০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
‘গ্রিন ট্রি সাপ’—সবুজ পাতার আড়ালে লুকানো নীরব সৌন্দর্য আরব আমিরাতের আল আইন জাদুঘর—পাথর যুগ থেকে ইসলামি যুগের ঐতিহ্যের সেতুবন্ধন মিশরে সূচালো দাঁতওয়ালা ৮ কোটি বছর আগের সামুদ্রিক কুমিরের জীবাশ্ম আবিষ্কার আমেরিকার জন্মকথা—ইতিহাসের দ্বন্দ্ব, স্বাধীনতার গল্প ও মানবতার প্রতিচ্ছবি প্রযুক্তির অবক্ষয় ও পুনর্জাগরণের প্রশ্নে কোরি ডাক্টরোর নতুন দৃষ্টিভঙ্গি মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৫৫) দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যুতে আসিয়ান ঐক্যবদ্ধ কিস্তিতে কেনাকাটার নতুন যুগে তরুণ প্রজন্মের সহজ ঋণে গভীর ফাঁদ শ্রদ্ধাঞ্জলি: বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ হামিদুর রহমান এর ৫৪তম শাহাদাত বার্ষিকী সিরাজগঞ্জ কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু

শাংহাইয়ে অ্যামাজনের এআই গবেষণা ল্যাব বন্ধ

সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ

যুক্তরাষ্ট্রের ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন শাংহাইয়ে তাদের এআই ল্যাব বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেসের (AWS) মুখপাত্র ব্র্যাড গ্লাসার জানান, প্রতিষ্ঠানটির কাঠামো, অগ্রাধিকার ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য পর্যালোচনা করে কিছু দলের কিছু পদ বাদ দেওয়া হচ্ছে। কতজন কর্মী প্রভাবিত হবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। গ্লাসার বলেন, “আমরা সিদ্ধান্তটি খুব ভেবেচিন্তেই নিয়েছি এবং কর্মীদের রূপান্তরকালীন সময়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।”

কর্মীদের প্রতিক্রিয়া ও ল্যাবের অবদান

ল্যাবটি বন্ধের খবর নিশ্চিত হওয়ার আগেই শাংহাই এআই ল্যাবের অ্যাপ্লাইড সায়েন্টিস্ট ওয়াং মিনজি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাটে লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র-চীন কৌশলগত পরিবর্তনের কারণে শেষ বিদেশি AWS গবেষণা ল্যাবটিও বন্ধ হচ্ছে।” তিনি জানান, গত ছয় বছরে তার দল শূন্য থেকে গড়ে তুলেছে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ওপেন‑সোর্স গ্রাফ নিউরাল নেটওয়ার্ক ফ্রেমওয়ার্ক DGL, যা অ্যামাজনের ই‑কমার্স ব্যবসায় প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

অ্যামাজনের চীনে ধীরে ধীরে সরে আসা

গত কয়েক বছরে অ্যামাজন ধীরে ধীরে চীনে তাদের উপস্থিতি কমিয়েছে।

  • ২০১৯ সালে দেশীয় ই‑কমার্স প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেয়।
  • ২০২২ সালে চীন থেকে কিন্ডল ই‑রিডার সরবরাহ বন্ধ এবং ই‑বুক বিক্রি থামায়।

সম্প্রতি রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে AWS বিভাগে শত শত পদ ছাঁটাই হয়েছে; অ্যামাজন সতর্ক করেছে, এআই দ্রুত গ্রহণের ফলে কিছু চাকরি বিলুপ্ত হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র‑চীন প্রযুক্তি উত্তেজনার বিস্তার

শুধু অ্যামাজন নয়, অন্যান্য মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানও চীন থেকে কার্যক্রম সীমিত করছে।

  • মার্চে আইবিএম চীনে তাদের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ বন্ধ করে হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে।
  • একই মাসে মাইক্রোসফট শাংহাইয়ের এআই ল্যাব বন্ধ করে কিছু কর্মীকে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে স্থানান্তর করে।

চীনা কোম্পানির সরে যাওয়ার ধারা

যুক্তরাষ্ট্র‑চীন অনিশ্চয়তার মধ্যে কিছু চীনা প্রতিষ্ঠানও দেশ ছেড়ে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, এআই স্টার্ট‑আপ ম্যানাস সম্প্রতি সদর দফতর সিঙ্গাপুরে সরিয়ে নিয়েছে এবং চীনে প্রায় সব কর্মী ছাঁটাই করে কেবল মূল প্রকৌশলীদের রেখে দিয়েছে; পাশাপাশি চীনা সামাজিকমাধ্যমের সব কনটেন্ট মুছে ফেলেছে।

ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি

অ্যামাজনের মতে, এবারের পদক্ষেপ এআই‑কেন্দ্রিক নয়; বরং প্রতিষ্ঠানকে আরও কার্যকর ও অগ্রাধিকারভিত্তিক করতে নেওয়া সিদ্ধান্ত। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র‑চীন বাণিজ্য ও প্রযুক্তিযুদ্ধের জোরালো প্রভাবই উদ্যোক্তাদের এমন পদক্ষেপে প্ররোচিত করছে, যা ভবিষ্যতে উভয় দেশের প্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থান ও উদ্ভাবনের গতি বদলে দিতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

‘গ্রিন ট্রি সাপ’—সবুজ পাতার আড়ালে লুকানো নীরব সৌন্দর্য

শাংহাইয়ে অ্যামাজনের এআই গবেষণা ল্যাব বন্ধ

১২:০০:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ

যুক্তরাষ্ট্রের ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন শাংহাইয়ে তাদের এআই ল্যাব বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেসের (AWS) মুখপাত্র ব্র্যাড গ্লাসার জানান, প্রতিষ্ঠানটির কাঠামো, অগ্রাধিকার ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য পর্যালোচনা করে কিছু দলের কিছু পদ বাদ দেওয়া হচ্ছে। কতজন কর্মী প্রভাবিত হবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। গ্লাসার বলেন, “আমরা সিদ্ধান্তটি খুব ভেবেচিন্তেই নিয়েছি এবং কর্মীদের রূপান্তরকালীন সময়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।”

কর্মীদের প্রতিক্রিয়া ও ল্যাবের অবদান

ল্যাবটি বন্ধের খবর নিশ্চিত হওয়ার আগেই শাংহাই এআই ল্যাবের অ্যাপ্লাইড সায়েন্টিস্ট ওয়াং মিনজি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাটে লিখেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র-চীন কৌশলগত পরিবর্তনের কারণে শেষ বিদেশি AWS গবেষণা ল্যাবটিও বন্ধ হচ্ছে।” তিনি জানান, গত ছয় বছরে তার দল শূন্য থেকে গড়ে তুলেছে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ওপেন‑সোর্স গ্রাফ নিউরাল নেটওয়ার্ক ফ্রেমওয়ার্ক DGL, যা অ্যামাজনের ই‑কমার্স ব্যবসায় প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

অ্যামাজনের চীনে ধীরে ধীরে সরে আসা

গত কয়েক বছরে অ্যামাজন ধীরে ধীরে চীনে তাদের উপস্থিতি কমিয়েছে।

  • ২০১৯ সালে দেশীয় ই‑কমার্স প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেয়।
  • ২০২২ সালে চীন থেকে কিন্ডল ই‑রিডার সরবরাহ বন্ধ এবং ই‑বুক বিক্রি থামায়।

সম্প্রতি রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে AWS বিভাগে শত শত পদ ছাঁটাই হয়েছে; অ্যামাজন সতর্ক করেছে, এআই দ্রুত গ্রহণের ফলে কিছু চাকরি বিলুপ্ত হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র‑চীন প্রযুক্তি উত্তেজনার বিস্তার

শুধু অ্যামাজন নয়, অন্যান্য মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানও চীন থেকে কার্যক্রম সীমিত করছে।

  • মার্চে আইবিএম চীনে তাদের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ বন্ধ করে হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে।
  • একই মাসে মাইক্রোসফট শাংহাইয়ের এআই ল্যাব বন্ধ করে কিছু কর্মীকে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে স্থানান্তর করে।

চীনা কোম্পানির সরে যাওয়ার ধারা

যুক্তরাষ্ট্র‑চীন অনিশ্চয়তার মধ্যে কিছু চীনা প্রতিষ্ঠানও দেশ ছেড়ে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, এআই স্টার্ট‑আপ ম্যানাস সম্প্রতি সদর দফতর সিঙ্গাপুরে সরিয়ে নিয়েছে এবং চীনে প্রায় সব কর্মী ছাঁটাই করে কেবল মূল প্রকৌশলীদের রেখে দিয়েছে; পাশাপাশি চীনা সামাজিকমাধ্যমের সব কনটেন্ট মুছে ফেলেছে।

ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি

অ্যামাজনের মতে, এবারের পদক্ষেপ এআই‑কেন্দ্রিক নয়; বরং প্রতিষ্ঠানকে আরও কার্যকর ও অগ্রাধিকারভিত্তিক করতে নেওয়া সিদ্ধান্ত। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র‑চীন বাণিজ্য ও প্রযুক্তিযুদ্ধের জোরালো প্রভাবই উদ্যোক্তাদের এমন পদক্ষেপে প্ররোচিত করছে, যা ভবিষ্যতে উভয় দেশের প্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থান ও উদ্ভাবনের গতি বদলে দিতে পারে।