০৫:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
মানুষকে খুশি রাখার ফাঁদ: কেন আমরা ‘হ্যাঁ’ বলতে বাধ্য হই এবং মুক্তির পথ কোথায় দারিয়াগঞ্জের মুঘল প্রাচীর ঃ শেষ প্রহরীর আর্তনাদ তানজানিয়ার সহিংস নির্বাচনেই অর্থনীতির ওপর ঘনিয়ে আসছে অনিশ্চয়তা পুরুষরা কি সত্যিই বেশি কষ্টে ভোগে? ‘ম্যান ফ্লু’ নিয়ে নতুন বৈজ্ঞানিক রহস্য উন্মোচন আফ্রিকার নীল-কার্বন বিপ্লব: উপকূল রক্ষায় কার্বন ক্রেডিট কি নতুন আশা? লিসার সাহসী লুক নিয়ে নতুন জল্পনা: লুই ভুঁইতোঁ ইভেন্টে নজর কাড়লেন কে-পপ তারকা মিষ্টি পানীয় কর থেকে প্লাস্টিক নিষেধাজ্ঞা—২০২৬ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসছে ছয়টি নতুন নিয়ম দুবাইয়ে মৃত্যুবরণ করলেন আমিরাতপ্রবাসী ভারতীয় ‘সুপারম্যান’ দেবেশ মিস্ত্রি সংযুক্ত আরব আমিরাতে গুরুতর অনিয়মে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি বাতিল জিন সম্পাদনায় বিশ্বে প্রথম: বিরল রোগ থেকে অলৌকিকভাবে রক্ষা পেল শিশু কেজে

নতুন মার্কিন ভিসা নীতি: ১৫ হাজার ডলার জামানত, কারা প্রভাবিত, কীভাবে কাজ করবে

নতুন ভিসা নীতির ঘোষণা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে যে, কিছু বিদেশি নাগরিককে ভিসার আবেদনের সময় সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত জামানত দিতে হবে। এই নীতি চালু করা হচ্ছে পরীক্ষামূলক একটি কর্মসূচির আওতায়, যার উদ্দেশ্য ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার প্রবণতা কমানো।

এই নতুন ব্যবস্থা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিকে আরও কঠোর করার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২৫ সালের ২০ আগস্ট থেকে এটি কার্যকর হবে এবং প্রাথমিকভাবে এটি ১২ মাস চলবে।

এই নীতির আওতায় কী থাকবে?

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কিছু নির্দিষ্ট দেশের ব্যবসা (B-1) ও পর্যটন (B-2) ভিসার আবেদনকারীদের ভিসা পাওয়ার শর্ত হিসেবে ৫ থেকে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত জামানত জমা দিতে হতে পারে।

এই জামানতের ন্যূনতম পরিমাণ হবে ৫ হাজার ডলার। যদি ভিসাধারী নির্ধারিত সময়মতো যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেন, তাহলে জামানতের পুরো অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু কেউ যদি নির্ধারিত মেয়াদের বেশি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন, তাহলে সম্পূর্ণ অর্থ বাজেয়াপ্ত হবে।

এছাড়া, যেসব ভিসাধারীকে জামানত দিতে হবে, তারা শুধুমাত্র নির্ধারিত কিছু মার্কিন বিমানবন্দর ব্যবহার করেই প্রবেশ ও প্রস্থান করতে পারবেন।

Little-Known Intelligence Agency Outlines Limits on Spying - The New York Times

কারা এই নীতির আওতায় পড়বেন?

এই পদক্ষেপটি মূলত সেইসব দেশের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে, যাদের ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার হার বেশি। ২০২৩ সালের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের এক প্রতিবেদনে এমন কিছু দেশের তালিকা তুলে ধরা হয়েছিল।

এছাড়াও, যেসব দেশের নাগরিকত্ব বিনিয়োগের মাধ্যমে (রেসিডেন্সি ছাড়াই) নেওয়া যায় বা যেসব দেশের নিরাপত্তা যাচাই ও তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া দুর্বল, সেসব দেশের আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও এই জামানত প্রযোজ্য হতে পারে।

যদিও এখনো স্পষ্টভাবে কোনো দেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে চাদ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, মিয়ানমার, ইয়েমেন, বুরুন্ডি, জিবুতি এবং টোগো—এই দেশগুলোর নাগরিকরা উচ্চ ভিসা ওভারস্টে হারের কারণে নজরদারির আওতায় রয়েছে।

এই জামানত কীভাবে কাজ করবে?

