০১:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
আধুনিক জীবন ও উদারচিন্তা ভয়ের পরিবেশে: বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি: গমজাত পণ্যের দামের ওপর প্রভাব শয়ে শয়ে মুসলমানকে বেআইনিভাবে বাংলাদেশে তাড়াচ্ছে ভারত, বলছে হিউমান রাইটস ওয়াচ প্রতিদিন একটি রুমাল (পর্ব-৪২) রওশন জামিল — চলচ্চিত্র, মঞ্চ ও নৃত্যজগতের আলোকবর্তিকা ঢাকাসহ প্রধান জেলাগুলোতে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস ও সমুদ্র-বন্দরগুলোতে সতর্কতা বরিশালের পেয়ারা: আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হতে পারে গোপালগঞ্জের সহিংসতা: গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ও আসকের তদন্ত প্রতিবেদন বাংলাদেশের হারের বিশ্লেষণ: ঘরের মাঠে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের কাছে লজ্জাজনক পরাজয় আওয়ামী লীগ বিরোধিতাকে পুঁজি করেই কি রাজনীতি করতে চায় এনসিপি?

করতোয়া নদী: ইতিহাস, ব্যবসা, দখলদারিত্ব ও বর্তমান সংকট

প্রাচীন নদী করতোয়ার পরিচয়

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহাসিক নদী করতোয়া। ইতিহাসবিদদের মতে, করতোয়া নদীর বয়স প্রায় দুই হাজার বছরের বেশি। অনেক ঐতিহাসিক দলিল ও পুরাকীর্তিতে এ নদীর উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রাচীন পুন্ড্রবর্ধন বা পুন্ড্রনগরের (বর্তমান মহাস্থানগড়) উত্থান ও বিকাশে করতোয়া নদী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। নদীটি একসময় ছিল প্রবল স্রোতসম্পন্ন ও সমৃদ্ধ নৌপথ। পুন্ড্রনগর তথা বর্তমান বগুড়া অঞ্চলের কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও নগরায়ণে করতোয়া ছিল প্রাণসঞ্চারী একটি জলস্রোত।

করতোয়া ও পুন্ড্রনগর: গঠন ও সংযোগ

মহাস্থানগড় তথা প্রাচীন পুন্ড্রনগর করতোয়া নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল বলেই এই জনপদ এক সময় পূর্ব ভারতের অন্যতম সমৃদ্ধ নগরী হয়ে উঠেছিল। করতোয়া নদীর মাধ্যমে তৎকালীন সময়ের মানুষ অন্যান্য নদীর সাথে যোগাযোগ বজায় রাখত। করতোয়া থেকে তিস্তা, যমুনা, আর উত্তরাঞ্চলের ছোট-বড় নদনদী যেমন নাগর, ভরাট, আত্রাই প্রভৃতির সঙ্গে সংযুক্ত ছিল এই জলপথ। করতোয়া সেই সময় একাধারে কৃষিকার্য, জাহাজ চলাচল এবং ব্যবসায়িক যোগাযোগের বাহন ছিল। এই নদীপথে চাল, গম, কাপড়, মশলা, মাটি, ধাতব সামগ্রীসহ নানা পণ্য আদান-প্রদান হতো।

করতোয়া নদীর মৎস্যসম্পদ: অতীত ও বর্তমান

করতোয়া নদীতে একসময় রুই, কাতলা, মৃগেল, বোয়াল, শোল, গজার, আইড়, পাবদা, পুটি, টেংরা, চিংড়ি, কাচকি প্রভৃতি বিভিন্ন মাছ পাওয়া যেত। বিশেষ করে বর্ষাকালে নদীতে মাছের ছড়াছড়ি থাকত এবং আশপাশের মৎস্যজীবী পরিবারগুলো করতোয়া নদীর উপর নির্ভর করেই জীবিকা নির্বাহ করত। নদীর মাছ স্থানীয় হাটে বিক্রি হতো এবং অনেক সময় ঢাকা ও কলকাতার বাজারেও রপ্তানি করা হতো। কিন্তু বর্তমানে করতোয়া নদীতে পানিপ্রবাহ হ্রাস পাওয়ায় ও দূষণ বেড়ে যাওয়ায় মাছের উৎপাদন অনেক কমে গেছে। এখন কিছু মৌসুমি পুটি ও টেংরা ছাড়া তেমন মাছ পাওয়া যায় না।

