অচল সিকি
‘এই যে আমার কোনো বাচ্চাকাচ্চা হচ্ছে না, ভেতরে ভেতরে তুমি নিশ্চয়ই-
বাধা দিয়ে এনামুল বললে, ‘ব্যস্ ব্যস্ ব্যস্’
‘আমাকে তুমি আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেও!’
‘কী আশ্চর্য! থামবে, না গুঁতো খাবে আমার?’
‘ঠাট্টা নয়, দেখতে দেখতে বছর ঘুরতে চললো, আমার কিন্তু ভারি ভয় করছে-‘
‘তুমি একটা যা-তা, ওসব কথা পরে হবে, আমি কি ভাবছি জানো?’
‘একবার যখন ঘুরে গেলে তখন এক-আধটা কবিতা না লিখে তুমি ছাড়বে না, এ আমি জানি। আমার মাথাতেও কিন্তু একটা আইডিয়া এসেছে। ভাবছি স্কুলের ম্যাগাজিনে শালবন বিহারের ওপর একটা আর্টিকেল লিখলে মন্দ হয় না’
এনামুল বললে, ‘আমাকে দিয়ে কারেকশান করিয়ে নিও, যে বিদ্যের জাহাজ!’
‘তবু তো তোমার মতো লোক ঠকানো কবিতা লিখি না?’
‘একবার চেষ্টা করেই দ্যাখো না লক্ষ্মীটি!’
‘কাজ নেই বাবা ঐসব পণ্ডশ্রমে। আমরা বোধহয় এসে গেছি। ওটা স্টেশনের সিগন্যাল না?’
এনামুল বললে, ‘তাইতো মনে হচ্ছে!’
‘যাক বাঁচা গেল। কষ্টটা মনে থাকবে অনেকদিন।’
এনামুল বললে, ‘পরে এই কষ্টটাই আনন্দ দেবে-‘
হঠাৎ জেবুন্নেসা আনন্দে চমকে উঠলো। ওর গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বললে, ‘খুব তো ভয় দেখিয়েছিলে যে ঐ আনিঘষা সিকিটা চালাতে পারবো না, বুড়ো কিন্তু টেরই পায় নি!’