অবকাঠামো উন্নয়নের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য
ভিয়েতনাম সরকার ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ৩ হাজার কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে পরিবহন ও নির্মাণ খাত সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। কেন্দ্র থেকে স্থানীয় পর্যায় পর্যন্ত বাধা দূর করা, সময়সীমা কঠোরভাবে মেনে চলা এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে সরকার অগ্রসর হচ্ছে।
প্রথমার্ধের অগ্রগতি
২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে প্রতিকূল আবহাওয়া, জমি অধিগ্রহণে বিলম্ব এবং নির্মাণসামগ্রীর সংকট সত্ত্বেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে। নির্মাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এ সময়ে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ভিয়েতনামের ব্যয় হয়েছে ৬৬,৫৩২ ট্রিলিয়ন ডং (প্রায় ২.৫৬ বিলিয়ন ডলার)।

নতুন প্রকল্প ও উদ্বোধন
প্রথমার্ধে ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ ৫টি নতুন প্রকল্প শুরু হয়েছে। আগস্ট মাসেই আরও ৩০২ কিলোমিটার যোগ হবে তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে—দাউ গিয়াই-থান ফু, হ্যানয় রিং রোড-৪ (সেকশন ৩), এবং গিয়া নinh-চন থান।
একই সময়ে ভুং আং-বুং(৫৫ কিমি), ভ্যান নিং-ক্যাম লো(৬৬ কিমি), ভ্যান ফং-নাহা ট্রাং(১৩ কিমি) এবং আরও কয়েকটি রুট চালু হলে মোট এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে ২,৪৭৬ কিলোমিটার।
সম্ভাব্য বিলম্ব
তবে বড় ও জটিল প্রকল্পগুলোতে দেরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, বিশেষ করে দীর্ঘ বর্ষার কারণে। এর মধ্যে রয়েছে হো চি মিন সিটি রিং রোড-৩ এর অংশবিশেষ, বিয়েন হোয়া-ভুং টাউ(১৬ কিমি), এবং টুয়েন কোয়াং-হা জিয়াং রুট।
ডং নাই প্রদেশের সাফল্য
ডং নাই প্রদেশ জমি অধিগ্রহণে বিশেষভাবে এগিয়ে রয়েছে। প্রদেশটি লং থান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও হো চি মিন রিং রোড-৩ এর জন্য জমি পুরোপুরি হস্তান্তর করেছে। বিয়েন হোয়া-ভুং টাউ এক্সপ্রেসওয়ের জন্যও প্রায় ৯৯ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
উত্তরাঞ্চলের অগ্রগতি
হু নিগি-চি লাং এক্সপ্রেসওয়ে, যা হ্যানয়ের সাথে লাং সনকে যুক্ত করবে, শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখানে প্রায় ২,৬৫০ জন শ্রমিক ও ১,২০০ এর বেশি যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে। প্রকল্পের ৪৩ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। তবে ১০২টি পরিবার পুনর্বাসন এবং ৩২টি প্রযুক্তিগত অবকাঠামো সমস্যার সমাধান বাকি রয়েছে।
মধ্যাঞ্চল ও মেকং ডেল্টা
মধ্য ভিয়েতনামের ভুং আং-বুং এক্সপ্রেসওয়ে দ্রুত এগোচ্ছে। ৯৪২ মিটার দীর্ঘ ব্রিজ নম্বর-১ এ বড় অংশের কাজ শেষ হয়েছে। তবে বালুর সংকট বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
মেকং ডেল্টায় চাউ ডক-ক্যান থো-সক ট্রাং এক্সপ্রেসওয়ের ২, ৩ ও ৪ নম্বর অংশে ৩৯ থেকে ৪৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তবে প্রায় ৭ মিলিয়ন ঘনমিটার বালু ও ১.১৬ মিলিয়ন ঘনমিটার পাথরের ঘাটতি রয়েছে।

প্রযুক্তিগত নতুন উদ্যোগ
বালুর ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে দুর্বল মাটিতে সিমেন্ট-সয়েল পাইল প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়েছে, যা দ্রুত ভূমি শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা
প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন স্পষ্ট করে বলেছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ৩ হাজার কিমি এক্সপ্রেসওয়ে শেষ করা একটি কৌশলগত লক্ষ্য। এ জন্য কেন্দ্র থেকে স্থানীয় পর্যায় পর্যন্ত সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি জমি অধিগ্রহণকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকারকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসাথে নির্মাণের মান, সময়সীমা, নিরাপত্তা ও পরিবেশগত নিয়ম কঠোরভাবে মানার উপর জোর দিয়েছেন
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন যে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভিয়েতনাম ৩ হাজার কিমি এক্সপ্রেসওয়ে সময়মতো শেষ করবে। এটি দেশের কৌশলগত অবকাঠামো পরিচালনার সক্ষমতার একটি বড় প্রমাণ হয়ে দাঁড়াবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















