সমকালের একটি শিরোনাম “বৃষ্টি-ঢলে উপকূল ও নিম্নাঞ্চল বিপর্যস্ত”
টানা ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ২১টি জেলায় ৭২ হাজার ৭৬ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত। মাঠের আউশ ধান, আমনের বীজতলা, পাট, শাকসবজি, ফলবাগান, পানসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে ডুবে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য— কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা।
পরিস্থিতি সবচেয়ে উদ্বেগজনক কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ফেনীতে। জেলাগুলোয় বৃষ্টির তীব্রতা ও সেচ নিষ্কাশন ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে জলাবদ্ধতা বেশি দেখা দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় বলছে, এলাকাগুলোয় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত আউশ ধান ও আমনের বীজতলা। আউশ ধান ৪৪ হাজার ৬৬২, আমন বীজতলা ১৪ হাজর ৩৯৩, শাকসবজি ৯ হাজার ৬৭৩, বোনা আমন ২৯৭, পাট ১৩৫, কলা ১১৪, পেঁপে ২৯৩, পান ৩৮৭, মরিচ ১০৪ এবং ২৮১ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন তরমুজ ক্ষতিগ্রস্ত। মোট ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ৭২ হাজার ৭৬ হেক্টর। বিশেষভাবে কুমিল্লার ১১ হাজার ৫৯০ হেক্টর, নোয়াখালীর ৭ হাজার ৮০৬ হেক্টর এবং ফেনীর ১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বৃষ্টিপাত আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
অস্থায়ী জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় বেশি ঝুঁকিতে পড়েছে আমনের বীজতলা। ফসল যদি বেশি দিন ডুবে থাকে, তবে বীজতলা পুনরায় তৈরি করতে হবে, যা শস্যচক্র ও উৎপাদনে প্রভাব ফেলবে।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “এসএসসির ফলাফল: ১৫ বছরে পাসের হার সর্বনিম্ন”
টানা প্রায় দেড় দশক ধরে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার বেড়েছিল। ২০২১ সালে তা গিয়ে ওঠে রেকর্ড ৯৩ দশমিক ৬ শতাংশে। কিন্তু চলতি বছর সে ধারা সম্পূর্ণভাবে পাল্টে গেছে। এবার এসএসসি ও সমমানে পাসের হার মাত্র ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ, যা গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০১০ সালে পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ১৯ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার নয়টি সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এবার গড় পাসের হার গত বছরের চেয়ে ১৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ কম। গত বছর গড় পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মূলত তিনটি কারণে এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে। এগুলো হলো গণিত ও ইংরেজিতে পাস করতে না পারা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বোর্ডের ফল বিপর্যয় এবং কেন্দ্র ব্যবস্থাপনায় কড়াকড়ি আরোপ ও ‘যথাযথভাবে’ খাতা মূল্যায়নের উদ্যোগ।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির।
গণিত ও ইংরেজির প্রভাব ফলে
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবার গণিত ও ইংরেজিতে খারাপ ফল করেছে শিক্ষার্থীরা। প্রায় ২৪ শতাংশ শিক্ষার্থী গণিতে পাস নম্বর তুলতে পারেনি। সব বোর্ড মিলিয়ে গণিতে পাস করেছে ৭৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। যেসব বোর্ড এ বছর পাসের হারে পিছিয়ে রয়েছে, সেসব বোর্ডের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি খারাপ করেছে গণিতেই।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “নির্বাচন কবে, নির্ভর করছে ঐকমত্য প্রতিবেদনের ওপর”
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে বলে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে এক যৌথ বিবৃতিতে যে ঘোষণা এসেছিল, তার বাস্তবায়ন হবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদন বা জুলাই সনদের ভিত্তিতে।
