পাহাড়ি জেলায় দুর্যোগ
উত্তরাখণ্ডের চামোলি, রুদ্রপ্রয়াগ, টেহরি গারওয়াল এবং বাগেশ্বর জেলায় টানা প্রবল বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোররাত পর্যন্ত এই ঘটনা ঘটে। জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, কয়েকটি ঘরবাড়ি ভেসে যায় এবং কৃষিজমি কাদামাটিতে ঢেকে যায়।
উদ্ধার অভিযান
এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের দল দ্রুত উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করে। অনেক জায়গায় ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট
এবারের বর্ষায় উত্তরাখণ্ড একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত। ৫ আগস্ট উত্তরকাশীর ভাগীরথী নদীতে আকস্মিক বন্যায় ধ্বংস হয় ধরালি গ্রামের অর্ধেক এবং পাশের হর্ষিল এলাকা।
জেলা ভিত্তিক ক্ষয়ক্ষতি
চামোলি জেলার দেওয়াল তেহসিলের মোপাটা গ্রামে রাত ২টার দিকে ভূমিধসে একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে। এতে দুইজন নিহত এবং দুইজন আহত হন।
রুদ্রপ্রয়াগ জেলার বসুকেদার ও জখোলি তেহসিলে বৃষ্টিজনিত ঘটনায় একজন নিহত ও আটজন নিখোঁজ হয়েছেন।
বাগেশ্বর জেলার সিমোটি গ্রামে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে দুইজন নিহত এবং তিনজন নিখোঁজ হন। এসডিআরএফ কমান্ড্যান্ট অর্পণ যাদুবংশ জানান, উদ্ধারকাজে দুটি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে এবং নিখোঁজদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
আবহাওয়া অফিসের সতর্কবার্তা
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেরাদুন কেন্দ্র আগামী চার দিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করেছে।
মানালি অঞ্চলের পরিস্থিতি
গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে মানালি এলাকায় ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। বিয়াস নদীর তীর ভেঙে গেছে, মানালি-কুল্লু জাতীয় সড়কের অনেক অংশ ধসে পড়েছে। ভূতনাথ মন্দির-ভলভো বাসস্ট্যান্ড, আলু গ্রাউন্ড, বিন্দু ঢাংক, ১৮ মাইল ব্রিজ, ১৭ মাইল, পাতলিকুহাল থানার কাছে, দোহলু নালা, রাইসন এবং বৈষ্ণোদেবী মন্দির সংলগ্ন এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বহু পর্যটক যানবাহন কয়েকদিন ধরে মানালিতে আটকা রয়েছে, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উদ্ধারকাজ কঠিন হয়ে পড়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরে মর্মান্তিক ঘটনা
জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা ২৬ আগস্ট তীর্থযাত্রাপথে ভূমিধসে ৩৪ জন নিহতের ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটি জলশক্তি দপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান সচিবের নেতৃত্বে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। বৈষ্ণোদেবী মন্দির বোর্ড জানিয়েছে, আকস্মিক মেঘভাঙা বৃষ্টিই ভূমিধসের মূল কারণ এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আগে থেকেই যাত্রা স্থগিত করা হয়েছিল।
অন্যান্য রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি
ভারী বৃষ্টিতে পাঞ্জাব, কর্ণাটক, ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশও বিপর্যস্ত। অন্ধ্রপ্রদেশে গোদাবরী নদীতে পানি প্রবাহ দ্রুত বাড়ছে। নদীর পাড়ের মানুষদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
ওড়িশার বালেশ্বর, ভদ্রক ও জাজপুর জেলার প্রায় ১০০টি গ্রাম শুক্রবার টানা পঞ্চম দিনের মতো প্লাবিত ছিল। প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ভারতের উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ বৃষ্টিতে নিহত ৫, নিখোঁজ ১১, অনান্য রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি দ্রুত বাড়ছে
-
সারাক্ষণ রিপোর্ট - ১১:৩২:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৫
- 41
জনপ্রিয় সংবাদ




