করতোয়া নদীর দখল ও দুর্দশা

উত্তরবঙ্গের অন্যান্য নদীর মতো করতোয়াও আজ দখল, দূষণ ও সংকোচনের শিকার। বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, বগুড়া শহর এলাকায় প্রায় ৭০ শতাংশ নদীর পাড়ই কোনো না কোনো উপায়ে দখল হয়ে গেছে। প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় শিল্পপতি, ভূমি দস্যু ও কথিত উন্নয়ন প্রকল্পের আড়ালে গড়ে ওঠা বসতি এবং বাজারের কারণে নদীটি সরু হয়ে এসেছে। বিশেষ করে বগুড়া শহরের কেন্দ্রস্থল দিয়ে প্রবাহিত অংশটিতে নদী প্রায় হারিয়েই গেছে। দুই পাড়ে মাটি ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে ভবন, দোকানপাট, বাণিজ্যিক স্থাপনা ও গুদামঘর।

নদীর মূল গতিপথ পরিবর্তন করে নদীকে আটকে রাখা হয়েছে। বহু জায়গায় বাঁধ দিয়ে কিংবা ড্রেন বানিয়ে নদীকে ড্রেনেজে পরিণত করা হয়েছে। জলপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় করতোয়া এখন আর প্রবাহমান নয়; বরং বর্ষা মৌসুমে স্বল্প জলধারা ছাড়া বছরের অধিকাংশ সময় এটি শুষ্ক।

অপ্রত্যাশিত ও অপরিকল্পিত উন্নয়নের দায়

করতোয়া নদীর বর্তমান সংকটের পেছনে সবচেয়ে বড় দায় নিয়ন্ত্রণহীন ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের। বিশেষ করে ১৯৯০-এর দশকের পর বগুড়া শহরের জনসংখ্যা ও অবকাঠামো দ্রুত বেড়ে যায়। এই সময়ে পরিকল্পনা ছাড়াই নদীর পাড়ে গড়ে তোলা হয় রাস্তা, বাজার, বসতি এবং পৌরসভার উন্নয়ন প্রকল্প। কিন্তু কোনোটিই ছিল না নদী সংরক্ষণ পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত। পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদফতর ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে করতোয়ার পাড়ে দখলদারিত্ব রোধ করা যায়নি।

করতোয়া নদীর বর্তমান অবস্থা

বর্তমানে করতোয়া নদী শুধুমাত্র বৃষ্টির সময় কিছু পানি ধারণ করে। নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও গতিপথ বিলীন হয়ে যাওয়ায় এটি মৃতপ্রায়। অনেক জায়গায় নদীকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। করতোয়া এখন আর নদী নয়; বরং এটি হয়ে গেছে একটি দীর্ঘ নর্দমা। সরকারি নথিতে নদী থাকলেও বাস্তবে তার অস্তিত্ব সংকটাপন্ন। করতোয়া রক্ষায় কোনো বড় সরকারি পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। মাঝে মাঝে স্থানীয় প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তা স্থায়ী ও কার্যকর কোনো ফল বয়ে আনেনি। নদী রক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনেও করতোয়া নদীকে ‘অত্যন্ত বিপন্ন’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

করতোয়া রক্ষায় সম্ভাব্য করণীয়

করতোয়া নদীকে পুনরুজ্জীবিত করতে হলে প্রাথমিকভাবে দরকার পুরো নদীপথের জরিপ এবং অবৈধ দখলদারদের তালিকা প্রস্তুত। এরপর আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। পাশাপাশি দরকার নদীর উৎসস্থল থেকে মোহনা পর্যন্ত খনন ও পানি প্রবাহ পুনঃপ্রতিষ্ঠা। জলাশয় সংরক্ষণ আইন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও নদী রক্ষা নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়নই পারে করতোয়াকে তার প্রাণ ফিরিয়ে দিতে।

