০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
ঋণ কমাতে কেরিং-এর বড় পদক্ষেপ ড্রোন প্রতিরোধে বৈশ্বিক দৌড় পিয়ানোর অলিম্পিকের চূড়ান্ত পর্বে সুরের লড়াই , কানাডার কেভিন চেন ফাইনালে জেমস ফক্সের ‘ক্রাফ্টল্যান্ড’—ব্রিটেনের হারিয়ে যাওয়া হস্তশিল্পের জীবন্ত ইতিহাস বিলুপ্তির তালিকায় নতুন নাম—একটি পাখি, একটি শুঁয়োপোকা ও একটি শ্রু প্রজাতি হারিয়ে গেল পৃথিবী থেকে মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৫৬) কানাডায় অনিরাপদ বোধ করছেন ভারতীয়রা, উদ্বেগ জানালেন নয়াদিল্লির হাইকমিশনার নির্বাচন বানচালে হঠাৎ আক্রমণও হতে পারে জেএমবির তৎপরতার সময় বোয়ালমারীতে নির্মম হত্যাকাণ্ড—পলাতক চার আসামির অনুপস্থিতিতে আদালতের দণ্ডাদেশ সিলেটে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকদের ১১ দফা দাবি—ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়ক অবরোধ

ট্রাম্প সম্মেলনের পর জেলেনস্কিকে বললেন, পুতিন ইউক্রেনের আরও অংশ চান

ট্রাম্প বলেছেন, “রাশিয়া খুব শক্তিশালী দেশ, আর ইউক্রেন তেমন নয়। তাই যুদ্ধ শেষ করতে একটি চুক্তি করা উচিত।”
সম্মেলন শেষে পুতিন দাবি করেছিলেন, ডনেটস্ক অঞ্চল পুরোপুরি হস্তান্তরের বিনিময়ে তিনি সামনের অধিকাংশ ফ্রন্টলাইন স্থগিত রাখতে রাজি।
জেলেনস্কি ওই দাবিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ট্রাম্প শান্তিচুক্তিকে ‘চুক্তি’ হিসেবে দেখতে চান, ‘স্থগিত যুদ্ধবিরতি’ নয়; পুতিনের মতামতের সঙ্গে তার সঙ্গতি লক্ষণীয়।
ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার পর ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট আগামী সোমবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন, যেখানে ইউরোপীয় নেতারাও অংশ নেবেন।

বিস্তারিত ব্যাখ্যা

পুতিনের শর্ত: ডনেটস্ক ছাড়ার বিনিময়ে সামরিক দীর্ঘ বিরতি?
আলাস্কার সম্মেলনে পুতিন ট্রাম্পকে জানিয়েছিলেন, যদি ইউক্রেন ডনেটস্ক অঞ্চল পুরোপুরি দিয়ে দেয়, তবে তিনি যুদ্ধে বিরতির শর্ত হিসেবে ফ্রন্টলাইনগুলো স্থগিত রাখবেন—বিশেষ করে দক্ষিণ অঞ্চলে যেমন খেরসন ও জাপোরিঝিয়া।

ট্রাম্পের পরামর্শ: “একটি চুক্তি করো”
সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি নিয়ে ট্রাম্প বললেন, “এই ভয়ানক যুদ্ধ শেষ করার সেরা উপায় হলো একটি চুক্তির মাধ্যমে; শুধু যুদ্ধবিরতি নয়।” তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, “গোটা ব্যাপার এখন ইউক্রেনের ওপর—তারা সম্মত হতে হবে, হয়তো তারা ‘না’ বলবে।”

জেলেনস্কির অবস্থান: দৃঢ় ‘না’ এবং নিরাপত্তা গ্যারান্টি
জেলেনস্কি স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন যে, সংবিধানে পরিবর্তন না করে কোনো ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়া হবে না। তিনি বিশেষ করে স্লোভিয়ানস্ক ও ক্রামাতোরস্কের মতো ‘কেল্লা শহরগুলো’ রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করেন। তিনি এমন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছেন যাতে ভবিষ্যতে রাশিয়া পুনরায় হামলা চালাতে না পারে।

