০৯:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫
জোহরান মামদানির সিরিয়ান স্ত্রী রামা দুয়াজি সম্পর্কে এই বিষয়গুলো কি জানেন? পুঁজিবাজারে পতনের ধারা অব্যাহত: সপ্তাহ শেষে ডিএসই ও সিএসই লাল সূচকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যু সংবিধান উপেক্ষা করে গণভোটের তাড়াহুড়ো জনমনে সন্দেহ জাগাচ্ছে: আমীর খসরু শেয়ারবাজারে পতন: সপ্তাহ শেষে লাল সংকেতে ডিএসই ও সিএসই ব্যাংক একীভূতকরণে বিনিয়োগকারীদের ক্ষোভ: পদত্যাগ দাবি ও আন্দোলনের হুঁশিয়ারি নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও ধর্মনিরপেক্ষতা নিশ্চিতের আহ্বান হিন্দু মহাজোটের সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণন: গাজা পুনর্গঠন ও শান্তি আলোচনায় বাস্তব পদক্ষেপ চাইলেন এনক্রিপ্টেড ফোন কলেই ফাঁস ষড়যন্ত্রের খবর পাকিস্তান থেকে পাখির খাবার নামে আসা আফিম বীজ চট্টগ্রাম বন্দরে জব্দ

কোন প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি ও ভালো চাকরি সৃষ্টি করে? ভারতে এই হার সব থেকে বেশি

উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে আগামী প্রজন্মের জন্য সুযোগ তৈরি করতে হলে কোন প্রতিষ্ঠান কোথায়কেন এবং কীভাবে নিয়োগ দেয়এগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করা জরুরি। কোন প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি এবং মানসম্মত চাকরি সৃষ্টি করবে তা আগে থেকে নির্ভুলভাবে বলা কঠিন হলেওসাম্প্রতিক গবেষণা থেকে কিছু স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়যেসব প্রতিষ্ঠানের চাকরি সৃষ্টির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশিতাদের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য থাকে। এসব থেকে নীতিনির্ধারক ও বিনিয়োগকারীদের জন্য বাস্তবমুখী করণীয়ও বেরিয়ে আসে।

মূল অন্তর্দৃষ্টি: পাঁচটি ধারাবাহিক থিম

১) অল্পসংখ্যক প্রতিষ্ঠানই অধিকাংশ নতুন চাকরি তৈরি করে
উচ্চ-বৃদ্ধির (হাই-গ্রোথ) প্রতিষ্ঠানযাদের অনুপাত আনুষ্ঠানিক ব্যবসায়ের পাঁচটিরও কমে একটিঅনেক দেশে নতুন চাকরির ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত সৃষ্টি করে। তবে এই স্পার্ট’ বা দ্রুত উত্থান টেকসই হয় নাসাধারণত ১০টির মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানই পরের তিন বছরে আবারও একই গতিতে বাড়তে পারে।

২) সবচেয়ে গতিশীল নিয়োগকর্তারা সাধারণত তরুণ’—শুরুর আকার যত বড় বা ছোট হোক
প্রতিষ্ঠান চালুর প্রথম পাঁচ বছরে তারা যে গতিতে কর্মী যোগ করেপরিণত প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে সেই গতি ধরা কঠিন। প্রাথমিক আকার বড় না হলেও তরুণ প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত বাড়েনতুন যন্ত্রপাতি নেয়প্রক্রিয়া আপডেট করে এবং ডিজিটাল-দক্ষ কর্মী নিয়োগে এগিয়ে থাকে। তাই সাফল্য কেবল শুরুতে বড়’ হওয়ায় নয়তরুণ হওয়ার মধ্যেই থাকে পরিবর্তনের গতি।

৩) সংযুক্ত’ ও সহজলভ্য স্থানে ব্যবসা বেশি সফল হয়
ভালো সড়ক-যোগাযোগবাজারে প্রবেশাধিকারঅবকাঠামো ও শহর-নিকটতাএই সংযোগগুলো ব্যবসাকে বাঁচতে ও বাড়তে সাহায্য করে। সংযুক্ত লোকেশনগুলোতে দক্ষ জনবলসরবরাহকারী ও ক্রেতাসবকিছুরই প্রবাহ বেশি থাকেযা উৎপাদন ও নিয়োগকে ত্বরান্বিত করে।