ইতিহাসকে রক্ষা করা

করতোয়া শুধু একটি নদী নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক জীবনরেখা। এই নদীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পুন্ড্রবর্ধনের ইতিহাস, বাঙালির ব্যবসা-বাণিজ্যের অতীত ও মৎস্যজীবী সংস্কৃতি। করতোয়া রক্ষা করা মানে উত্তরাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যকে রক্ষা করা। পরিকল্পিত উদ্যোগ, প্রশাসনিক সদিচ্ছা এবং জনসচেতনতার সমন্বয়ে করতোয়া নদীকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। না হলে ইতিহাসের পাতায় করতোয়া শুধু একটি নদীর নাম হয়ে থাকবে — বাস্তবের নয়, কেবল স্মৃতির।

আধুনিক জীবন ও উদারচিন্তা ভয়ের পরিবেশে: বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা

করতোয়া নদী: ইতিহাস, ব্যবসা, দখলদারিত্ব ও বর্তমান সংকট

০৭:০০:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

প্রাচীন নদী করতোয়ার পরিচয়

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহাসিক নদী করতোয়া। ইতিহাসবিদদের মতে, করতোয়া নদীর বয়স প্রায় দুই হাজার বছরের বেশি। অনেক ঐতিহাসিক দলিল ও পুরাকীর্তিতে এ নদীর উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রাচীন পুন্ড্রবর্ধন বা পুন্ড্রনগরের (বর্তমান মহাস্থানগড়) উত্থান ও বিকাশে করতোয়া নদী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। নদীটি একসময় ছিল প্রবল স্রোতসম্পন্ন ও সমৃদ্ধ নৌপথ। পুন্ড্রনগর তথা বর্তমান বগুড়া অঞ্চলের কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও নগরায়ণে করতোয়া ছিল প্রাণসঞ্চারী একটি জলস্রোত।

করতোয়া ও পুন্ড্রনগর: গঠন ও সংযোগ

মহাস্থানগড় তথা প্রাচীন পুন্ড্রনগর করতোয়া নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল বলেই এই জনপদ এক সময় পূর্ব ভারতের অন্যতম সমৃদ্ধ নগরী হয়ে উঠেছিল। করতোয়া নদীর মাধ্যমে তৎকালীন সময়ের মানুষ অন্যান্য নদীর সাথে যোগাযোগ বজায় রাখত। করতোয়া থেকে তিস্তা, যমুনা, আর উত্তরাঞ্চলের ছোট-বড় নদনদী যেমন নাগর, ভরাট, আত্রাই প্রভৃতির সঙ্গে সংযুক্ত ছিল এই জলপথ। করতোয়া সেই সময় একাধারে কৃষিকার্য, জাহাজ চলাচল এবং ব্যবসায়িক যোগাযোগের বাহন ছিল। এই নদীপথে চাল, গম, কাপড়, মশলা, মাটি, ধাতব সামগ্রীসহ নানা পণ্য আদান-প্রদান হতো।

করতোয়া নদীর মৎস্যসম্পদ: অতীত ও বর্তমান

করতোয়া নদীতে একসময় রুই, কাতলা, মৃগেল, বোয়াল, শোল, গজার, আইড়, পাবদা, পুটি, টেংরা, চিংড়ি, কাচকি প্রভৃতি বিভিন্ন মাছ পাওয়া যেত। বিশেষ করে বর্ষাকালে নদীতে মাছের ছড়াছড়ি থাকত এবং আশপাশের মৎস্যজীবী পরিবারগুলো করতোয়া নদীর উপর নির্ভর করেই জীবিকা নির্বাহ করত। নদীর মাছ স্থানীয় হাটে বিক্রি হতো এবং অনেক সময় ঢাকা ও কলকাতার বাজারেও রপ্তানি করা হতো। কিন্তু বর্তমানে করতোয়া নদীতে পানিপ্রবাহ হ্রাস পাওয়ায় ও দূষণ বেড়ে যাওয়ায় মাছের উৎপাদন অনেক কমে গেছে। এখন কিছু মৌসুমি পুটি ও টেংরা ছাড়া তেমন মাছ পাওয়া যায় না।

