০৭:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৩৭)

অচল সিকি

এদিককার রাস্তাগুলো জনপ্রাণীশূন্য। এখানে সেখানে দু’একটা শালশিমুল দম বন্ধ করে থমকে দাঁড়িয়ে আছে। মাঝে মাঝে এক একটা মিলিটারি গাড়ি রাজ্যির ধুলো উড়িয়ে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। এক একবার খুব ভালো লাগছিলো এনামুলের। ভগ্নস্তূপের আড়ালে দাঁড়িয়ে যেন অসংখ্য জ্ঞানীর আত্মা তাদের আশীর্বাদ করেছে, সৌভাগ্যের পথ বেয়ে তারা ফিরে চলেছে উজ্জ্বল আনন্দলোকের দিকে।

হয়তো এইসব রক্তিম ধুলোয় ঢাকা পথ ধরে একদিন জরা মৃত্যু পরিত্রাণের নিদারুণ চিন্তা নিয়ে বিহারে ফিরে গিয়েছে শান্ত মৌন ভিক্ষুর দল। এমনি করেই নিঃশব্দে সব মানুষ একদিন গল্প হয়ে যায়।

পাঁচ বছর পর আবার এলে কি দেখা যাবে? আকাশে চুল ছেড়ে দাঁড়িয়ে থাকা সামনের এই তালগাছটার হয়তো কোনো চিহ্নই থাকবে না। লেখার প্রবল ইচ্ছে নেশার মতো এনামুলের ভেতরে আবর্তিত হচ্ছিলো; শালবন বিহারের ভাঙা তৈজসপত্রগুলো যতো হাস্যকরই মনে হোক না কেন তার, সবকিছু মিলিয়ে একটা রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।

যে রাস্তা ধরে তারা এতোক্ষণ দ্রুত পায়ে হাঁটছিলো এবার সে প্রাচীন অশথ গাছের বীথি ঘেঁষে ধনুকের মতো বাঁক নিলো। বেশ পরিপাটি করে ছায়া বিছানো। ছায়ার ঢল নেমেছে এখানে। ঝিরঝিরে বাতাস আর বনটিয়ার তীব্র ডাক, ওরা দু’জন পরস্পরের মুখের দিকে তাকিয়ে হাসলো।

অশথ গাছের তলায় সারি সারি খড়ের চাল। সব জনশূন্য। চাঙ্গিনীর হাট।

জেবুন্নেসা বললে, ‘এইবার একটু জিরিয়ে নেই এখানে।’

‘বেশতো।’

‘কিন্তু মানুষ দেখছি না ধারেকাছে।’

‘ঐতো।’ এনামুল হাত বাড়িয়ে অশীতিপর এক বৃদ্ধকে দেখালো। গালে হাত দিয়ে সামনের ধু ধু রোদে-জ্বলা খোলা প্রান্তরের দিকে তাকিয়ে ঠায় বসে আছে বুড়োটা। ওরা গিয়ে সামনের বাঁশের বেঞ্চিতে বসলো।

 

 

দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু

প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৩৭)

১২:০০:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

অচল সিকি

এদিককার রাস্তাগুলো জনপ্রাণীশূন্য। এখানে সেখানে দু’একটা শালশিমুল দম বন্ধ করে থমকে দাঁড়িয়ে আছে। মাঝে মাঝে এক একটা মিলিটারি গাড়ি রাজ্যির ধুলো উড়িয়ে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। এক একবার খুব ভালো লাগছিলো এনামুলের। ভগ্নস্তূপের আড়ালে দাঁড়িয়ে যেন অসংখ্য জ্ঞানীর আত্মা তাদের আশীর্বাদ করেছে, সৌভাগ্যের পথ বেয়ে তারা ফিরে চলেছে উজ্জ্বল আনন্দলোকের দিকে।

হয়তো এইসব রক্তিম ধুলোয় ঢাকা পথ ধরে একদিন জরা মৃত্যু পরিত্রাণের নিদারুণ চিন্তা নিয়ে বিহারে ফিরে গিয়েছে শান্ত মৌন ভিক্ষুর দল। এমনি করেই নিঃশব্দে সব মানুষ একদিন গল্প হয়ে যায়।

পাঁচ বছর পর আবার এলে কি দেখা যাবে? আকাশে চুল ছেড়ে দাঁড়িয়ে থাকা সামনের এই তালগাছটার হয়তো কোনো চিহ্নই থাকবে না। লেখার প্রবল ইচ্ছে নেশার মতো এনামুলের ভেতরে আবর্তিত হচ্ছিলো; শালবন বিহারের ভাঙা তৈজসপত্রগুলো যতো হাস্যকরই মনে হোক না কেন তার, সবকিছু মিলিয়ে একটা রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।

যে রাস্তা ধরে তারা এতোক্ষণ দ্রুত পায়ে হাঁটছিলো এবার সে প্রাচীন অশথ গাছের বীথি ঘেঁষে ধনুকের মতো বাঁক নিলো। বেশ পরিপাটি করে ছায়া বিছানো। ছায়ার ঢল নেমেছে এখানে। ঝিরঝিরে বাতাস আর বনটিয়ার তীব্র ডাক, ওরা দু’জন পরস্পরের মুখের দিকে তাকিয়ে হাসলো।

অশথ গাছের তলায় সারি সারি খড়ের চাল। সব জনশূন্য। চাঙ্গিনীর হাট।

জেবুন্নেসা বললে, ‘এইবার একটু জিরিয়ে নেই এখানে।’

‘বেশতো।’

‘কিন্তু মানুষ দেখছি না ধারেকাছে।’

‘ঐতো।’ এনামুল হাত বাড়িয়ে অশীতিপর এক বৃদ্ধকে দেখালো। গালে হাত দিয়ে সামনের ধু ধু রোদে-জ্বলা খোলা প্রান্তরের দিকে তাকিয়ে ঠায় বসে আছে বুড়োটা। ওরা গিয়ে সামনের বাঁশের বেঞ্চিতে বসলো।