৪) ভ্যালু চেইনবহুজাতিক ও দক্ষ সরবরাহকারীর সঙ্গে সংযুক্ত হলে বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়
যে প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় বা বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনে যুক্তবহুজাতিকের সঙ্গে কাজ করে বা পরিশীলিত সরবরাহকারীর নেটওয়ার্কে ঢোকেতাদের প্রযুক্তিব্যবস্থাপনা ও বাজার-প্রবেশ ক্ষমতা দ্রুত উন্নত হয়ফলস্বরূপ নিয়োগও বাড়ে।

৫) উন্নত ব্যবস্থাপনা-পদ্ধতি ও প্রযুক্তি গ্রহণই দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের ভিত
ভালো ম্যানেজমেন্ট প্র্যাকটিসউৎপাদন পরিকল্পনামান নিয়ন্ত্রণলক্ষ্য-ভিত্তিক পর্যবেক্ষণএবং নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ প্রতিষ্ঠানকে উৎপাদনশীল করেঝুঁকি সামলাতে সক্ষম করে এবং নতুন চাকরির চাহিদা তৈরি করে।

যে সেক্টরেই হোকউচ্চ-বৃদ্ধির প্রতিষ্ঠান সবখানেই আছেতবে ধারাবাহিকতা চ্যালেঞ্জ

উচ্চ-বৃদ্ধির প্রতিষ্ঠান কেবল একটি বা দু-একটি খাতে সীমিত নয়। কোত দিভোয়ার ও ইন্দোনেশিয়ার প্রক্রিয়াজাত খাদ্যশিল্পইথিওপিয়ার আসবাবশিল্পব্রাজিলের টেক্সটাইলমেক্সিকোর কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিক্সআর হাঙ্গেরির ব্যবসা ও পেশাগত সেবায়ও এমন প্রতিষ্ঠান আছে। তবু ধারাবাহিকভাবে হাই-গ্রোথ’ থাকা কঠিনঅনেকেই এক দফা দ্রুত ওঠার পর গতি হারায়। টেকসই বৃদ্ধির চাবিকাঠি তাই সংযুক্তিব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তিশুধু একবারের স্পার্ট’ নয়।

 

তরুণ প্রতিষ্ঠান বেশি চাকরি যোগ করেকিন্তু টিকে থাকার ঝুঁকিও বেশি

অনেক উন্নয়নশীল দেশে মোট চাকরির বড় অংশ ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোতেকম কর্মী নিয়েও তারা সামগ্রিকভাবে কর্মসংস্থানের বড় যোগানদাতা। উদাহরণ হিসেবে বুরকিনা ফাসোক্যামেরুনঘানা ও রুয়ান্ডায় ১০ জনের কম কর্মী আছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো মোট কর্মসংস্থানের আনুমানিক ৪০৫০ শতাংশ বহন করে। তুর্কিয়েতে এই হার প্রায় ৪৩ শতাংশব্রাজিলে ৬০ শতাংশেরও বেশি এবং ভারতে প্রায় ৮০ শতাংশের কাছাকাছি। তবে ছোট হওয়া মানেই যে স্থিতিশীলদীর্ঘস্থায়ী চাকরি তৈরি হবেতা নয়অনেকে বাড়ার সক্ষমতা ও স্থায়িত্বের ঘাটতিতে থাকে।

উচ্চ-বৃদ্ধি মূলত তরুণদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতিষ্ঠানের অংশ উচ্চ-বৃদ্ধির দলে ব্রাজিলে প্রায় ৬৪ শতাংশকোত দিভোয়ারে ৬২ শতাংশইথিওপিয়ায় ৪৩ শতাংশহাঙ্গেরিতে ৬১ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ৩৫ শতাংশ। কলম্বিয়ায় চার বছর বা তার কম বয়সী প্রতিষ্ঠানগুলো পুরনো প্রতিষ্ঠানের তুলনায় দুই থেকে তিন গুণ দ্রুত বাড়ে। অবশ্য স্টার্টআপ ও তরুণ প্রতিষ্ঠানগুলোর এক্সিট’ বা বাজার ছাড়ার হারও তুলনামূলক বেশিএকধরনের আপ-অর-আউট’ গতিশীলতা। তবু এই ওঠানামাই উদ্যোক্তা-চাঞ্চল্যউৎপাদনশীলতা ও সামগ্রিক চাকরি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখেযুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতাও তাই দেখায়।

