০১:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বিমানবন্দরের জন্য নতুন বাহিনী ‘এয়ার গার্ড’ মিয়ানমারের কালোবাজারি যুদ্ধ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করছে ফেড সুদের হার কমাল, আরও কমানোর ইঙ্গিত; নতুন গভর্নর মিরানের ভিন্ন মত এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা: ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মামলা বোয়িং ও হানিওয়েলের বিরুদ্ধে “ভারতের আরবান কোম্পানির শেয়ার বাজারে অভিষেক: প্রথম দিনেই ৭৪% উল্লম্ফন, বাজারমূল্য ছুঁল ৩ বিলিয়ন ডলার” ভারতের চালের মজুত সর্বকালের সর্বোচ্চ, গমেও চার বছরের রেকর্ড ব্রিটেনের সিদ্ধান্ত: এই সপ্তাহান্তে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি জাপান ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে না যে সাক্ষাৎকারটি নেয়নি মোদির উত্তরসূরি নিয়ে জল্পনা সত্ত্বেও ক্ষমতায় দৃঢ় অবস্থান

ফ্যান্টাসি গেমিং আইন: চাপে পড়তে পারে ক্রিকেট

আইপিএল ও স্পনসরশিপের সংকট

২০২৫ সালের আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে অজিঙ্কা রাহানে যখন কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে মাঠে নামেন কিংবা ফাইনালে শ্রেয়াস আইয়ার যখন পাঞ্জাব কিংসের জার্সি গায়ে খেলেন—একটি বিষয় ছিল অভিন্ন: তাদের জার্সিতে স্পনসর হিসেবে দৃশ্যমান ছিল ড্রিম১১।

কিন্তু সম্প্রতি লোকসভায় পাস হওয়া ‘অনলাইন গেমিং প্রচার ও নিয়ন্ত্রণ বিল ২০২৫’ বাস্তবায়িত হলে এই পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। কারণ, বিলটি কার্যকর হলে অর্থভিত্তিক গেমিং প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে ফ্যান্টাসি গেমিংয়ের বাজারে, যেখানে ড্রিম১১ শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। এতদিন ফ্যান্টাসি গেমিংকে দক্ষতার খেলা হিসেবে ধরা হলেও নতুন আইন সেটিকে আর সেইভাবে বিবেচনা করবে না।

রাজস্বের শৃঙ্খলে বড় আঘাত

স্পনসরশিপ ছাড়াও ক্রিকেট রাজস্বের অন্য পথগুলোতেও প্রভাব পড়বে। কারণ, ফ্যান্টাসি গেমিং প্রতিষ্ঠানগুলো স্পনসরশিপের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনেও সমানভাবে বিনিয়োগ করে। একবার আইপিএলের মতো আসরে প্রধান স্পনসর হওয়ার পর তারা টেলিভিশন সম্প্রচারের সময় কিনে নেয়, বিজ্ঞাপনের জন্য তারকা ক্রিকেটারদের চুক্তিবদ্ধ করে। গত এক দশকে এই খাত সূর্যের মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল, কিন্তু এখন ঝুঁকির মুখে।

Chennai Super Kings hope to be in UAE by August 13 | Cricket News - Times  of India

বড় বড় চুক্তি হুমকির মুখে

চেন্নাই সুপার কিংসের স্পনসর ছিল ভিশন-১১, যার প্রধান প্রচারক ছিলেন সুরেশ রায়না। অন্যদিকে, সৌরভ গাঙ্গুলীর সমর্থনে মাই-১১ সার্কেল গত বছর ৬২৫ কোটি টাকা দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য আইপিএলের সরকারি পার্টনার হয়েছিল, যেখানে তারা ড্রিম১১-কেও হারিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ড্রিম১১ পাঁচটি আইপিএল দলের প্রধান জার্সি স্পনসরশিপ নেয় এবং বাকি দলগুলোর জন্য হেলমেট কিংবা জার্সির হাতায়ও জায়গা কিনে নেয়।

শিল্প বিশেষজ্ঞদের হিসেবে, ফ্যান্টাসি গেমিংয়ের প্রায় ৭০ শতাংশ আয়ের উৎস আইপিএল মৌসুম। তাই আইন কার্যকর হলে স্পনসরশিপ ফাঁকা হয়ে যাবে এবং দলগুলোকে নতুন খাত খুঁজতে হবে।

বিসিসিআই ও জাতীয় দলে প্রভাব

ড্রিম১১-এর সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ৩৫৮ কোটি টাকার একটি চুক্তি রয়েছে, যা আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত চলবে। তবে নতুন আইন কার্যকর হলে ভারতীয় দলের জার্সিতেও আর ড্রিম১১-এর নাম দেখা নাও যেতে পারে।

BCCI issues clarification regarding fraudulent advertisements promising  entry into NCA

২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি আইসিসির সঙ্গেও অংশীদারিত্ব করেছে। বর্তমানে ফ্যান্টাসি গেমিং বাজারের ৯০ শতাংশ দখলে রয়েছে ড্রিম১১-এর। তবে আইনের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে তারা এখনো প্রকাশ্যে কিছু জানায়নি।

ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত চুক্তি ও তদন্ত

অনেক বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটারও এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ে চুক্তিবদ্ধ। সম্প্রতি অর্থপাচারের অভিযোগে অবৈধ অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এ প্রক্রিয়ায় সাবেক অলরাউন্ডার সুরেশ রায়নার জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

