যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ব্যাপক প্রত্যাশিত সম্মেলনে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ থামানো বা স্থগিত করার কোনো সমঝোতা হয়নি, যদিও দুই নেতা বক্তব্যে অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন।
আলোচনার দৃশ্যপট
আঙ্করেজ, আলাস্কার এক সেনা ঘাঁটিতে এই সম্মেলন হয়। ২০২২ সালে রাশিয়ার ব্যাপক আগ্রাসনের পর এটাই ট্রাম্প ও পুতিনের প্রথম সম্মুখীন বৈঠক।
পুতিনকে লাল কার্পেটে স্বাগত জানানো হয় এবং তিন ঘণ্টার জোরালো আলোচনার পর উভয় নেতা সংবাদ সম্মেলনে জানান—“আমরা কিছু অগ্রগতি করেছি” ও “চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো চুক্তি নেই।”
নির্দিষ্ট সমঝোতার অভাব
আলোচনার নির্দিষ্ট কোনো বিষয় বা বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। সাংবাদিকদের প্রশ্নেরও উত্তর দেওয়া হয়নি। ট্রাম্প সাধারণত খোলামেলা হলেও এবার নীরব থাকেন।
ইউরোপে সর্বোচ্চ প্রাণহানির সংঘাত হওয়া সত্ত্বেও এই সম্মেলন থেকে যুদ্ধবিরতি বা সমাধানের কোনো পদক্ষেপ ঘোষণা করা হয়নি।

রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত
এই বৈঠককে পুতিনের জন্য রাজনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে—যিনি পশ্চিমা অনেক নেতার কাছে উপেক্ষিত ছিলেন, এবার ট্রাম্পের সামনে আসন গ্রহণ করেন।
ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে জানান, চীনের ওপর আরোপিত সিদ্ধান্তে ভাটা ধরার বিষয়টি এখনই বিবেচনা করছেন না। তার ভাষায়, “আজ যা ঘটেছে তার কারণে আমি এখন চিন্তা করতে চাই না… হয়তো দুই–তিন সপ্তাহ পর ভাবতে হবে।”
ভারতের প্রসঙ্গে কোনো সমালোচনামূলক মন্তব্য করা হয়নি, যদিও দেশটিতে মার্কিন আমদানির ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
আগামী পরিকল্পনা ও পরামর্শ
ট্রাম্প একটি সম্ভাব্য বৈঠকের ইঙ্গিত দিয়েছেন—যেখানে পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অংশ নিতে পারেন, তিনিও সেখানে উপস্থিত থাকতে পারেন। তবে সময় বা আয়োজন নিয়ে কোনো বিস্তারিত জানাননি।
পুতিন বলেন, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের উচিত এই আলোচনার ফল গঠনমূলকভাবে গ্রহণ করা এবং “উদীয়মান অগ্রগতিকে বিঘ্নিত না করা।” তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন—রাশিয়ার অবস্থান অনুযায়ী সংঘাতের “মূল কারণ” সমাধান না হলে টেকসই শান্তি সম্ভব নয়।
ট্রাম্পের বার্তা: “শুভ উদ্যোগ, কিন্তু…”
ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে জানান, জমি বিনিময় ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং “আমরা প্রায় চুক্তির কাছাকাছি,” তবে ইউক্রেনকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তার ভাষায়, “তারা হয়তো না বলবে।”
জেলেনস্কির মতামত চাইলে ট্রাম্প বলেন—“চুক্তি করতে হবে।”
যুদ্ধের অবস্থা ও প্রতিক্রিয়া
আলোচনার মধ্যেই ইউক্রেনে বিমান ও ড্রোন হামলা বৃদ্ধি পায়; বহু মানুষ নিহত বা আহত হন এবং পূর্বাঞ্চলের অনেক অঞ্চল হামলার মুখে পড়ে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ায়, ইউক্রেনের অস্ট্রেলিয়ায় রাষ্ট্রদূত বলেন—“দায়িত্ব এখন ইউক্রেনের ওপর চলে এসেছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, শান্তির সমাধান ব্যাপক হতে হবে—“এতে ইউক্রেন না থাকলে কার্যকর হবে না।”
বিশ্লেষণের দৃষ্টিভঙ্গি
আলোচনায় “অগ্রগতি”র দাবি থাকলেও কোনো চুক্তি হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, এটি মূলত পুতিনের জন্য কৌশলগত বিজয়, কারণ বাস্তব পদক্ষেপ না নিয়েও তার রাজনৈতিক মর্যাদা আরও বেড়েছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