নীতিগত বার্তা: বড় পরিসরে চাকরি সৃষ্টিতে করণীয়

১) তরুণ ও গতিশীল প্রতিষ্ঠান শনাক্তকরণ এবং পুঁজি-সহায়তা
ট্যাক্সজামানত ও গ্যারান্টি-সহায়ক প্রণোদনাস্কেল-আপ তহবিলইকুইটি/কোয়াসি-ইকুইটিএসবের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় তরুণ প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে দেওয়া।

২) সংযুক্ত’ লোকেশন গড়ে তোলা
পরিবহনবিদ্যুৎ ও ডিজিটাল অবকাঠামোসহ শিল্পসমূহের ক্লাস্টারলজিস্টিক হাবএগুলোতে বিনিয়োগ করলে প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজারে প্রবেশাধিকার ও দক্ষ মানবসম্পদে পৌঁছানো সহজ হয়।

৩) ভ্যালু চেইনে ঢোকাবহুজাতিক ও উন্নত সরবরাহকারীর সঙ্গে সেতুবন্ধন
লোকাল কনটেন্ট প্রোগ্রামসাপ্লায়ার-ডেভেলপমেন্টমান-সনদ/সার্টিফিকেশনএসবের মাধ্যমে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে সংযুক্ত করা।

৪) ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তি-আপগ্রেডে সহায়তা
ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিংপ্রোডাকশন ও কোয়ালিটি সিস্টেমডিজিটালাইজেশন ও অটোমেশন গ্রহণে সহজ অর্থায়ন ও পরামর্শদীর্ঘমেয়াদে কর্মসংস্থানের মান ও সংখ্যা দুই-ই বাড়ায়।

সব তথ্য মিলিয়ে ছবিটা স্পষ্ট: অল্পসংখ্যকপ্রধানত তরুণ এবং ভালোভাবে সংযুক্ত’ প্রতিষ্ঠানই নতুন ও উন্নতমানের চাকরি সৃষ্টির মূল চালিকাশক্তি। ভ্যালু চেইনে প্রবেশশক্তিশালী ব্যবস্থাপনা এবং প্রযুক্তি গ্রহণএই তিনটি স্তম্ভ তাদের বৃদ্ধিকে টেকসই করে। সে অনুযায়ী নীতিগত সহায়তা ও বেসরকারি পুঁজি সঠিকভাবে নির্দেশিত হলেবৃহৎ পরিসরে কর্মসংস্থান তৈরির পথে বাস্তব অগ্রগতি সম্ভব।

জনপ্রিয় সংবাদ

জোহরান মামদানির সিরিয়ান স্ত্রী রামা দুয়াজি সম্পর্কে এই বিষয়গুলো কি জানেন?

কোন প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি ও ভালো চাকরি সৃষ্টি করে? ভারতে এই হার সব থেকে বেশি

০৯:০০:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে আগামী প্রজন্মের জন্য সুযোগ তৈরি করতে হলে কোন প্রতিষ্ঠান কোথায়কেন এবং কীভাবে নিয়োগ দেয়এগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করা জরুরি। কোন প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি এবং মানসম্মত চাকরি সৃষ্টি করবে তা আগে থেকে নির্ভুলভাবে বলা কঠিন হলেওসাম্প্রতিক গবেষণা থেকে কিছু স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়যেসব প্রতিষ্ঠানের চাকরি সৃষ্টির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশিতাদের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য থাকে। এসব থেকে নীতিনির্ধারক ও বিনিয়োগকারীদের জন্য বাস্তবমুখী করণীয়ও বেরিয়ে আসে।

মূল অন্তর্দৃষ্টি: পাঁচটি ধারাবাহিক থিম

১) অল্পসংখ্যক প্রতিষ্ঠানই অধিকাংশ নতুন চাকরি তৈরি করে
উচ্চ-বৃদ্ধির (হাই-গ্রোথ) প্রতিষ্ঠানযাদের অনুপাত আনুষ্ঠানিক ব্যবসায়ের পাঁচটিরও কমে একটিঅনেক দেশে নতুন চাকরির ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত সৃষ্টি করে। তবে এই স্পার্ট’ বা দ্রুত উত্থান টেকসই হয় নাসাধারণত ১০টির মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানই পরের তিন বছরে আবারও একই গতিতে বাড়তে পারে।

