সমকালের একটি শিরোনাম “প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে দুই প্রস্তাব”
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে একমত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ সব দল। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ পদ্ধতিতে মতভিন্নতা রয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সংসদের প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষের সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হবেন প্রধান উপদেষ্টা।
বিএনপি এখনও প্রস্তাবের বিষয়ে অবস্থান জানায়নি। তবে অতীত বিতর্কের কারণে তত্ত্বাবধায়ক থেকে বিচার বিভাগকে দূরে রাখতে আপত্তি নেই দলটির। জামায়াত তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার আগের কাঠামো পুনর্বহাল চাইলেও এখন তারা নতুন প্রস্তাব দেবে। এনসিপি সংসদের নিম্নকক্ষের সর্বদলীয় কমিটি এবং উচ্চকক্ষের ভোটের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন করতে চায়। চলতি সপ্তাহের সংলাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে ঐকমত্য কমিশন।
২০১০ সালে প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করলেও পরবর্তী দুই নির্বাচন এ ব্যবস্থায় হওয়ার পরামর্শ ছিল রায়ের পর্যবেক্ষণে। বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক থেকে দূরে রাখার নির্দেশনা ছিল আদালতের। তবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাই বাতিল করে দেয়।
দলীয় সরকারের অধীনে পরের তিন নির্বাচন ছিল বিতর্কিত। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর, ডিসেম্বরে হাইকোর্ট পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতার মামলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো আখ্যা দেয়। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনায় বিএনপি ও জামায়াতের আবেদন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
ফিরছে তত্ত্বাবধায়ক, দুই ফর্মুলা
সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রস্তাব করেছিল– রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, সংসদের উভয় কক্ষের স্পিকার ও বিরোধীদলীয় ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা এবং সরকারি ও প্রধান বিরোধী দল ব্যতীত অন্য দলের একজন সদস্যকে নিয়ে গঠিত ৯ সদস্যের জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) নিয়োগ দেবে প্রধান উপদেষ্টা।
তবে বিএনপি এনসিসি গঠনে সায় দেয়নি। ফলে, গত বৃহস্পতিবারের সংলাপে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সংসদের মেয়াদ অবসানের ১৫ দিন পূর্বে এবং মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙে গেলে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে।
আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে অনির্দিষ্টকালীন ছুটিতে পাঠানো হলো পুতুলকে”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের (এসইএআরও) পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে গতকাল শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা। এর চার মাস আগে দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে।
জেনেভাভিত্তিক স্বাধীন সাংবাদিকদের নেটওয়ার্ক হেলথ পলিসি ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. তেদ্রোস আধানম ঘেব্রেইসুস সংস্থার কর্মীদের এক সংক্ষিপ্ত অভ্যন্তরীণ ই-মেইলে জানান, সায়মা ওয়াজেদ গতকাল শুক্রবার (১১ জুলাই) থেকে ছুটিতে থাকবেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক ড. ক্যাথরিনা বেম ‘অফিসার ইন চার্জ’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। বেম ১৫ জুলাই নয়াদিল্লির এসইএআরও অফিসে যোগ দেবেন বলেও ই-মেইলে উল্লেখ করা হয়।
সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো তাঁর আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োগ পাওয়ার প্রচেষ্টাকে ঘিরে। সায়মা ওয়াজেদ ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে তখন থেকেই অভিযোগ ছিল, তাঁর প্রভাবশালী মা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ কন্যার পক্ষে প্রভাব খাটান এবং এ কারণেই সায়মা ওই পদে নির্বাচিত হন।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক চলতি বছরের জানুয়ারিতে তদন্ত শুরু করে। দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, সায়মা ওয়াজেদ আঞ্চলিক পরিচালক পদে প্রার্থী হওয়ার সময় তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ভুয়া তথ্য দেন। এতে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৮ ধারা (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি) ও ৪৭১ ধারা (জাল নথিপত্র ব্যবহার) লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ ছাড়া, সায়মা ওয়াজেদ তৎকালীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) (বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) তাঁর একটি ‘অনারারি’ পদ আছে বলে দাবি করেছিলেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেটি অস্বীকার করেছে। এই ভূমিকা ব্যবহার করে তিনি ডব্লিউএইচও—এর পদ নিশ্চিত করেন বলে দুদকের অভিযোগ। দুদকের উপপরিচালক আখতারুল ইসলাম নথিতে এসব অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক শর্তের চাপে বাংলাদেশ, আলোচনা চলবে”
অতিরিক্ত গোপনীয়তা, সাফল্যের আশাবাদ এবং আরো আলোচনার উপর জোর দিয়ে গতকাল বিকেলে ওয়াশিংটন ডিসিতে শেষ হলো যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ তিনদিনব্যাপী ট্যারিফ আলোচনা। গত তিনদিন অধিকাংশ ইস্যুতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র একমত হয়েছে জানিয়ে চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিরবিচ্ছিন্ন আশাবাদ ব্যক্ত করা হলেও গতকাল ট্যারিফ আলোচনার তৃতীয় ও শেষ দিনে কোনোরকম ঐক্যমত্য ছাড়াই শেষ হয়েছে বাংলাদেশের বাণিজ্যবিষয়ক হাই-ভোল্টেজ মিশন।
ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা গতকাল বিকেলে মানবজমিনের সঙ্গে আলোচনায় জানান, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য টিমের মধ্যে চলমান তিনদিনব্যাপী আলোচনা আজ বিকেলে শেষ হয়েছে। আরো আলোচনার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে উভয় পক্ষ, যা খুব শীঘ্রই শুরু হবে। প্রেস মিনিস্টার আরও বলেন, নতুন আলোচনা কি মুখোমুখি হবে না কি ভার্চ্যুয়ালি, এবং সফররত বাণিজ্য টিম কি দেশে চলে যাবেন না কি নতুন আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে থেকে যাবেন-তা তখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
গত তিন দিনের ট্যারিফ আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অধিকাংশ বিষয়ে একমত হয়েছে বলে সরকারের তরফ থেকে প্রতিদিনই জানানো হয়েছে, ঠিক কোন কোন বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়নি বা যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি ? জানতে চাইলে প্রেস মিনিস্টার বলেন, এ বিষয়েগুলো প্রকাশ্যে আলোচনার জন্য ট্রাম্প প্রশাসন থেকে বারণ আছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র তার জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় একেক দেশের সঙ্গে একেক নিয়মে আলোচনা করছে-যা খুবই স্পর্শকাতর এবং গোপনীয়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার-এর আমন্ত্রণে ট্যারিফ বিষয়ে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার জন্য বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল গত ৯ জুলাই থেকে তিনদিন যাবৎ যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে আরও রয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী, এ ছাড়া ঢাকা থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ প্রথম পর্যায়ের ট্যারিফ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় বিগত ২৭শে জুন।
এদিকে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক নীতি নির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র চায় যে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লেবেল পেতে হলে বাংলাদেশে প্রস্তুত পোশাকপণ্যে ন্যূনতম ৪০% স্থানীয় মূল্য সংযোজন থাকতে হবে। তিনি বলেন, শুল্ক আলোচনার মূল সংকট হলো ‘রুলস অব অরিজিন’, যার অধীনে মার্কেটে প্রবেশে ৪০% স্থানীয় মূল্য সংযোজন প্রয়োজন। এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ হলো বাংলাদেশ চীনা কাঁচামালের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল, যা চীনের অর্থনৈতিক প্রভাব হ্রাসে আমেরিকার বৃহত্তর কৌশলের অংশ। এ ছাড়া শ্রম অধিকার বিশেষ করে অনানুষ্ঠানিক এবং সাব-কন্ট্রাক্টিং পদ্ধতিতে পরিচালিত গার্মেন্ট কারখানাগুলোতে শিশু শ্রম নির্মূলে কিছু অগ্রগতি সত্ত্বেও বেশ কিছু অবশিষ্ট ঝুঁকি রয়ে গেছে, যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের অস্বস্তি রয়েছে।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ীকে নৃশংস খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ৪”
রাজধানীর পুরান ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে দিনদুপুরে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনায় পুলিশ ও র্যাব অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে দুজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল রাজধানী ও কেরানীগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতারের পর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. জুয়েল রানা দুজনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি গ্রেফতার দুজনকে আজীবন বহিষ্কারাদেশ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুবদল।
প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই তানভীর মোর্শেদ চৌধুরী জানান, লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ নামের এ ভাঙারি ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় তার বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। আর পুলিশ দায়ের করেছে অস্ত্র মামলা। হত্যা মামলায় মাহমুদুল হাসান মহিনের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আর অস্ত্র মামলায় তারেক রহমান রবিনের দুইদিনের রিমান্ড দেয়া হয়েছে।
এর আগে হত্যা মামলায় কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর নাসির উদ্দিন ও একই থানার এসআই মো. মনির আসামি মহিনের ১০ দিন ও রবিনের পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে জামিন আবেদন করেন। শুনানির পর মহিনের পাঁচদিন ও রবিনের দুইদিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত, যা গতকাল থেকে কার্যকর হয়।
নিহত সোহাগের বন্ধু মামুনের বর্ণনা অনুযায়ী, দুই-তিন মাস ধরে মহিন প্রতি মাসে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করত সোহাগের কাছ থেকে। সোহাগ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রায় দুই মাস আগে দোকানের সামনে এসে হুমকি দিয়ে যায়। পরে বুধবার রাতে সোহাগকে একা পেয়ে মহিনসহ চার-পাঁচজন মিলে তাকে পাথর দিয়ে আঘাত করে এবং উলঙ্গ করে নির্মমভাবে মারধর করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আমরা কেউ ভয়ে এগিয়ে যেতে পারিনি, কারণ মহিন চকবাজার থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিল। তার বিরুদ্ধে মিটফোর্ড হাসপাতালের ফুটপাত ও কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সুপারিশ করে চাকরি দেয়ার কথা শোনা যায়।