি পাবে।

China accuses US of bullying with Trump tariffs

আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া

চীনের সরকারি ‘পিপলস ডেইলি’ পত্রিকা ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে “বুলিং” আখ্যা দিয়েছে এবং “কেবল সংলাপ ও সহযোগিতা”কেই সমাধান মনে করেছে। মালয়েশিয়া আশা করছে যে ইলেকট্রনিক শিল্পসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর জন্য তারা নিম্ন হারে শুল্ক আরোপে সতর্ক পদক্ষেপ নিতে পারবে। ইন্দোনেশিয়ায় শুল্ক বৃদ্ধির অর্থনীতিতে বড় ঝুঁকি নয়—মোট রপ্তানির মাত্র ৩% যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক। তবে গার্মেন্টস, ফার্নিচার ও অটোপার্টসের মতো শ্রমনির্ভর খাতে প্রভাব পড়তে পারে।

ভবিষ্যতের দিকে

জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, মায়ানমার ও লাওসের নেতারা ইতোমধ্যেই আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ১ আগস্টের একের পর এক ডেডলাইন আসছে; তারপর পরিস্থিতি কী হবে—শুল্ক বাড়বে নাকি পুনরায় স্থগিত হবে—এখানে ট্রাম্পের হতাশামিশ্রিত নীতি লুকিয়ে আছে। একই সময়ে ভারতের সাথেও ‘মিনি চুক্তি’ হওয়া-না-ওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। এশিয়ার ব্যবসায়িক মহল ইতোমধ্যেই শক্তিশালী প্রতিকূলতার মোকাবিলায় সরবরাহ শৃঙ্খল পুনর্গঠন করতে ব্যস্ত।