০৪:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
টোকিও গেম শো ২০২৫: গেমিং জগতের উৎসব শুরু বিশ্ব সঙ্গীতে এআই-এর সৃজনশীল ঢেউ আইএফএ বার্লিন ২০২৫: যে গ্যাজেটগুলো নিয়ে সবার আলোচনা এআই প্রশিক্ষণে আইনি নজির: লেখকদের সাথে Anthropic-এর $১.৫ বিলিয়ন সমঝোতা যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় আকাশ হামলা লন্ডনের ডানপন্থী সমাবেশে সহিংসতা, রেকর্ড সমাগমে উত্তেজনা দোহায় হামাস নেতাদের ওপর হামলা, যুদ্ধবিরতির আলাপ জটিলতায় নতুন গবেষণা: আটলান্টিক প্রবাহ ভাঙার ঝুঁকি এখন অনেক বেশি” ডাকসু ও জাকসুতে বৈষম্যবিরোধীদের বিপর্যয়, চ্যালেঞ্জের মুখে এনসিপি? জাতীয় নির্বাচনকে ডাকসুর সঙ্গে মেলানো যাবে না, মডেল হিসেবে কাজ করবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ব্রিটিশ চলচ্চিত্র তারকা ও ‘সুপারম্যান’ খলনায়ক টেরেন্স স্ট্যাম্প আর নেই

ব্রিটিশ অভিনেতা টেরেন্স স্ট্যাম্প রবিবার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। পরিবার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও কোথায় বা কী কারণে তিনি মারা গেছেন, তা জানানো হয়নি। ১৯৩৮ সালের ২২ জুলাই লন্ডনে জন্ম নেওয়া স্ট্যাম্প ছিলেন ব্রিটিশ মার্চেন্ট নেভির টাগবোট শ্রমিক থমাস স্ট্যাম্প এবং ইথেল (পেরট) স্ট্যাম্পের সন্তান। পূর্ব লন্ডনের নিম্ন আয়ের এলাকায় শৈশব কাটান তিনি। স্কুলে তাঁকে ইট-ভাটা শ্রমিক বা দোকানের ম্যানেজার হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাঁকে অভিনয়ের পথে নিয়ে যায়।

প্রথম সাফল্য

মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি চলচ্চিত্রে বড় সাফল্য পান হারম্যান মেলভিলের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত বিলি বাড (১৯৬২)-তে। সেখানে এক তরুণ নাবিকের ভূমিকায় তাঁর আবেগময় অভিনয় তাঁকে অস্কারের জন্য মনোনয়ন ও গোল্ডেন গ্লোব এনে দেয়। সাংবাদিকরা তাঁর নীল চোখকে বলেছিলেন “হৃদয়ভাঙা চোখ”।

ভিন্ন চরিত্রে রূপদান

তিন বছর পর দ্য কালেক্টর (১৯৬৫)-এ অন্ধকার মানসিক রোগীর চরিত্রে অভিনয় করে কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান তিনি। এরপর ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড (১৯৬৭)-এ নিষ্ঠুর সার্জেন্ট ট্রয়ের চরিত্রে অভিনয় করে আবারও আলোচনায় আসেন। সমালোচকরা তাঁর অভিনয়কে একইসঙ্গে ভীতিকর ও বাস্তবসম্মত বলে আখ্যা দেন।

হলিউডে প্রত্যাবর্তন

প্রায় এক দশক চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকার পর স্ট্যাম্প ফিরে আসেন চরিত্রাভিনেতা হিসেবে। সুপারম্যান (১৯৭৮) এবং সুপারম্যান II (১৯৮০)-এ জেনারেল জড চরিত্রে অভিনয় করে নতুন প্রজন্মের দর্শকের কাছে খলনায়ক হিসেবে জায়গা করে নেন। পর্দায় তাঁর উপস্থিতি ছিল একইসঙ্গে ভয়ঙ্কর ও আকর্ষণীয়।

নতুন রূপে ‘প্রিসিলা’

তাঁর অভিনয় জীবনের আরেকটি স্মরণীয় অধ্যায় দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অব প্রিসিলা, কুইন অব দ্য ডেজার্ট (১৯৯৪)। সেখানে তিনি এক মধ্যবয়সী ট্রান্সজেন্ডার নারীর ভূমিকায় অভিনয় করেন। এই চরিত্র সম্পর্কে তিনি ২০১৯ সালে বলেন, “আমার ভেতরে নারীত্বের দিকটা সবসময় প্রবল ছিল, আর এই চরিত্র সেটি প্রকাশের সুযোগ দিয়েছিল।”

দীর্ঘ ক্যারিয়ার

স্ট্যাম্পের ক্যারিয়ার পাঁচ দশকেরও বেশি সময়জুড়ে বিস্তৃত ছিল। তিনি অভিনয় করেছেন ৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে। এর মধ্যে দ্য লাইমি (১৯৯৯)-এ তাঁর অভিনয় বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়। এছাড়া তিনি লিগ্যাল ঈগলস (১৯৮৬), ওয়াল স্ট্রিট (১৯৮৭), ইয়াং গানস (১৯৮৮), অ্যালিয়েন নেশন (১৯৮৮), স্টার ওয়ার্স: দ্য ফ্যান্টম মেনেস (১৯৯৯) এবং আনফিনিশড সং (২০১২)-তেও উল্লেখযোগ্য অভিনয় করেন।

ব্যক্তিগত জীবন ও উত্তরাধিকার

১৯৬০-এর দশকে তিনি সুপারমডেল জিন শ্রিম্পটন ও অভিনেত্রী জুলি ক্রিস্টির সঙ্গে আলোচিত সম্পর্কে জড়ান। ২০০২ সালে ৬৪ বছর বয়সে তিনি ২৯ বছরের অস্ট্রেলীয় ফার্মাসিস্ট এলিজাবেথ ও’রউর্ককে বিয়ে করেন। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয় ২০০৮ সালে।

টেরেন্স স্ট্যাম্প ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী অভিনেতা, যিনি খলনায়ক থেকে শুরু করে মানবিক ও জটিল চরিত্রে সমান দক্ষতায় অভিনয় করেছেন। তাঁর চোখের চাহনি আর স্বতন্ত্র উপস্থিতি তাঁকে করে তুলেছে চিরস্মরণীয়।

টোকিও গেম শো ২০২৫: গেমিং জগতের উৎসব শুরু

ব্রিটিশ চলচ্চিত্র তারকা ও ‘সুপারম্যান’ খলনায়ক টেরেন্স স্ট্যাম্প আর নেই

০৪:১৮:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

ব্রিটিশ অভিনেতা টেরেন্স স্ট্যাম্প রবিবার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। পরিবার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও কোথায় বা কী কারণে তিনি মারা গেছেন, তা জানানো হয়নি। ১৯৩৮ সালের ২২ জুলাই লন্ডনে জন্ম নেওয়া স্ট্যাম্প ছিলেন ব্রিটিশ মার্চেন্ট নেভির টাগবোট শ্রমিক থমাস স্ট্যাম্প এবং ইথেল (পেরট) স্ট্যাম্পের সন্তান। পূর্ব লন্ডনের নিম্ন আয়ের এলাকায় শৈশব কাটান তিনি। স্কুলে তাঁকে ইট-ভাটা শ্রমিক বা দোকানের ম্যানেজার হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাঁকে অভিনয়ের পথে নিয়ে যায়।

প্রথম সাফল্য

মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি চলচ্চিত্রে বড় সাফল্য পান হারম্যান মেলভিলের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত বিলি বাড (১৯৬২)-তে। সেখানে এক তরুণ নাবিকের ভূমিকায় তাঁর আবেগময় অভিনয় তাঁকে অস্কারের জন্য মনোনয়ন ও গোল্ডেন গ্লোব এনে দেয়। সাংবাদিকরা তাঁর নীল চোখকে বলেছিলেন “হৃদয়ভাঙা চোখ”।

ভিন্ন চরিত্রে রূপদান

তিন বছর পর দ্য কালেক্টর (১৯৬৫)-এ অন্ধকার মানসিক রোগীর চরিত্রে অভিনয় করে কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান তিনি। এরপর ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড (১৯৬৭)-এ নিষ্ঠুর সার্জেন্ট ট্রয়ের চরিত্রে অভিনয় করে আবারও আলোচনায় আসেন। সমালোচকরা তাঁর অভিনয়কে একইসঙ্গে ভীতিকর ও বাস্তবসম্মত বলে আখ্যা দেন।

হলিউডে প্রত্যাবর্তন

প্রায় এক দশক চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকার পর স্ট্যাম্প ফিরে আসেন চরিত্রাভিনেতা হিসেবে। সুপারম্যান (১৯৭৮) এবং সুপারম্যান II (১৯৮০)-এ জেনারেল জড চরিত্রে অভিনয় করে নতুন প্রজন্মের দর্শকের কাছে খলনায়ক হিসেবে জায়গা করে নেন। পর্দায় তাঁর উপস্থিতি ছিল একইসঙ্গে ভয়ঙ্কর ও আকর্ষণীয়।

নতুন রূপে ‘প্রিসিলা’

তাঁর অভিনয় জীবনের আরেকটি স্মরণীয় অধ্যায় দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অব প্রিসিলা, কুইন অব দ্য ডেজার্ট (১৯৯৪)। সেখানে তিনি এক মধ্যবয়সী ট্রান্সজেন্ডার নারীর ভূমিকায় অভিনয় করেন। এই চরিত্র সম্পর্কে তিনি ২০১৯ সালে বলেন, “আমার ভেতরে নারীত্বের দিকটা সবসময় প্রবল ছিল, আর এই চরিত্র সেটি প্রকাশের সুযোগ দিয়েছিল।”

দীর্ঘ ক্যারিয়ার

স্ট্যাম্পের ক্যারিয়ার পাঁচ দশকেরও বেশি সময়জুড়ে বিস্তৃত ছিল। তিনি অভিনয় করেছেন ৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে। এর মধ্যে দ্য লাইমি (১৯৯৯)-এ তাঁর অভিনয় বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়। এছাড়া তিনি লিগ্যাল ঈগলস (১৯৮৬), ওয়াল স্ট্রিট (১৯৮৭), ইয়াং গানস (১৯৮৮), অ্যালিয়েন নেশন (১৯৮৮), স্টার ওয়ার্স: দ্য ফ্যান্টম মেনেস (১৯৯৯) এবং আনফিনিশড সং (২০১২)-তেও উল্লেখযোগ্য অভিনয় করেন।

ব্যক্তিগত জীবন ও উত্তরাধিকার

১৯৬০-এর দশকে তিনি সুপারমডেল জিন শ্রিম্পটন ও অভিনেত্রী জুলি ক্রিস্টির সঙ্গে আলোচিত সম্পর্কে জড়ান। ২০০২ সালে ৬৪ বছর বয়সে তিনি ২৯ বছরের অস্ট্রেলীয় ফার্মাসিস্ট এলিজাবেথ ও’রউর্ককে বিয়ে করেন। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয় ২০০৮ সালে।

টেরেন্স স্ট্যাম্প ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী অভিনেতা, যিনি খলনায়ক থেকে শুরু করে মানবিক ও জটিল চরিত্রে সমান দক্ষতায় অভিনয় করেছেন। তাঁর চোখের চাহনি আর স্বতন্ত্র উপস্থিতি তাঁকে করে তুলেছে চিরস্মরণীয়।