ইউরোপীয় প্রত্যাশা ও নিরাপত্তা গ্যারান্টির গুরুত্ব
ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনির মতে, ইউক্রেনে নিরাপত্তা গ্যারান্টি ন্যাটোর অনুচ্ছেদ ৫-এর অনুকরণে নির্ধারণ করা প্রয়োজন: “যদি আবার হামলা হয়, তাহলে সব অংশীদার দেশ—যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র—একসঙ্গে রক্ষা করবে।” জার্মান চ্যান্সেলর মের্জ বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা গ্যারান্টির অংশ হতে প্রস্তুত; শুধু ইউরোপের ওপর চাপ থাকবে না।

রাশিয়ার কূটনৈতিক সুবিধা?
পুতিনের উপস্থাপন ও ট্রাম্পের অবস্থানের ফলে ইউক্রেনে অনেকে মনে করছেন, এবারের সম্মেলনে রাশিয়া বেশি কূটনৈতিক সুবিধা আদায় করেছে। ট্রাম্পকে ‘রেড কার্পেট’ দেওয়ার সমালোচনা উঠেছে; অভিযোগ রয়েছে—কোনো নতুন নিষেধাজ্ঞা হয়নি, যুদ্ধবিরতিও নয়, বরং রাশিয়ার দাবির দিকেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

যুদ্ধ অব্যাহত—মাঠে তীব্র লড়াই
এদিকে স্থল ও আকাশে যুদ্ধ চলছেই; দুই পক্ষই বিমান ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে গোলন্দাজ হামলা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর আঘাত, এবং বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।

সামগ্রিক বিশ্লেষণ
ডনেটস্ক হস্তান্তর ও সামরিক বিরতির প্রস্তাব—পুতিনের রূপরেখা—এক ধরনের ভারসাম্যের পরীক্ষা হয়ে উঠেছে, কিন্তু ইউক্রেন তা স্পষ্টভাবে নাকচ করেছে। ট্রাম্প ‘শাস্তি’ নয়, স্থায়ী সমাধানের জন্য চুক্তির কথা বলছেন—যা ইউক্রেনের ওপর আপসের চাপ বাড়াতে পারে। অন্যদিকে ইউরোপীয় নেতারা বিশ্বাস করেন, ভবিষ্যৎ হামলা ঠেকাতে শক্তিশালী ও বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা গ্যারান্টি অপরিহার্য।

পরবর্তী ধাপ
আগামী সোমবার ওয়াশিংটনে জেলেনস্কি ও ট্রাম্পের বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত আসবে, তা আন্তর্জাতিক নজরে। নিরাপত্তা গ্যারান্টি, ভূখণ্ডের প্রশ্ন ও সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির কাঠামো—সবকিছুই এখনও অনির্ধারিত। পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তনশীল; কূটনৈতিক আলোচনার পাশাপাশি মাঠের লড়াইও চূড়ান্ত ফল নির্ধারণে প্রভাব ফেলবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঋণ কমাতে কেরিং-এর বড় পদক্ষেপ

ট্রাম্প সম্মেলনের পর জেলেনস্কিকে বললেন, পুতিন ইউক্রেনের আরও অংশ চান

১১:৩৩:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫

ট্রাম্প বলেছেন, “রাশিয়া খুব শক্তিশালী দেশ, আর ইউক্রেন তেমন নয়। তাই যুদ্ধ শেষ করতে একটি চুক্তি করা উচিত।”
সম্মেলন শেষে পুতিন দাবি করেছিলেন, ডনেটস্ক অঞ্চল পুরোপুরি হস্তান্তরের বিনিময়ে তিনি সামনের অধিকাংশ ফ্রন্টলাইন স্থগিত রাখতে রাজি।
জেলেনস্কি ওই দাবিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ট্রাম্প শান্তিচুক্তিকে ‘চুক্তি’ হিসেবে দেখতে চান, ‘স্থগিত যুদ্ধবিরতি’ নয়; পুতিনের মতামতের সঙ্গে তার সঙ্গতি লক্ষণীয়।
ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার পর ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট আগামী সোমবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন, যেখানে ইউরোপীয় নেতারাও অংশ নেবেন।

বিস্তারিত ব্যাখ্যা

পুতিনের শর্ত: ডনেটস্ক ছাড়ার বিনিময়ে সামরিক দীর্ঘ বিরতি?
আলাস্কার সম্মেলনে পুতিন ট্রাম্পকে জানিয়েছিলেন, যদি ইউক্রেন ডনেটস্ক অঞ্চল পুরোপুরি দিয়ে দেয়, তবে তিনি যুদ্ধে বিরতির শর্ত হিসেবে ফ্রন্টলাইনগুলো স্থগিত রাখবেন—বিশেষ করে দক্ষিণ অঞ্চলে যেমন খেরসন ও জাপোরিঝিয়া।