গতকাল বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সঙ্গে এক বৈঠকে এমনটা জানিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে লিয়াজোঁর দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। কোন কোন জায়গায় আলোচনা আটকে যাচ্ছে, তা–ও জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা।
মনির হায়দারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাঁদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানায়, আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা কয়েকটি সংস্কারের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, ভবিষ্যতে কোনো দল চাইলেই যাতে সংবিধান পরিবর্তন করে ফেলতে না পারে, সে ধরনের বিধান এবং নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। এসব সংস্কার নিশ্চিত করেই নির্বাচন করার পক্ষে মত দেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, সংবিধান সংশোধন পদ্ধতি এবং নারী আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের কয়েক দফা আলোচনা হলেও এখন পর্যন্ত ঐকমত্য হয়নি। এসব ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের আপত্তি আছে।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “চট্টগ্রাম বন্দরের আইসিডি ইয়ার্ডে কনটেইনার জট”
ওয়াগন ও ইঞ্জিন সংকটে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রতিদিন ঢাকা ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোতে (আইসিডি) প্রয়োজনীয়সংখ্যক কনটেইনার পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের আইসিডি ইয়ার্ডে দ্রুত বড় কনটেইনার জটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত আট দিনে রেলপথে দৈনিক গড়ে মাত্র ৬৮ একক কনটেইনার ঢাকায় পাঠানো গেছে। এতে যেমন ব্যাহত হচ্ছে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম, তেমনি বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। ট্রেনে কনটেইনার পরিবহনের দীর্ঘসূত্রতায় জাহাজ থেকে খালাস করা পণ্য ঢাকার কমলাপুর ডিপোতে পৌঁছতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ১২-১৫ দিন। ফলে আমদানিকারকদের পণ্য খালাসে মারাত্মক দেরি হচ্ছে, বাড়ছে খরচ ও ঝুঁকি। বর্তমানে বন্দর আইসিডি ইয়ার্ডের ধারণক্ষমতার পুরোটাই কনটেইনারে ভরপুর। এ পরিস্থিতিতে প্রতিদিন অন্তত ২০০ একক কনটেইনার পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় ওয়াগন ও ইঞ্জিন সরবরাহ নিশ্চিত করতে রেলওয়েকে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)।
বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, বন্দরের স্বাভাবিক ধারণক্ষমতা ৮৭৬ একক কনটেইনার। অথচ গত ৯ জুলাই বন্দরের ইয়ার্ডে কমলাপুর আইসিডিগামী কনটেইনার ছিল ৮৬৮ একক। এর বাইরে বহির্নোঙরে অবস্থানরত জাহাজে আরো প্রায় ৫০০ একক কনটেইনার রয়েছে। যেগুলোর গন্তব্যও কমলাপুর আইসিডি। কিন্তু ওয়াগন ও ইঞ্জিন সংকটে প্রতিদিনের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ন্যূনতম ২০০ একক কনটেইনার পরিবহন সম্ভব হচ্ছে না। ৯ জুলাই পর্যন্ত আগের ৮ দিনে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে মাত্র ৫৪৩ একক কনটেইনার, অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ৬৮ একক। অথচ পর্যাপ্ত ওয়াগন সরবরাহ পাওয়া গেলে এ সময়ে অতিরিক্ত আরো ১ হাজার ৫৭ একক কনটেইনার কমলাপুর আইসিডিতে পাঠানো সম্ভব হতো।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এখনই প্রতিদিন পর্যাপ্তসংখ্যক ওয়াগন সরবরাহ নিশ্চিত করা না হলে চট্টগ্রাম বন্দরের আইসিডি ইয়ার্ডে কনটেইনার জট ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। এতে ইয়ার্ডে তীব্র স্থান সংকট দেখা দিতে পারে। বন্দরে নোঙর করা জাহাজ থেকে কনটেইনার খালাসেও বিলম্ব ঘটবে, যা পুরো সরবরাহ চেইনকে ব্যাহত করবে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে আইসিডির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে প্রতিদিন অন্তত ২০০ একক কনটেইনার পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় ওয়াগন ও ইঞ্জিন সরবরাহ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।