অচল সিকি
গেট পার হয়ে লোকটা পেছনে পেছনে এগিয়ে এলো। বললে, ‘গতকাল আমেরিকার বার্বোন সাহেব খুশি হয়ে পাঁচ টাকা বখশিশ দিয়ে গিয়েছেন, আর এমনিতেও সকলে দেয়-‘
এনামুল বিরক্ত হলো। হ্যাংলামির একটা মাত্রা থাকা উচিত। এই দারোয়ান লোকটা চতুর ও লোভী ধরনের, মুখ দেখে বুঝতে পারে এনামুল। সে ভূক্ষেপ করলো না লোকটার কথায়।
কিন্তু দেরি করলো না জেবুন্নেসা। সে তার কুমিরের চামড়ার ব্যাগ থেকে পাঁচ টাকার একটা নোট বের করে বাড়িয়ে ধরলো। বললে, ‘আবার আমরা যখন আসবো তখন বেশি করে দেবো, এখন এই নাও।’
লম্বা সালাম ঠুকে লোকটা ফিরে গেল। বোঝা গেল খুব খুশি হয়েছে।
ভগ্নস্তূপের চতুর্দিকে ঘুরতে ঘুরতে ওরা অন্য প্রসঙ্গে ডুবে ছিলো, যা কিছুটা অসংলগ্ন। লোভী লোকটা কোথা থেকে উড়ে এসে মধুর আলাপের গায়ে নির্মম অস্ত্রাঘাত করে গেল। এই অতিরিক্ত বখশিশের ব্যাপারে খুশি হতে পারে না এনামুল। সে আড়চোখে জেবুন্নেসার দিকে তাকালো; এ কি উড়োনচণ্ডীপনা-ভাবখানা এই রকম।
‘সত্যিই মায়া হয়! এই ভূতুড়ে জঙ্গলে একা একা বেচারা ইটপাথর সামলে পড়ে আছে!’
এনামুল বললে, ‘তোমার দেওয়া পাঁচটা টাকায় ওর বরাত খুলে যাবে-‘
‘তোমার মনটা ভারি ছোটো। এতো কিপটেমিও জানো। তবু যদি তোমার পকেট থেকে যেতো!’
বাদ দাও।’ এনামুল ফিক করে হেসে বললে, ‘যা বলছিলে তাই বলো।’