২) সবচেয়ে গতিশীল নিয়োগকর্তারা সাধারণত তরুণ’—শুরুর আকার যত বড় বা ছোট হোক
প্রতিষ্ঠান চালুর প্রথম পাঁচ বছরে তারা যে গতিতে কর্মী যোগ করেপরিণত প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে সেই গতি ধরা কঠিন। প্রাথমিক আকার বড় না হলেও তরুণ প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত বাড়েনতুন যন্ত্রপাতি নেয়প্রক্রিয়া আপডেট করে এবং ডিজিটাল-দক্ষ কর্মী নিয়োগে এগিয়ে থাকে। তাই সাফল্য কেবল শুরুতে বড়’ হওয়ায় নয়তরুণ হওয়ার মধ্যেই থাকে পরিবর্তনের গতি।

৩) সংযুক্ত’ ও সহজলভ্য স্থানে ব্যবসা বেশি সফল হয়
ভালো সড়ক-যোগাযোগবাজারে প্রবেশাধিকারঅবকাঠামো ও শহর-নিকটতাএই সংযোগগুলো ব্যবসাকে বাঁচতে ও বাড়তে সাহায্য করে। সংযুক্ত লোকেশনগুলোতে দক্ষ জনবলসরবরাহকারী ও ক্রেতাসবকিছুরই প্রবাহ বেশি থাকেযা উৎপাদন ও নিয়োগকে ত্বরান্বিত করে।

৪) ভ্যালু চেইনবহুজাতিক ও দক্ষ সরবরাহকারীর সঙ্গে সংযুক্ত হলে বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়
যে প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় বা বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনে যুক্তবহুজাতিকের সঙ্গে কাজ করে বা পরিশীলিত সরবরাহকারীর নেটওয়ার্কে ঢোকেতাদের প্রযুক্তিব্যবস্থাপনা ও বাজার-প্রবেশ ক্ষমতা দ্রুত উন্নত হয়ফলস্বরূপ নিয়োগও বাড়ে।

৫) উন্নত ব্যবস্থাপনা-পদ্ধতি ও প্রযুক্তি গ্রহণই দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের ভিত
ভালো ম্যানেজমেন্ট প্র্যাকটিসউৎপাদন পরিকল্পনামান নিয়ন্ত্রণলক্ষ্য-ভিত্তিক পর্যবেক্ষণএবং নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ প্রতিষ্ঠানকে উৎপাদনশীল করেঝুঁকি সামলাতে সক্ষম করে এবং নতুন চাকরির চাহিদা তৈরি করে।

যে সেক্টরেই হোকউচ্চ-বৃদ্ধির প্রতিষ্ঠান সবখানেই আছেতবে ধারাবাহিকতা চ্যালেঞ্জ

উচ্চ-বৃদ্ধির প্রতিষ্ঠান কেবল একটি বা দু-একটি খাতে সীমিত নয়। কোত দিভোয়ার ও ইন্দোনেশিয়ার প্রক্রিয়াজাত খাদ্যশিল্পইথিওপিয়ার আসবাবশিল্পব্রাজিলের টেক্সটাইলমেক্সিকোর কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিক্সআর হাঙ্গেরির ব্যবসা ও পেশাগত সেবায়ও এমন প্রতিষ্ঠান আছে। তবু ধারাবাহিকভাবে হাই-গ্রোথ’ থাকা কঠিনঅনেকেই এক দফা দ্রুত ওঠার পর গতি হারায়। টেকসই বৃদ্ধির চাবিকাঠি তাই সংযুক্তিব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তিশুধু একবারের স্পার্ট’ নয়।

 