সরকারের অবস্থান ও আপত্তি

সরকারের দাবি, তারা যুবসমাজকে বিভ্রান্তিকর প্রতিশ্রুতি দেওয়া ‘রিয়েল-মানি গেমিং’ অ্যাপ থেকে সুরক্ষা দিতে চায়। এসব অ্যাপ মানুষকে আসক্ত করে তুলছে এবং অনেক পরিবার আর্থিক বিপর্যয়ে পড়ছে।

অন্যদিকে, ফ্যান্টাসি স্পোর্টস ফেডারেশন (FIFS), যার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ড্রিম১১, ইতোমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছে।

বিমানবন্দরের জন্য নতুন বাহিনী ‘এয়ার গার্ড’

ফ্যান্টাসি গেমিং আইন: চাপে পড়তে পারে ক্রিকেট

০৬:০১:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

আইপিএল ও স্পনসরশিপের সংকট

২০২৫ সালের আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে অজিঙ্কা রাহানে যখন কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে মাঠে নামেন কিংবা ফাইনালে শ্রেয়াস আইয়ার যখন পাঞ্জাব কিংসের জার্সি গায়ে খেলেন—একটি বিষয় ছিল অভিন্ন: তাদের জার্সিতে স্পনসর হিসেবে দৃশ্যমান ছিল ড্রিম১১।

কিন্তু সম্প্রতি লোকসভায় পাস হওয়া ‘অনলাইন গেমিং প্রচার ও নিয়ন্ত্রণ বিল ২০২৫’ বাস্তবায়িত হলে এই পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। কারণ, বিলটি কার্যকর হলে অর্থভিত্তিক গেমিং প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে ফ্যান্টাসি গেমিংয়ের বাজারে, যেখানে ড্রিম১১ শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। এতদিন ফ্যান্টাসি গেমিংকে দক্ষতার খেলা হিসেবে ধরা হলেও নতুন আইন সেটিকে আর সেইভাবে বিবেচনা করবে না।

রাজস্বের শৃঙ্খলে বড় আঘাত

স্পনসরশিপ ছাড়াও ক্রিকেট রাজস্বের অন্য পথগুলোতেও প্রভাব পড়বে। কারণ, ফ্যান্টাসি গেমিং প্রতিষ্ঠানগুলো স্পনসরশিপের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনেও সমানভাবে বিনিয়োগ করে। একবার আইপিএলের মতো আসরে প্রধান স্পনসর হওয়ার পর তারা টেলিভিশন সম্প্রচারের সময় কিনে নেয়, বিজ্ঞাপনের জন্য তারকা ক্রিকেটারদের চুক্তিবদ্ধ করে। গত এক দশকে এই খাত সূর্যের মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল, কিন্তু এখন ঝুঁকির মুখে।

Chennai Super Kings hope to be in UAE by August 13 | Cricket News - Times  of India

বড় বড় চুক্তি হুমকির মুখে

চেন্নাই সুপার কিংসের স্পনসর ছিল ভিশন-১১, যার প্রধান প্রচারক ছিলেন সুরেশ রায়না। অন্যদিকে, সৌরভ গাঙ্গুলীর সমর্থনে মাই-১১ সার্কেল গত বছর ৬২৫ কোটি টাকা দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য আইপিএলের সরকারি পার্টনার হয়েছিল, যেখানে তারা ড্রিম১১-কেও হারিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ড্রিম১১ পাঁচটি আইপিএল দলের প্রধান জার্সি স্পনসরশিপ নেয় এবং বাকি দলগুলোর জন্য হেলমেট কিংবা জার্সির হাতায়ও জায়গা কিনে নেয়।

শিল্প বিশেষজ্ঞদের হিসেবে, ফ্যান্টাসি গেমিংয়ের প্রায় ৭০ শতাংশ আয়ের উৎস আইপিএল মৌসুম। তাই আইন কার্যকর হলে স্পনসরশিপ ফাঁকা হয়ে যাবে এবং দলগুলোকে নতুন খাত খুঁজতে হবে।

বিসিসিআই ও জাতীয় দলে প্রভাব

ড্রিম১১-এর সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ৩৫৮ কোটি টাকার একটি চুক্তি রয়েছে, যা আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত চলবে। তবে নতুন আইন কার্যকর হলে ভারতীয় দলের জার্সিতেও আর ড্রিম১১-এর নাম দেখা নাও যেতে পারে।

BCCI issues clarification regarding fraudulent advertisements promising  entry into NCA

২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি আইসিসির সঙ্গেও অংশীদারিত্ব করেছে। বর্তমানে ফ্যান্টাসি গেমিং বাজারের ৯০ শতাংশ দখলে রয়েছে ড্রিম১১-এর। তবে আইনের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে তারা এখনো প্রকাশ্যে কিছু জানায়নি।

ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত চুক্তি ও তদন্ত

অনেক বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটারও এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ে চুক্তিবদ্ধ। সম্প্রতি অর্থপাচারের অভিযোগে অবৈধ অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এ প্রক্রিয়ায় সাবেক অলরাউন্ডার সুরেশ রায়নার জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

সরকারের অবস্থান ও আপত্তি

সরকারের দাবি, তারা যুবসমাজকে বিভ্রান্তিকর প্রতিশ্রুতি দেওয়া ‘রিয়েল-মানি গেমিং’ অ্যাপ থেকে সুরক্ষা দিতে চায়। এসব অ্যাপ মানুষকে আসক্ত করে তুলছে এবং অনেক পরিবার আর্থিক বিপর্যয়ে পড়ছে।

অন্যদিকে, ফ্যান্টাসি স্পোর্টস ফেডারেশন (FIFS), যার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ড্রিম১১, ইতোমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছে।