১০:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
২০২৬ সাল থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্মার্টফোন ও স্মার্টওয়াচ ব্যবহার নিষিদ্ধ তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: সালাহউদ্দিন চীনের হাতে বৈশ্বিক ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের নিয়ন্ত্রণ সিঙ্গাপুরের সাহিত্যকে এগিয়ে নিতে নিজের সম্পদ ঝুঁকিতে ফেলছেন এডমন্ড উই মৃত্যুহীন প্রসবের লক্ষ্য: ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে মাতৃস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাফল্য প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩৩২) আমেরিকায় খাদ্যপরামর্শে ফেরত আসছে পুরোনো ‘ফুড পিরামিড’ বিতর্ক সিঙ্গাপুর বায়েনাল ২০২৫: শহরটাই হয়ে ওঠে খোলা একটি আর্ট গ্যালারি হিজাব পরা রেসলিং তারকা নূর ‘ফিনিক্স’ ডায়ানার আগুন থেকে উঠে দাঁড়ানোর গল্প পাকিস্তান আইডলে টপ–১৬–এ রোমাইসা তারিক: “এই শো আমার জীবন পুরো বদলে দিয়েছে”

মিনিয়াপোলিসে স্কুলে গুলিবর্ষণ: ক্যাথলিক বিদ্বেষমূলক সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে এফবিআই তদন্ত শুরু

মিনিয়াপোলিসের একটি স্কুল ও চার্চে ভয়াবহ গুলিবর্ষণে দুই শিশু নিহত হয়েছে এবং অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছে। এফবিআই জানিয়েছে, ঘটনাটি ক্যাথলিক সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে ঘৃণামূলক অপরাধ ও দেশীয় সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে।

হামলার বিবরণ
বুধবার সকালে শহরের অ্যানানসিয়েশন চার্চে শিশুদের প্রার্থনার সময় হঠাৎ জানালার বাইরে থেকে এক বন্দুকধারী গুলি চালাতে শুরু করে। নিহত শিশুদের বয়স মাত্র ৮ ও ১০ বছর। পুলিশ জানায়, ২৩ বছর বয়সী রবিন ওয়েস্টম্যান নামের হামলাকারী নিজেই গুলি করে আত্মহত্যা করে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

ঘটনাস্থল থেকে একটি রাইফেল, একটি শটগান, একটি পিস্তল এবং একটি ধোঁয়া বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি হামলাকারী চার্চের ভেতরে প্রবেশ করেছিল কি না। চার্চের ভেতরে গুলির খোসা পাওয়া যায়নি।

প্রতিক্রিয়া ও শোকবার্তা
এফবিআই পরিচালক ক্রিস্টোফার রে একে দেশীয় সন্ত্রাসবাদের একটি উদাহরণ উল্লেখ করে বলেন, “এটি ক্যাথলিকদের প্রতি বিদ্বেষ থেকে পরিচালিত এক ভয়াবহ হামলা।” মিনিয়াপোলিস পুলিশপ্রধান ব্রায়ান ও’হারা ঘটনাটিকে আখ্যা দিয়েছেন “নিরপরাধ শিশু ও উপাসকদের ওপর ভয়াবহ সহিংসতা” হিসেবে।

পোপ ফ্রান্সিস গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, “এ ধরনের হত্যাযজ্ঞ বেদনা ও আতঙ্কের এক মর্মন্তুদ দৃষ্টান্ত।”

প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতা
স্থানীয় বাসিন্দা পিজে ম্যাডেন, যিনি চার্চের কাছেই থাকেন, জানান—“আমি সকালে কাজ করছিলাম। হঠাৎ ‘বুম, বুম, বুম’ শব্দ শুনে বুঝতে পারি গুলিবর্ষণ হচ্ছে। দৌড়ে চার্চে গিয়ে দেখি মাটিতে পড়ে আছে ম্যাগাজিন কার্টিজ।”

একজন ১০ বছরের বালক স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানায়, তার বন্ধু ভিক্টর তাকে রক্ষা করতে শরীরের ওপর শুয়ে পড়ে। তবে ভিক্টর নিজেই গুলিবিদ্ধ হয়েছিল এবং হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। শিশুটি কাঁপা গলায় বলে, “আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম, তবে এখন মনে হচ্ছে সে ভালো আছে।”

হামলাকারীর পটভূমি
অ্যানানসিয়েশন চার্চে ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে। হামলাকারীর মা মেরি গ্রেস ওয়েস্টম্যান একসময় এই স্কুলে শিক্ষকতা করতেন এবং ২০২১ সালে অবসর নেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওয়েস্টম্যান একটি অনলাইন পোস্ট প্রস্তুত করেছিল, যা গুলিবর্ষণের সময় প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল, তবে পরে তা মুছে ফেলা হয়।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর টিম ওয়ালজ জানিয়েছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার টিম গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। ওয়ালজ বলেন, “এ ধরনের ঘটনা শুধু মিনেসোটায় নয়, পুরো আমেরিকা জুড়েই বারবার ঘটছে। আমাদের প্রত্যাশা—কোনো স্কুল বা সম্প্রদায় যেন আর এমন দিন না দেখে।”

ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, নিহতদের স্মরণে হোয়াইট হাউসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।