জামানতের মূল লক্ষ্য হলো ভিসা ব্যবস্থায় আর্থিকভাবে শৃঙ্খলা আনা। যেসব ভিসাধারী নির্ধারিত সময়মতো যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবেন, তারা তাদের পুরো অর্থ ফেরত পাবেন। তবে যেসব ব্যক্তি নির্ধারিত সময়ের বেশি অবস্থান করবেন, তাদের জামানতের অর্থ বাজেয়াপ্ত হবে।

এই পরীক্ষামূলক কর্মসূচি শুধুমাত্র B-1 এবং B-2 ভিসার আবেদনকারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে এবং তাদের নির্ধারিত বিমানবন্দর ব্যবহার করতে হবে। কতজন এই নীতির আওতায় পড়বেন, তা নিয়ে এখনো নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে ভবিষ্যতে দেশ ও শর্তের তালিকা হালনাগাদ হতে পারে।

What is the mission of the U.S. Department of State? - The National Museum of American Diplomacy

ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান কী?

পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “এই পরীক্ষামূলক কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন বাস্তবায়ন ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি পুনরায় জোরদার করছে।”

এই নীতিকে ‘মূল স্তম্ভ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে, যা ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য হুমকি প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

এর আগে ২০২০ সালের নভেম্বরে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে অনুরূপ একটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল, তবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।

এই নীতির প্রভাব কতটা?

যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ সংস্থাগুলোর অনুমান, এই নীতির পরিধি সীমিত হবে এবং এটি বছরে প্রায় ২ হাজার আবেদনকারীকে প্রভাবিত করতে পারে, যেসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটনের হার কম।

African nations targeted in US visa policy change | APAnews - African Press Agency

তবে সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, এই অতিরিক্ত জামানত ভ্রমণকারীদের নিরুৎসাহিত করতে পারে। তাদের মতে, “এই নীতি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল ভিসা ফি সম্পন্ন দেশ হয়ে উঠবে।”

তারা আরও জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক পর্যটনে আগ্রহ কমছে, কারণ অতলান্তিক বিমানের ভাড়া মহামারির আগের স্তরে নেমে এসেছে এবং কানাডা ও মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিটি মূলত অভিবাসন শৃঙ্খলা ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার একটি কৌশল। তবে এটি পর্যটন ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই নীতির বাস্তবায়ন ও ভবিষ্যতের প্রতিক্রিয়া নির্ভর করবে এটি কীভাবে পরিচালিত হয় এবং কোন কোন দেশ এই তালিকায় পড়ে তার ওপর।

জনপ্রিয় সংবাদ

মানুষকে খুশি রাখার ফাঁদ: কেন আমরা ‘হ্যাঁ’ বলতে বাধ্য হই এবং মুক্তির পথ কোথায়

নতুন মার্কিন ভিসা নীতি: ১৫ হাজার ডলার জামানত, কারা প্রভাবিত, কীভাবে কাজ করবে

১০:০০:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

নতুন ভিসা নীতির ঘোষণা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে যে, কিছু বিদেশি নাগরিককে ভিসার আবেদনের সময় সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত জামানত দিতে হবে। এই নীতি চালু করা হচ্ছে পরীক্ষামূলক একটি কর্মসূচির আওতায়, যার উদ্দেশ্য ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার প্রবণতা কমানো।

এই নতুন ব্যবস্থা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিকে আরও কঠোর করার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২৫ সালের ২০ আগস্ট থেকে এটি কার্যকর হবে এবং প্রাথমিকভাবে এটি ১২ মাস চলবে।

এই নীতির আওতায় কী থাকবে?

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কিছু নির্দিষ্ট দেশের ব্যবসা (B-1) ও পর্যটন (B-2) ভিসার আবেদনকারীদের ভিসা পাওয়ার শর্ত হিসেবে ৫ থেকে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত জামানত জমা দিতে হতে পারে।

এই জামানতের ন্যূনতম পরিমাণ হবে ৫ হাজার ডলার। যদি ভিসাধারী নির্ধারিত সময়মতো যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেন, তাহলে জামানতের পুরো অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু কেউ যদি নির্ধারিত মেয়াদের বেশি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন, তাহলে সম্পূর্ণ অর্থ বাজেয়াপ্ত হবে।

এছাড়া, যেসব ভিসাধারীকে জামানত দিতে হবে, তারা শুধুমাত্র নির্ধারিত কিছু মার্কিন বিমানবন্দর ব্যবহার করেই প্রবেশ ও প্রস্থান করতে পারবেন।

Little-Known Intelligence Agency Outlines Limits on Spying - The New York Times

কারা এই নীতির আওতায় পড়বেন?

এই পদক্ষেপটি মূলত সেইসব দেশের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে, যাদের ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার হার বেশি। ২০২৩ সালের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের এক প্রতিবেদনে এমন কিছু দেশের তালিকা তুলে ধরা হয়েছিল।

এছাড়াও, যেসব দেশের নাগরিকত্ব বিনিয়োগের মাধ্যমে (রেসিডেন্সি ছাড়াই) নেওয়া যায় বা যেসব দেশের নিরাপত্তা যাচাই ও তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া দুর্বল, সেসব দেশের আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও এই জামানত প্রযোজ্য হতে পারে।

যদিও এখনো স্পষ্টভাবে কোনো দেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে চাদ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, মিয়ানমার, ইয়েমেন, বুরুন্ডি, জিবুতি এবং টোগো—এই দেশগুলোর নাগরিকরা উচ্চ ভিসা ওভারস্টে হারের কারণে নজরদারির আওতায় রয়েছে।

এই জামানত কীভাবে কাজ করবে?

জামানতের মূল লক্ষ্য হলো ভিসা ব্যবস্থায় আর্থিকভাবে শৃঙ্খলা আনা। যেসব ভিসাধারী নির্ধারিত সময়মতো যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবেন, তারা তাদের পুরো অর্থ ফেরত পাবেন। তবে যেসব ব্যক্তি নির্ধারিত সময়ের বেশি অবস্থান করবেন, তাদের জামানতের অর্থ বাজেয়াপ্ত হবে।

এই পরীক্ষামূলক কর্মসূচি শুধুমাত্র B-1 এবং B-2 ভিসার আবেদনকারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে এবং তাদের নির্ধারিত বিমানবন্দর ব্যবহার করতে হবে। কতজন এই নীতির আওতায় পড়বেন, তা নিয়ে এখনো নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে ভবিষ্যতে দেশ ও শর্তের তালিকা হালনাগাদ হতে পারে।

What is the mission of the U.S. Department of State? - The National Museum of American Diplomacy

ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান কী?

পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “এই পরীক্ষামূলক কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন বাস্তবায়ন ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি পুনরায় জোরদার করছে।”

এই নীতিকে ‘মূল স্তম্ভ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে, যা ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য হুমকি প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

এর আগে ২০২০ সালের নভেম্বরে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে অনুরূপ একটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল, তবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।

এই নীতির প্রভাব কতটা?

যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ সংস্থাগুলোর অনুমান, এই নীতির পরিধি সীমিত হবে এবং এটি বছরে প্রায় ২ হাজার আবেদনকারীকে প্রভাবিত করতে পারে, যেসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটনের হার কম।

African nations targeted in US visa policy change | APAnews - African Press Agency

তবে সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, এই অতিরিক্ত জামানত ভ্রমণকারীদের নিরুৎসাহিত করতে পারে। তাদের মতে, “এই নীতি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল ভিসা ফি সম্পন্ন দেশ হয়ে উঠবে।”

তারা আরও জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক পর্যটনে আগ্রহ কমছে, কারণ অতলান্তিক বিমানের ভাড়া মহামারির আগের স্তরে নেমে এসেছে এবং কানাডা ও মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিটি মূলত অভিবাসন শৃঙ্খলা ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার একটি কৌশল। তবে এটি পর্যটন ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই নীতির বাস্তবায়ন ও ভবিষ্যতের প্রতিক্রিয়া নির্ভর করবে এটি কীভাবে পরিচালিত হয় এবং কোন কোন দেশ এই তালিকায় পড়ে তার ওপর।