করতোয়া নদীর দখল ও দুর্দশা

উত্তরবঙ্গের অন্যান্য নদীর মতো করতোয়াও আজ দখল, দূষণ ও সংকোচনের শিকার। বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, বগুড়া শহর এলাকায় প্রায় ৭০ শতাংশ নদীর পাড়ই কোনো না কোনো উপায়ে দখল হয়ে গেছে। প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, স্থানীয় শিল্পপতি, ভূমি দস্যু ও কথিত উন্নয়ন প্রকল্পের আড়ালে গড়ে ওঠা বসতি এবং বাজারের কারণে নদীটি সরু হয়ে এসেছে। বিশেষ করে বগুড়া শহরের কেন্দ্রস্থল দিয়ে প্রবাহিত অংশটিতে নদী প্রায় হারিয়েই গেছে। দুই পাড়ে মাটি ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে ভবন, দোকানপাট, বাণিজ্যিক স্থাপনা ও গুদামঘর।

নদীর মূল গতিপথ পরিবর্তন করে নদীকে আটকে রাখা হয়েছে। বহু জায়গায় বাঁধ দিয়ে কিংবা ড্রেন বানিয়ে নদীকে ড্রেনেজে পরিণত করা হয়েছে। জলপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় করতোয়া এখন আর প্রবাহমান নয়; বরং বর্ষা মৌসুমে স্বল্প জলধারা ছাড়া বছরের অধিকাংশ সময় এটি শুষ্ক।

অপ্রত্যাশিত ও অপরিকল্পিত উন্নয়নের দায়

করতোয়া নদীর বর্তমান সংকটের পেছনে সবচেয়ে বড় দায় নিয়ন্ত্রণহীন ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের। বিশেষ করে ১৯৯০-এর দশকের পর বগুড়া শহরের জনসংখ্যা ও অবকাঠামো দ্রুত বেড়ে যায়। এই সময়ে পরিকল্পনা ছাড়াই নদীর পাড়ে গড়ে তোলা হয় রাস্তা, বাজার, বসতি এবং পৌরসভার উন্নয়ন প্রকল্প। কিন্তু কোনোটিই ছিল না নদী সংরক্ষণ পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত। পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদফতর ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে করতোয়ার পাড়ে দখলদারিত্ব রোধ করা যায়নি।

করতোয়া নদীর বর্তমান অবস্থা

বর্তমানে করতোয়া নদী শুধুমাত্র বৃষ্টির সময় কিছু পানি ধারণ করে। নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও গতিপথ বিলীন হয়ে যাওয়ায় এটি মৃতপ্রায়। অনেক জায়গায় নদীকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। করতোয়া এখন আর নদী নয়; বরং এটি হয়ে গেছে একটি দীর্ঘ নর্দমা। সরকারি নথিতে নদী থাকলেও বাস্তবে তার অস্তিত্ব সংকটাপন্ন। করতোয়া রক্ষায় কোনো বড় সরকারি পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। মাঝে মাঝে স্থানীয় প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তা স্থায়ী ও কার্যকর কোনো ফল বয়ে আনেনি। নদী রক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনেও করতোয়া নদীকে ‘অত্যন্ত বিপন্ন’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

করতোয়া রক্ষায় সম্ভাব্য করণীয়

করতোয়া নদীকে পুনরুজ্জীবিত করতে হলে প্রাথমিকভাবে দরকার পুরো নদীপথের জরিপ এবং অবৈধ দখলদারদের তালিকা প্রস্তুত। এরপর আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। পাশাপাশি দরকার নদীর উৎসস্থল থেকে মোহনা পর্যন্ত খনন ও পানি প্রবাহ পুনঃপ্রতিষ্ঠা। জলাশয় সংরক্ষণ আইন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও নদী রক্ষা নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়নই পারে করতোয়াকে তার প্রাণ ফিরিয়ে দিতে।

ইতিহাসকে রক্ষা করা

করতোয়া শুধু একটি নদী নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক জীবনরেখা। এই নদীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে পুন্ড্রবর্ধনের ইতিহাস, বাঙালির ব্যবসা-বাণিজ্যের অতীত ও মৎস্যজীবী সংস্কৃতি। করতোয়া রক্ষা করা মানে উত্তরাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যকে রক্ষা করা। পরিকল্পিত উদ্যোগ, প্রশাসনিক সদিচ্ছা এবং জনসচেতনতার সমন্বয়ে করতোয়া নদীকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। না হলে ইতিহাসের পাতায় করতোয়া শুধু একটি নদীর নাম হয়ে থাকবে — বাস্তবের নয়, কেবল স্মৃতির।