এই ভয়াবহ হামলা আবারও যুক্তরাষ্ট্রে স্কুল ও উপাসনালয়ে গুলিবর্ষণ-সংক্রান্ত নিরাপত্তা প্রশ্নকে সামনে নিয়ে এসেছে। তদন্তকারীরা হামলার পূর্ণ উদ্দেশ্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তবে প্রাথমিকভাবে স্পষ্ট যে ঘটনাটি ধর্মীয় বিদ্বেষ ও পরিকল্পিত সহিংসতারই অংশ।

জনপ্রিয় সংবাদ

২০২৬ সাল থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্মার্টফোন ও স্মার্টওয়াচ ব্যবহার নিষিদ্ধ

মিনিয়াপোলিসে স্কুলে গুলিবর্ষণ: ক্যাথলিক বিদ্বেষমূলক সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে এফবিআই তদন্ত শুরু

১১:২২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

মিনিয়াপোলিসের একটি স্কুল ও চার্চে ভয়াবহ গুলিবর্ষণে দুই শিশু নিহত হয়েছে এবং অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছে। এফবিআই জানিয়েছে, ঘটনাটি ক্যাথলিক সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে ঘৃণামূলক অপরাধ ও দেশীয় সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে।

হামলার বিবরণ
বুধবার সকালে শহরের অ্যানানসিয়েশন চার্চে শিশুদের প্রার্থনার সময় হঠাৎ জানালার বাইরে থেকে এক বন্দুকধারী গুলি চালাতে শুরু করে। নিহত শিশুদের বয়স মাত্র ৮ ও ১০ বছর। পুলিশ জানায়, ২৩ বছর বয়সী রবিন ওয়েস্টম্যান নামের হামলাকারী নিজেই গুলি করে আত্মহত্যা করে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

ঘটনাস্থল থেকে একটি রাইফেল, একটি শটগান, একটি পিস্তল এবং একটি ধোঁয়া বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি হামলাকারী চার্চের ভেতরে প্রবেশ করেছিল কি না। চার্চের ভেতরে গুলির খোসা পাওয়া যায়নি।

প্রতিক্রিয়া ও শোকবার্তা
এফবিআই পরিচালক ক্রিস্টোফার রে একে দেশীয় সন্ত্রাসবাদের একটি উদাহরণ উল্লেখ করে বলেন, “এটি ক্যাথলিকদের প্রতি বিদ্বেষ থেকে পরিচালিত এক ভয়াবহ হামলা।” মিনিয়াপোলিস পুলিশপ্রধান ব্রায়ান ও’হারা ঘটনাটিকে আখ্যা দিয়েছেন “নিরপরাধ শিশু ও উপাসকদের ওপর ভয়াবহ সহিংসতা” হিসেবে।

পোপ ফ্রান্সিস গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, “এ ধরনের হত্যাযজ্ঞ বেদনা ও আতঙ্কের এক মর্মন্তুদ দৃষ্টান্ত।”

প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতা
স্থানীয় বাসিন্দা পিজে ম্যাডেন, যিনি চার্চের কাছেই থাকেন, জানান—“আমি সকালে কাজ করছিলাম। হঠাৎ ‘বুম, বুম, বুম’ শব্দ শুনে বুঝতে পারি গুলিবর্ষণ হচ্ছে। দৌড়ে চার্চে গিয়ে দেখি মাটিতে পড়ে আছে ম্যাগাজিন কার্টিজ।”

একজন ১০ বছরের বালক স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানায়, তার বন্ধু ভিক্টর তাকে রক্ষা করতে শরীরের ওপর শুয়ে পড়ে। তবে ভিক্টর নিজেই গুলিবিদ্ধ হয়েছিল এবং হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। শিশুটি কাঁপা গলায় বলে, “আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম, তবে এখন মনে হচ্ছে সে ভালো আছে।”

হামলাকারীর পটভূমি
অ্যানানসিয়েশন চার্চে ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে। হামলাকারীর মা মেরি গ্রেস ওয়েস্টম্যান একসময় এই স্কুলে শিক্ষকতা করতেন এবং ২০২১ সালে অবসর নেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওয়েস্টম্যান একটি অনলাইন পোস্ট প্রস্তুত করেছিল, যা গুলিবর্ষণের সময় প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল, তবে পরে তা মুছে ফেলা হয়।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর টিম ওয়ালজ জানিয়েছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার টিম গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। ওয়ালজ বলেন, “এ ধরনের ঘটনা শুধু মিনেসোটায় নয়, পুরো আমেরিকা জুড়েই বারবার ঘটছে। আমাদের প্রত্যাশা—কোনো স্কুল বা সম্প্রদায় যেন আর এমন দিন না দেখে।”

ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, নিহতদের স্মরণে হোয়াইট হাউসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।


এই ভয়াবহ হামলা আবারও যুক্তরাষ্ট্রে স্কুল ও উপাসনালয়ে গুলিবর্ষণ-সংক্রান্ত নিরাপত্তা প্রশ্নকে সামনে নিয়ে এসেছে। তদন্তকারীরা হামলার পূর্ণ উদ্দেশ্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তবে প্রাথমিকভাবে স্পষ্ট যে ঘটনাটি ধর্মীয় বিদ্বেষ ও পরিকল্পিত সহিংসতারই অংশ।