তরুণ প্রতিষ্ঠান বেশি চাকরি যোগ করেকিন্তু টিকে থাকার ঝুঁকিও বেশি

অনেক উন্নয়নশীল দেশে মোট চাকরির বড় অংশ ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোতেকম কর্মী নিয়েও তারা সামগ্রিকভাবে কর্মসংস্থানের বড় যোগানদাতা। উদাহরণ হিসেবে বুরকিনা ফাসোক্যামেরুনঘানা ও রুয়ান্ডায় ১০ জনের কম কর্মী আছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো মোট কর্মসংস্থানের আনুমানিক ৪০৫০ শতাংশ বহন করে। তুর্কিয়েতে এই হার প্রায় ৪৩ শতাংশব্রাজিলে ৬০ শতাংশেরও বেশি এবং ভারতে প্রায় ৮০ শতাংশের কাছাকাছি। তবে ছোট হওয়া মানেই যে স্থিতিশীলদীর্ঘস্থায়ী চাকরি তৈরি হবেতা নয়অনেকে বাড়ার সক্ষমতা ও স্থায়িত্বের ঘাটতিতে থাকে।

উচ্চ-বৃদ্ধি মূলত তরুণদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতিষ্ঠানের অংশ উচ্চ-বৃদ্ধির দলে ব্রাজিলে প্রায় ৬৪ শতাংশকোত দিভোয়ারে ৬২ শতাংশইথিওপিয়ায় ৪৩ শতাংশহাঙ্গেরিতে ৬১ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ৩৫ শতাংশ। কলম্বিয়ায় চার বছর বা তার কম বয়সী প্রতিষ্ঠানগুলো পুরনো প্রতিষ্ঠানের তুলনায় দুই থেকে তিন গুণ দ্রুত বাড়ে। অবশ্য স্টার্টআপ ও তরুণ প্রতিষ্ঠানগুলোর এক্সিট’ বা বাজার ছাড়ার হারও তুলনামূলক বেশিএকধরনের আপ-অর-আউট’ গতিশীলতা। তবু এই ওঠানামাই উদ্যোক্তা-চাঞ্চল্যউৎপাদনশীলতা ও সামগ্রিক চাকরি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখেযুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতাও তাই দেখায়।

নীতিগত বার্তা: বড় পরিসরে চাকরি সৃষ্টিতে করণীয়

১) তরুণ ও গতিশীল প্রতিষ্ঠান শনাক্তকরণ এবং পুঁজি-সহায়তা
ট্যাক্সজামানত ও গ্যারান্টি-সহায়ক প্রণোদনাস্কেল-আপ তহবিলইকুইটি/কোয়াসি-ইকুইটিএসবের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় তরুণ প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে দেওয়া।

২) সংযুক্ত’ লোকেশন গড়ে তোলা
পরিবহনবিদ্যুৎ ও ডিজিটাল অবকাঠামোসহ শিল্পসমূহের ক্লাস্টারলজিস্টিক হাবএগুলোতে বিনিয়োগ করলে প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজারে প্রবেশাধিকার ও দক্ষ মানবসম্পদে পৌঁছানো সহজ হয়।

৩) ভ্যালু চেইনে ঢোকাবহুজাতিক ও উন্নত সরবরাহকারীর সঙ্গে সেতুবন্ধন
লোকাল কনটেন্ট প্রোগ্রামসাপ্লায়ার-ডেভেলপমেন্টমান-সনদ/সার্টিফিকেশনএসবের মাধ্যমে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে সংযুক্ত করা।

৪) ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তি-আপগ্রেডে সহায়তা
ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিংপ্রোডাকশন ও কোয়ালিটি সিস্টেমডিজিটালাইজেশন ও অটোমেশন গ্রহণে সহজ অর্থায়ন ও পরামর্শদীর্ঘমেয়াদে কর্মসংস্থানের মান ও সংখ্যা দুই-ই বাড়ায়।

সব তথ্য মিলিয়ে ছবিটা স্পষ্ট: অল্পসংখ্যকপ্রধানত তরুণ এবং ভালোভাবে সংযুক্ত’ প্রতিষ্ঠানই নতুন ও উন্নতমানের চাকরি সৃষ্টির মূল চালিকাশক্তি। ভ্যালু চেইনে প্রবেশশক্তিশালী ব্যবস্থাপনা এবং প্রযুক্তি গ্রহণএই তিনটি স্তম্ভ তাদের বৃদ্ধিকে টেকসই করে। সে অনুযায়ী নীতিগত সহায়তা ও বেসরকারি পুঁজি সঠিকভাবে নির্দেশিত হলেবৃহৎ পরিসরে কর্মসংস্থান তৈরির পথে বাস্তব অগ্রগতি সম্ভব।