পুরুষ ফুটবলে ঐতিহাসিক অংশগ্রহণ
বাংলাদেশের পুরুষ জাতীয় ফুটবল দল মাত্র একবার এএফসি এশিয়ান কাপে অংশ নিয়েছিল—১৯৮০ সালে কুয়েতে। এটি ছিল দেশের প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র মূলপর্বে খেলা। সে সময় বাংলাদেশ চারটি গ্রুপ ম্যাচ খেললেও কোনো জয় পায়নি এবং মোট দুইটি গোল করতে সক্ষম হয়। গোলদাতারা ছিলেন কাজী সালাহউদ্দিন এবং আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু।
উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত
কাজী সালাহউদ্দিন বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে এক বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ নাম।
- • তিনি দেশের হয়ে এশিয়ান কাপে প্রথম গোলদাতা—১৯৮০ সালের টুর্নামেন্টে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে (পেনাল্টি থেকে),যেখানে ম্যাচের ফল ছিল ২–৩।
- • এই গোল এখনও বাংলাদেশের কন্টিনেন্টাল ফুটবলের এক স্মরণীয় মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।
তবে ঐ টুর্নামেন্টের পর থেকে পুরুষ দল আর কোনোবার মূলপর্বে উঠতে পারেনি, যা দেশের ফুটবলে উন্নতির বড় চ্যালেঞ্জ নির্দেশ করে।
নারী ফুটবলে নতুন সাফল্যের যুগ
অন্যদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের নারী জাতীয় ফুটবল দল এশিয়ান ফুটবলে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
- • ২০২৫ সালের ২ জুলাই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূলপর্বে কোয়ালিফাই করে। মিয়ানমারের বিপক্ষে ২–১ গোলে জিতে তারা এই ঐতিহাসিক সাফল্য নিশ্চিত করে।
- • এর আগে বাছাইপর্বে তারা দাপুটে পারফরম্যান্স দেখায়—বাহরাইনকে ৭–০ এবং তুর্কমেনিস্তানকে ৭–০ গোলে হারায়।
- • দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমা মিয়ানমারের বিপক্ষে দুটি গোল করেন এবং বাহরাইনের বিপক্ষেও একটি গোল করেন,যা দলকে জয়ের পথে নিয়ে যায়।
- • শুধু সিনিয়র দল নয়,বাংলাদেশ নারী অনূর্ধ্ব-২০ দলও প্রথমবারের মতো এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করে। বাছাইপর্বে তারা পূর্ব তিমুরকে ৮–০ গোলে হারিয়ে নিজেদের শক্তি প্রমাণ করে।
এই ধারাবাহিক সাফল্য প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের নারী ফুটবলে কাঠামোগত উন্নয়ন, দক্ষ কোচিং এবং প্রতিভা বিকাশ এখন দৃশ্যমান ফল দিচ্ছে।

সারসংক্ষেপ ও বিশ্লেষণ
- • পুরুষ দল (১৯৮০ এশিয়ান কাপ): একমাত্র অংশগ্রহণ;কোনো জয় নেই; দুইটি গোল; কাজী সালাহউদ্দিনের ঐতিহাসিক গোলই প্রধান স্মৃতি।
- • নারী দল (২০২৫–২৬ নারী এশিয়ান কাপ): প্রথমবার মূলপর্বে কোয়ালিফিকেশন;একাধিক বড় জয়; ঋতুপর্ণা চাকমার মতো খেলোয়াড়দের উজ্জ্বল পারফরম্যান্স।
- • নারী অনূর্ধ্ব-২০ দল: প্রথমবার এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপে উত্তরণ;বাছাইপর্বে বড় জয়।
ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা
বর্তমানে নারী ফুটবল দল—সিনিয়র ও বয়সভিত্তিক উভয় ক্ষেত্রেই—বাংলাদেশের জন্য এশিয়ান মঞ্চে সবচেয়ে উজ্জ্বল আশা। অপরদিকে, পুরুষ দলকে দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা, প্রতিভা উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক মানের প্রস্তুতির দিকে মনোযোগী হতে হবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















