১১:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৩৫)

উর্দুতে তিনি মীর তকী মীরের রচনাভঙ্গি অবলম্বন করেন। শেষ সময় তিনি ‘নাত’ রচনার প্রতি ঝুঁকে পড়েন।

খাজা আবদুল গাফফার আখতার (মৃত্যু ১৮৭৯]

নওয়াব আবদুল গণির চাচাতো ভাই খাজা আবদুল গফুরের পুত্র আবদুল গাফফার। ফার্সি ভাষায় তিনি ‘ওফা’ এবং উর্দু ভাষায় ‘আখতার’ (গ্রহ) ছদ্মনামে লিখতেন। গালিবের শিষ্য ছিলেন এবং লিখেছিলেন “আখতার যখন এই গান নিয়ে দিল্লি যাবে, তখন গালিবও তাঁর প্রশংসা করবেন।”

তায়েশ লিখেছিলেন, “আখতারের ফার্সি কাব্য অত্যন্ত নির্মল, সাবলীল এবং সেগুলো কবি গালিবের লেখনী ভঙ্গিতে রচিত। উর্দুতে তিনি মীর তকী মীরের রচনাভঙ্গি অবলম্বন করেন। শেষ সময় তিনি ‘নাত’ রচনার প্রতি ঝুঁকে পড়েন। তাঁর অনেক নাতিয়া গান জনপ্রিয়।” তাঁর ফার্সি নাতের দুটি লাইন অনুবাদ করেছেন কানিজ-ই বাতুল-

‘হে প্রাণবন্ত রূপ, মনের চিকিৎসা ও মনের আশ্রয়স্থল
হে শেষ নবী, হে দীনের শিরোমণি, হে ঈমানের উৎস।

খাজা আমীরুল্লাহ

খাজা মোহাম্মদ আমীরুল্লাহ ঢাকার নবাব পরিবারের সদস্য। নবাব আবদুল গণির সৎ ভাই ছিলেন তাঁর পিতা খাজা আবদুল হাকিম। নবাব বাড়ির গোল তালাওর পাশে ছিল তাঁদের অট্টালিকা যা ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে যায়। আমীরুল্লাহ উর্দু আরবি বাংলা ইংরেজি ও ফারসি ভাষা জানতেন। শিকার ভালোবাসতেন ও নবাব পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে রেস খেলতেন। ১৮৮৪ সালে ঢাকা মিউনিসিপালিটিতে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আনন্দ রায় হন প্রথম আমীরুল্লাহ ভাইস নির্বাচিত চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যান। তাঁর মৃত্যুর নির্দিষ্ট সময় জানা যায়নি তবে, ১৯ শতকের শেষার্ধে তিনি মারা যান।

খাজা বেদার বখত বেদার [১৮৮৪-১৯৪২]

ঢাকার নবাব পরিবারের সদস্য। তিনিও ম্যাট্রিক পাশ করেছিলেন। দাগ দেহলভীর শিষ্য ছিলেন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাদু ও গোলদাস্তায় তাঁর কবিতা প্রকাশিত হতো। ঢাকার বেশ ক’জন উর্দু কবি তাঁকে ওস্তাদ হিসেবে মানতেন। কানিজ-ই বাতুল তার একটি কবিতার দুটি লাইন অনুবাদ করেছেন।

“হে বেদার প্রিয়ার পূজা করে

আমার সারাটা জীবন কাটলো

লোকজন কি আমাকে দেখে

মুসলমান মনে করছে।?’

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৩৪)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৩৪)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৩৫)

০৭:০০:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

উর্দুতে তিনি মীর তকী মীরের রচনাভঙ্গি অবলম্বন করেন। শেষ সময় তিনি ‘নাত’ রচনার প্রতি ঝুঁকে পড়েন।

খাজা আবদুল গাফফার আখতার (মৃত্যু ১৮৭৯]

নওয়াব আবদুল গণির চাচাতো ভাই খাজা আবদুল গফুরের পুত্র আবদুল গাফফার। ফার্সি ভাষায় তিনি ‘ওফা’ এবং উর্দু ভাষায় ‘আখতার’ (গ্রহ) ছদ্মনামে লিখতেন। গালিবের শিষ্য ছিলেন এবং লিখেছিলেন “আখতার যখন এই গান নিয়ে দিল্লি যাবে, তখন গালিবও তাঁর প্রশংসা করবেন।”

তায়েশ লিখেছিলেন, “আখতারের ফার্সি কাব্য অত্যন্ত নির্মল, সাবলীল এবং সেগুলো কবি গালিবের লেখনী ভঙ্গিতে রচিত। উর্দুতে তিনি মীর তকী মীরের রচনাভঙ্গি অবলম্বন করেন। শেষ সময় তিনি ‘নাত’ রচনার প্রতি ঝুঁকে পড়েন। তাঁর অনেক নাতিয়া গান জনপ্রিয়।” তাঁর ফার্সি নাতের দুটি লাইন অনুবাদ করেছেন কানিজ-ই বাতুল-

‘হে প্রাণবন্ত রূপ, মনের চিকিৎসা ও মনের আশ্রয়স্থল
হে শেষ নবী, হে দীনের শিরোমণি, হে ঈমানের উৎস।

খাজা আমীরুল্লাহ

খাজা মোহাম্মদ আমীরুল্লাহ ঢাকার নবাব পরিবারের সদস্য। নবাব আবদুল গণির সৎ ভাই ছিলেন তাঁর পিতা খাজা আবদুল হাকিম। নবাব বাড়ির গোল তালাওর পাশে ছিল তাঁদের অট্টালিকা যা ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে যায়। আমীরুল্লাহ উর্দু আরবি বাংলা ইংরেজি ও ফারসি ভাষা জানতেন। শিকার ভালোবাসতেন ও নবাব পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে রেস খেলতেন। ১৮৮৪ সালে ঢাকা মিউনিসিপালিটিতে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আনন্দ রায় হন প্রথম আমীরুল্লাহ ভাইস নির্বাচিত চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যান। তাঁর মৃত্যুর নির্দিষ্ট সময় জানা যায়নি তবে, ১৯ শতকের শেষার্ধে তিনি মারা যান।

খাজা বেদার বখত বেদার [১৮৮৪-১৯৪২]

ঢাকার নবাব পরিবারের সদস্য। তিনিও ম্যাট্রিক পাশ করেছিলেন। দাগ দেহলভীর শিষ্য ছিলেন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাদু ও গোলদাস্তায় তাঁর কবিতা প্রকাশিত হতো। ঢাকার বেশ ক’জন উর্দু কবি তাঁকে ওস্তাদ হিসেবে মানতেন। কানিজ-ই বাতুল তার একটি কবিতার দুটি লাইন অনুবাদ করেছেন।

“হে বেদার প্রিয়ার পূজা করে

আমার সারাটা জীবন কাটলো

লোকজন কি আমাকে দেখে

মুসলমান মনে করছে।?’

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৩৪)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৩৪)