যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন মূল্যস্ফীতির ইঙ্গিত ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার কমানোর খুব একটা সুযোগ দিচ্ছে না, আর সেপ্টেম্বরে তার আগে এই অবস্থার বদল ঘটার আশাও কম।
গত সপ্তাহে ফেডে আকস্মিক এক সফরের পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, ফেড শিগগিরই হার কমাতে পারে। তাঁর মনোনীত দুই বোর্ড সদস্য—ক্রিস্টোফার ওয়ালার ও মিশেল বোম্যান—এ সপ্তাহেই এমন ভোট দিতে পারেন বলে ইঙ্গিতও দিয়েছেন।
তবে বাজার এখনো এগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফিউচারস বাজার ইঙ্গিত করছে, বুধবারের বৈঠকে হার অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ এবং সেপ্টেম্বরে কমার সম্ভাবনা ৭০ শতাংশ। এমনকি এ বছর দু’বার হার কমার সম্ভাবনায়ও বাজার সন্দিহান।
বাণিজ্য–সম্পর্কিত অনিশ্চয়তা খানিকটা স্পষ্ট হবে এই শুক্রবারের সময়সীমা পেরোনোর পর, তবু আকারে মোট আমদানি শুল্ক বছরের শুরু থেকে এখনও প্রায় ২০ শতাংশ বেশি। এর পুরো প্রভাব পড়তে আরও সময় লাগবে।
এদিকে বাড়তি শুল্ক আর দুর্বল ডলার ইতোমধ্যে মূল্যচিত্রের ওপর চাপ দিচ্ছে। মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার ওপরে, আর দীর্ঘমেয়াদি বাজার প্রত্যাশাও জি–সেভেনের মধ্যে সর্বোচ্চ। ফেডের পছন্দের সূচক পিসিই–র খাদ্য ও জ্বালানি বাদ দেওয়া মূল হার শুক্রবার প্রকাশিত হবে; টানা দ্বিতীয় মাস ২.৭ শতাংশ থাকার আশঙ্কা।
ভোক্তা মূল্যস্ফীতির সাম্প্রতিক তথ্যে সীমিত শুল্কযুক্ত পণ্যে দাম বাড়ার লক্ষণ মিলেছে। উৎপাদক মূল্যস্ফীতি তুলনামূলক শান্ত হলেও তাতে আমদানি পণ্য ধরা পড়ে না। আর এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের জরিপে উৎপাদক ইনপুট মূল্য সূচক জুলাইয়ে ৬৪.৬–এ আছে, যেখানে ইউরোপে এ সূচক ৪৯.৯।
আয়–সিজনে শুল্ক–সংক্রান্ত তথ্য গোলমেলে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রথম প্রান্তিকে শুল্কের আগে ব্যাপক আগাম আমদানির কারণে দ্বিতীয় প্রান্তিকে খরচ নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। এছাড়া রাজনৈতিক চাপের ভয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান খোলাখুলিভাবে শুল্কজনিত ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলছে না।
সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতির দিক থেকে স্পষ্টতার ঘাটতি সেপ্টেম্বরে গিয়েও থাকতে পারে।
ফেডের দ্বৈত লক্ষ্যে চাকরি বাজারের অগ্রাধিকার থাকলেও সাম্প্রতিক সাপ্তাহিক বেকার–ভাতা আবেদন দৃঢ় শ্রমবাজারই দেখাচ্ছে। জুলাইয়ে বেতনভাতা প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমলেও বেকারত্ব ঐতিহাসিকভাবে নিম্ন, প্রায় ৪.২ শতাংশে থাকার কথা।
এ সপ্তাহের দ্বিতীয় প্রান্তিকের জিডিপি তথ্য বাণিজ্যজনিত প্রথম প্রান্তিকের ধীরগতির পরে মোট প্রবৃদ্ধি ২.৪ শতাংশে ফিরেছে বলে দেখাতে পারে।
ল্যাজার্ডের প্রধান কৌশলবিদ রন টেম্পল মনে করেন, ফেড এ বছর আর হার কমাবে না। তাঁর মতে, শুল্কের কারণে বছরের শেষে মূল্যস্ফীতি আবার বাড়বে, আর কঠোর অভিবাসননীতি মজুরি বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতিকে জোরালো করতে পারে—যা হার কমানোর যুক্তি খাটে না।
ফেড যদি তবুও হার কমানোর প্রস্তুতি দেখায়, তবে সেই সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করা কঠিনই হবে।