ট্রাম্পের পরামর্শ: “একটি চুক্তি করো”
সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি নিয়ে ট্রাম্প বললেন, “এই ভয়ানক যুদ্ধ শেষ করার সেরা উপায় হলো একটি চুক্তির মাধ্যমে; শুধু যুদ্ধবিরতি নয়।” তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, “গোটা ব্যাপার এখন ইউক্রেনের ওপর—তারা সম্মত হতে হবে, হয়তো তারা ‘না’ বলবে।”

জেলেনস্কির অবস্থান: দৃঢ় ‘না’ এবং নিরাপত্তা গ্যারান্টি
জেলেনস্কি স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন যে, সংবিধানে পরিবর্তন না করে কোনো ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়া হবে না। তিনি বিশেষ করে স্লোভিয়ানস্ক ও ক্রামাতোরস্কের মতো ‘কেল্লা শহরগুলো’ রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করেন। তিনি এমন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছেন যাতে ভবিষ্যতে রাশিয়া পুনরায় হামলা চালাতে না পারে।

ইউরোপীয় প্রত্যাশা ও নিরাপত্তা গ্যারান্টির গুরুত্ব
ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনির মতে, ইউক্রেনে নিরাপত্তা গ্যারান্টি ন্যাটোর অনুচ্ছেদ ৫-এর অনুকরণে নির্ধারণ করা প্রয়োজন: “যদি আবার হামলা হয়, তাহলে সব অংশীদার দেশ—যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র—একসঙ্গে রক্ষা করবে।” জার্মান চ্যান্সেলর মের্জ বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা গ্যারান্টির অংশ হতে প্রস্তুত; শুধু ইউরোপের ওপর চাপ থাকবে না।

রাশিয়ার কূটনৈতিক সুবিধা?
পুতিনের উপস্থাপন ও ট্রাম্পের অবস্থানের ফলে ইউক্রেনে অনেকে মনে করছেন, এবারের সম্মেলনে রাশিয়া বেশি কূটনৈতিক সুবিধা আদায় করেছে। ট্রাম্পকে ‘রেড কার্পেট’ দেওয়ার সমালোচনা উঠেছে; অভিযোগ রয়েছে—কোনো নতুন নিষেধাজ্ঞা হয়নি, যুদ্ধবিরতিও নয়, বরং রাশিয়ার দাবির দিকেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

যুদ্ধ অব্যাহত—মাঠে তীব্র লড়াই
এদিকে স্থল ও আকাশে যুদ্ধ চলছেই; দুই পক্ষই বিমান ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে গোলন্দাজ হামলা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর আঘাত, এবং বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।

সামগ্রিক বিশ্লেষণ
ডনেটস্ক হস্তান্তর ও সামরিক বিরতির প্রস্তাব—পুতিনের রূপরেখা—এক ধরনের ভারসাম্যের পরীক্ষা হয়ে উঠেছে, কিন্তু ইউক্রেন তা স্পষ্টভাবে নাকচ করেছে। ট্রাম্প ‘শাস্তি’ নয়, স্থায়ী সমাধানের জন্য চুক্তির কথা বলছেন—যা ইউক্রেনের ওপর আপসের চাপ বাড়াতে পারে। অন্যদিকে ইউরোপীয় নেতারা বিশ্বাস করেন, ভবিষ্যৎ হামলা ঠেকাতে শক্তিশালী ও বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা গ্যারান্টি অপরিহার্য।

পরবর্তী ধাপ
আগামী সোমবার ওয়াশিংটনে জেলেনস্কি ও ট্রাম্পের বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত আসবে, তা আন্তর্জাতিক নজরে। নিরাপত্তা গ্যারান্টি, ভূখণ্ডের প্রশ্ন ও সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির কাঠামো—সবকিছুই এখনও অনির্ধারিত। পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তনশীল; কূটনৈতিক আলোচনার পাশাপাশি মাঠের লড়াইও চূড়ান্ত ফল নির্ধারণে প্রভাব ফেলবে।