প্রথম আর্যভট বর্গ ও ঘনের সংজ্ঞা পাটীগণিতীয় পদ্ধতির পাশাপাশি জ্যামিতিক পদ্ধতিও দিয়েছেন।
মূল শব্দটির সমার্থক ‘পদ’ শব্দটিও ভারতীয়রা ব্যবহার করেছেন, এবং এটি প্রথম আর্যভট (৪৯৯ খ্রীঃ) ছাড়া প্রত্যেকেই তাঁদের গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। পণ্ডিতেরা বহু গবেষণার পর মন্তব্য করেন ‘মূল’ শব্দটি ‘পদ’ শব্দ থেকে প্রাচীন।
সংস্কৃত এবং পালি ভাষায় পদের অর্থ পা (step), অংশ, পাশ (side) প্রভৃতি। মনে হয় দাবা খেলার একটী বর্গম্বর থেকে পাশ শব্দটি এবং জমির অংশ প্রভৃতি থেকে অংশ শব্দটি উদ্ভূত হয়েছে। মূল শব্দটি আরও ব্যাপক অর্থ বহন করে। যেমন মূল শব্দের অর্থ ভিত্তি, ভূমি, কারণ, ধার (edge) প্রভৃতি। যাই হোক (মূল এবং পদ শব্দ দুটী নিয়ে ডঃ বিভূতিভূষণ দত্ত ব্যাপক আলোচনা করেছেন এবং সেই আলোচনা
অত্যন্ত তথ্যপূর্ণ ও গবেষণামূলক হওয়ায় আমরা এখানে সামান্য কিছু উল্লেখ করে পাঠকদের উক্ত প্রবন্ধটি দেখতে অনুরোধ করি।
প্রথম আর্যভট বর্গ ও ঘনের সংজ্ঞা পাটীগণিতীয় পদ্ধতির পাশাপাশি জ্যামিতিক পদ্ধতিও দিয়েছেন। যেমন সমচতুরস্র বর্গ, সমদ্বাদশস্র ঘন প্রভৃতি তিনি তাঁর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। সুতরাং বর্গের মূল নিশ্চয়ই বর্গচিত্র থেকে এবং ঘনের মূল ঘনচিত্র থেকে এসেছে। প্রথম আর্যভটের পর এভাবে ব্রহ্মগুপ্ত, শ্রীধর, মহাবীর, দ্বিতীয় ভাস্করাচার্য প্রমুখ পরবর্তীকালের ভারতীয় গণিতবিদরা দিতে পারেন নি।
অবশ্য ব্রাহ্মস্ফুটসিদ্ধান্তের ভাগ্নকার ও টীকায় পৃথুদকস্বামী এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। ডঃ দত্ত দেখিয়েছেন, মহম্মদ ইবন মুসা এ সম্পর্কে যা বলেছেন তা প্রথম আর্যভটের পুনরাবৃত্তি। যাই হো’ক সমস্ত কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার ফলে আমরা বলতে পারি ভারতীয় মূল শব্দটির উপর আরবীয় jadhr শব্দটির প্রভাব নেই।
(চলবে)
প্রদীপ কুমার মজুমদার 



















