রুনির ঘোষণায় বিতর্ক
আইরিশ ঔপন্যাসিক স্যালি রুনি ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি তাঁর বই বিক্রি ও নাট্যরূপ থেকে পাওয়া রয়্যালটি এবং জনসমক্ষে নিজের অবস্থান ব্যবহার করবেন ফিলিস্তিন অ্যাকশনের পক্ষে। এর ফলে তিনি যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে গ্রেপ্তারের মুখে পড়তে পারেন বলে এক আইন বিশেষজ্ঞ সতর্ক করেছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, এই সংগঠনকে সমর্থন করা সন্ত্রাসবিরোধী অপরাধের অন্তর্ভুক্ত।
রুনির জনপ্রিয় উপন্যাস ‘নরমাল পিপল’ ও ‘কনভারসেশন্স উইথ ফ্রেন্ডস’ এবং এগুলোর বিবিসি নাট্যরূপ থেকে পাওয়া রয়্যালটি তিনি এ উদ্দেশ্যে ব্যয় করবেন বলে জানিয়েছেন।
আইন বিশেষজ্ঞের সতর্কতা
আইনজীবী সাদাকাত কাদরি বলেন, সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনের উদ্দেশ্যে অর্থ গ্রহণ করা ২০০০ সালের সন্ত্রাসবাদ আইনের ধারা ১৫-এর অধীনে অপরাধ। ফলে রুনিকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তার করা সম্ভব। তিনি আরও জানান, এই আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে অযৌক্তিক কঠোরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
ডাউনিং স্ট্রিটকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়, যারা ফিলিস্তিন অ্যাকশনে অর্থ সহায়তা দিতে চান তাদের জন্য সরকারের বার্তা কী হবে, এক মুখপাত্র জানান: “একটি নিষিদ্ধ সংগঠনকে সমর্থন করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে অপরাধ। পুলিশ অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।”
জুলাই মাসে সংগঠনটি নিষিদ্ধ ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত ৭০০ জনেরও বেশি মানুষকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রুনির বক্তব্য
রুনি শনিবার এক নিবন্ধে লেখেন:
“আমার বই এখনো ব্রিটেনে প্রকাশিত হচ্ছে, বইয়ের দোকান এমনকি সুপারমার্কেটেও সহজলভ্য। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিবিসি আমার দুটি উপন্যাসের নাট্যরূপ প্রচার করেছে এবং এর মাধ্যমে আমাকে নিয়মিত অর্থ প্রদান করছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যে আমার এসব রয়্যালটি ও জনসমক্ষে আমার অবস্থান, আমি সবকিছু ব্যবহার করব ফিলিস্তিন অ্যাকশনের পক্ষে এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে সরাসরি পদক্ষেপকে সমর্থন করার জন্য।”
ফিলিস্তিন অ্যাকশনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড
ফিলিস্তিন অ্যাকশনকে যুক্তরাজ্য সরকার সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে যখন তাদের কর্মীরা অক্সফোর্ডশায়ারের এক আরএএফ ঘাঁটিতে প্রবেশ করে দুটি বিমানে রঙ স্প্রে করে। রুনি এর আগেও লিখেছিলেন যে কর্মীরা জানতেন তাদের কাজ বেআইনি, তবে “সত্যিকারের রাজনৈতিক প্রতিরোধ সবসময়ই আইন ভাঙার সঙ্গে জড়িত।”
রাজনৈতিক সমালোচনা
সাদাকাত কাদরি আরও উল্লেখ করেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার ফিলিস্তিন অ্যাকশনকে আইএসআইএল-এর মতো সংগঠনের সঙ্গে একসাথে তালিকাভুক্ত করায় এখন বিবিসিও আইনি ঝুঁকিতে পড়তে পারে, কারণ তারা রয়্যালটি প্রদান চালিয়ে গেলে অপরাধী সাব্যস্ত হতে পারে। তিনি বলেন, স্বৈরশাসক সরকারগুলো সাধারণত লেখকদের ভয় দেখায় এবং গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, কিন্তু ব্রিটেনের লেবার সরকারও এমন পথে হাঁটছে বিষয়টি বিস্ময়কর।
এই বিতর্ক শুধু স্যালি রুনির ব্যক্তিগত অবস্থানকেই কেন্দ্র করে নয়, বরং যুক্তরাজ্যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগ এবং আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রতিরোধ আন্দোলন নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে ।
লেখক স্যালি রুনি ফিলিস্তিন অ্যাকশনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে গ্রেপ্তারের ঝুঁকিতে
-
সারাক্ষণ রিপোর্ট - ১২:৩৯:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
- 36
জনপ্রিয় সংবাদ



















